• ২৩শে সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ , ৮ই আশ্বিন, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

‘একজন ইসরায়েলির বদলে ৫০ জন ফিলিস্তিনিকে মরতে হবে’

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত আগস্ট ১৮, ২০২৫, ১৩:০০ অপরাহ্ণ
‘একজন ইসরায়েলির বদলে ৫০ জন ফিলিস্তিনিকে মরতে হবে’
সংবাদটি শেয়ার করুন....

ইসরায়েলের সাবেক সামরিক গোয়েন্দা প্রধান আহারন হালিভা দাবি করেছেন, গাজায় বাড়তে থাকা মৃত্যুর সংখ্যা ‘ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য অপরিহার্য বার্তা’ হয়ে থাকবে এবং ফিলিস্তিনিদের মাঝে মাঝে নাকবার (বিপর্যয়) মুখোমুখি হওয়া উচিত।

শুক্রবার (১৫ আগস্ট) ইসরায়েলের চ্যানেল ১২–এর ‘উলপান শিশি’ অনুষ্ঠানে প্রচারিত এক অডিও রেকর্ডিংয়ে হালিভা বলেন, ‘গাজায় ইতিমধ্যেই ৫০ হাজার মানুষ মারা গেছে — এটি ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য প্রয়োজনীয় ও অপরিহার্য।’

তিনি আরও যোগ করেন, ‘৭ অক্টোবরের প্রত্যেক নিহতের জন্য ৫০ জন ফিলিস্তিনির মরতে হবে। কোনো উপায় নেই, তাদের মাঝে মাঝে নাকবার মুখোমুখি হতে হবে, যাতে তারা পরিণতি বোঝে। আমি প্রতিশোধের জন্য এটা বলছি না, বরং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি বার্তা হিসেবে বলছি।’

গাজাকে তিনি ‘একটি সমস্যাগ্রস্ত পাড়া’ হিসেবে আখ্যায়িত করেন।

চ্যানেল ১২ রেকর্ডিংটির তারিখ জানায়নি। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, মার্চ মাসে ইসরায়েলি হামলায় মৃতের সংখ্যা ৫০ হাজার ছাড়িয়ে যায় এবং বর্তমানে তা ৬১ হাজার ৮৯০–এরও বেশি।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর দক্ষিণ ইসরায়েলে হামাস–নেতৃত্বাধীন আক্রমণের প্রসঙ্গ টেনে হালিভা বলেন, ‘প্রত্যেক নিহত ইসরায়েলির জন্য ৫০ জন ফিলিস্তিনির প্রাণহানি ঘটতে হবে।’

হালিভা দাবি করেন, ইসরায়েল ইচ্ছাকৃতভাবে পশ্চিম তীরে রাজনৈতিক অস্থিরতা সৃষ্টি করতে চায়, যাতে হামাস ক্ষমতায় এলে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় তাদের সঙ্গে সম্পর্ক না রাখে এবং দুই রাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানের পথ বন্ধ হয়ে যায়।

তিনি জানান, ২০১৪ সালের গাজা যুদ্ধের পর হামাসকে নির্মূলের একটি পরিকল্পনা নেওয়া হলেও ইসরায়েলের নীতিনির্ধারকদের সেটি বাস্তবায়নের কোনো ইচ্ছা ছিল না।

তিনি বলেন, ‘এখানে আরও গভীর বিষয় আছে। ইসরায়েল–ফিলিস্তিন সংঘাতই মূল সমস্যা। কারণ হামাস ইসরায়েলের জন্য উপকারী — এটাই [অর্থমন্ত্রী বেজালেল] স্মোত্রিচের যুক্তি। তিনি চান, ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ ভেঙে পড়ুক এবং হামাস পশ্চিম তীরে ক্ষমতা দখল করুক, যেমনটা গাজায় হয়েছে। কেন? কারণ পুরো ফিলিস্তিনি অঞ্চল অস্থিতিশীল হলে কোনো আলোচনার সুযোগ থাকে না। তখন কোনো সমঝোতাও হবে না।’

হালিভা আরও বলেন, ‘ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আছে। কিন্তু হামাসের কোনো বৈধতা নেই, তাই তাদের বিরুদ্ধে অবাধে যুদ্ধ চালানো যায়, তলোয়ার দিয়েও দমন করা সম্ভব।’

২০২৫ সালের জানুয়ারিতে হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে স্বল্পমেয়াদি তিন দফা যুদ্ধবিরতি হলেও মার্চে তা ভেঙে যায়। কয়েকজন বন্দিকে ফেরত নেওয়ার পর ইসরায়েল নতুন করে গাজায় হামলা শুরু করে এবং স্থায়ী যুদ্ধবিরতির আলোচনায় না গিয়ে চুক্তি বাতিল করে।

৭ অক্টোবরের হামলার পর থেকে ইসরায়েল অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ধারাবাহিক বোমাবর্ষণ চালিয়ে যাচ্ছে। এর ফলে প্রায় ২৩ লাখ মানুষ বারবার বাস্তুচ্যুত হয়েছে এবং এখন পর্যন্ত ৬১ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে, যাদের বেশির ভাগই নারী ও শিশু। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন এই অভিযানে ইসরায়েলকে পূর্ণ সমর্থন দিচ্ছে।