• ১০ই নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ , ২৫শে কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

কেন বাংলাদেশ-নেপাল-শ্রীলঙ্কায় সরকার পতন, যা বললেন অজিত দোভাল

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত নভেম্বর ১, ২০২৫, ১২:০৪ অপরাহ্ণ
কেন বাংলাদেশ-নেপাল-শ্রীলঙ্কায় সরকার পতন, যা বললেন অজিত দোভাল

ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল (ফাইল ছবি)

সংবাদটি শেয়ার করুন....

জেন-জি বিক্ষোভের মুখে সম্প্রতি নেপালে সরকারের পতন ঘটে। প্রায় একইভাবে সরকার পতনের মুখে পড়ে বাংলাদেশও। এর আগে শ্রীলঙ্কাতেও একই দৃশ্য দেখা যায়।

দক্ষিণ এশিয়ার এই তিন দেশের সরকার পতনের মূল কারণ হিসেবে দুর্বল শাসন ব্যবস্থা বা প্রশাসনিক কাঠামোকে দায়ী করেছেন ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা (এনএসএ) অজিত দোভাল।

তিনি বলেন, দুর্বল শাসন ব্যবস্থা প্রায়ই একটি দেশের সরকার পতনের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। বাংলাদেশ, নেপাল ও শ্রীলঙ্কাসহ দক্ষিণ এশিয়ার বেশ কয়েকটি দেশে অনানুষ্ঠানিক উপায়ে সরকার পরিবর্তনের পেছনেও এমন দুর্বল প্রশাসনিক কাঠামোর প্রভাব রয়েছে।

অজিত দোভাল আরও বলেন, রাষ্ট্র গঠনের প্রকৃত শক্তি নিহিত থাকে কার্যকর শাসনব্যবস্থায়, যা জনগণের আস্থা ও অংশগ্রহণ নিশ্চিত করে।

সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে জানা যায়, শুক্রবার রাষ্ট্রীয় ঐক্য দিবস উপলক্ষে দেওয়া বক্তব্যে অজিত দোভাল বলেন, রাষ্ট্র গঠন ও নিরাপত্তা রক্ষায় কার্যকর শাসনব্যবস্থা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি শুধু রাষ্ট্রকে তার লক্ষ্য অর্জনে সহায়তা করে না, বরং সাধারণ মানুষের আকাঙ্ক্ষাও পূরণ করে।

তিনি বলেন, “আজকের প্রশাসনের বড় চ্যালেঞ্জ হলো সাধারণ মানুষকে সন্তুষ্ট রাখা। কারণ, এখন মানুষ আগের চেয়ে অনেক বেশি সচেতন, উচ্চাকাঙ্ক্ষী এবং রাষ্ট্রের কাছ থেকে আরও বেশি প্রত্যাশা রাখে। তাই রাষ্ট্রকেও জনগণের সন্তুষ্টির বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করতে হয়।”

অজিত দোভাল আরও বলেন, “একটি জাতির শক্তি নিহিত থাকে তার শাসন ব্যবস্থায়। সরকার যখন প্রতিষ্ঠানগুলোর মাধ্যমে কাজ করে, তখন জাতি গঠনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন সেই ব্যক্তিরা, যারা এসব প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন ও লালন করেন।”

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির শাসন মডেলের প্রশংসা করে তিনি বলেন, “ভারত এখন এক নতুন কক্ষপথে প্রবেশ করছে—এক নতুন ধরনের শাসনব্যবস্থা, সমাজ কাঠামো ও বৈশ্বিক অবস্থানে। বর্তমান সরকার প্রশাসনিক দুর্নীতি দমনে যে প্রাতিষ্ঠানিক পরিবর্তন এনেছে, তা গভীর প্রভাব ফেলছে। ভবিষ্যতে আরও পদক্ষেপ নেওয়া হতে পারে।”

তিনি বলেন, “যখন পরিবর্তন আসে, তখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো লক্ষ্য পরিষ্কার রাখা—ঝড়-ঝাপটার মধ্যেও যেন চোখ না বন্ধ হয়, ভয় বা বিভ্রান্তিতে যেন দিক হারানো না হয়।”

ভালো শাসনের অন্যতম উপাদান হিসেবে দোভাল নারীর সুরক্ষা, সমতা ও ক্ষমতায়নের ওপর জোর দেন। তিনি বলেন, “নারীর ক্ষমতায়ন আধুনিক শাসনব্যবস্থার অপরিহার্য অংশ। শুধু ভালো আইন বা কাঠামো থাকলেই হবে না, এগুলোর কার্যকর বাস্তবায়নই সবচেয়ে জরুরি।”

প্রযুক্তির ব্যবহার নিয়েও গুরুত্ব দেন তিনি। অজিত দোভাল বলেন, “আমাদের এমন প্রযুক্তি কাজে লাগাতে হবে, যা শাসনে স্বচ্ছতা, জবাবদিহি ও জনসেবার দক্ষতা বাড়ায়। একইসঙ্গে প্রযুক্তিনির্ভর হুমকি যেমন সাইবার হামলা থেকেও সমাজকে সুরক্ষা দিতে হবে।”

সূত্র: এনডিটিভি