• ২৩শে সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ , ৮ই আশ্বিন, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

পাচারের অর্থে বিদেশে ৪০ হাজার কোটি টাকার সম্পত্তির সন্ধান

ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশিত আগস্ট ১৮, ২০২৫, ১০:৪৪ পূর্বাহ্ণ
পাচারের অর্থে বিদেশে ৪০ হাজার কোটি টাকার সম্পত্তির সন্ধান
সংবাদটি শেয়ার করুন....

বাংলাদেশ থেকে পাচার করা অর্থে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকার সম্পদের সন্ধান পেয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সেল (সিআইসি)। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত পাঁচটি দেশের সাতটি শহরে অনুসন্ধান চালিয়ে এসব তথ্য পাওয়া গেছে বলে প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসকে জানিয়েছেন সিআইসির মহাপরিচালক আহসান হাবিব।

রোববার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান ও সিআইসির মহাপরিচালক প্রধান উপদেষ্টার সামনে এই তথ্য উপস্থাপন করেন।

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইংয়ের পাঠানো এক বার্তায় বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।

এ সময় জানানো হয়, নয়টি দেশে মোট ৩৫২টি পাসপোর্টের সন্ধান মিলেছে যেগুলো কিছু বাংলাদেশি অর্থের বিনিময়ে সংগ্রহ করেছেন। দেশগুলো হলো— অ্যান্টিগুয়া অ্যান্ড বারবুডা, অস্ট্রিয়া, ডমিনিকা, গ্রেনেডা, সেন্ট কিটস অ্যান্ড নেভিস, নর্থ মেসিডোনিয়া, মালটা, সেন্ট লুসিয়া ও তুরস্ক।

আহসান হাবিব জানান, দেশে বসেই বিভিন্ন উৎস থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে প্রাথমিক প্রস্তুতি শেষে সিআইসির গোয়েন্দারা বিদেশে গিয়ে সরেজমিনে তদন্ত করে বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করেছেন।

তিনি আরও বলেন, এখন পর্যন্ত ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নামে অর্থপাচার করে গড়ে তোলা ৩৪৬টি সম্পত্তির সন্ধান মিলেছে। এটি অনুসন্ধানের একটি আংশিক চিত্র। এসব সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে দেশের অনুকূলে আনা এবং দায়ীদের শাস্তি নিশ্চিত করতে কাজ চলছে।

তিনি জানান, ছয়টিরও বেশি আন্তর্জাতিক সংস্থা এ প্রক্রিয়ায় বাংলাদেশকে সহযোগিতা করছে। এ পর্যন্ত যা পাওয়া গেছে, সেটি কেবল টিপ অব দ্য আইসবার্গ বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

এছাড়া শেখ হাসিনার আমলে কিছু ব্যক্তি বাংলাদেশ ব্যাংকের ডাটাবেজ নিয়ন্ত্রণ প্রক্রিয়ায় নিজেদের লোক বসিয়ে বহু তথ্য গায়েব করেছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি। তবে আশার বিষয় হচ্ছে, মুছে ফেলা তথ্য উদ্ধারে সিআইসি দক্ষতা অর্জন করেছে।

বিস্তারিত শোনার পর প্রধান উপদেষ্টা বলেন, অর্থপাচারের সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনতে দুদক, সিআইসি, পুলিশের সিআইডিসহ সংশ্লিষ্ট সব সংস্থাকে সমন্বিতভাবে ব্যবস্থা নিতে হবে।

তিনি আরও বলেন, এমন দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে হবে যাতে ভবিষ্যতে কেউ দেশের সম্পদ পাচার করে বিদেশে সম্পত্তি তৈরি করতে সাহস না পায়।

প্রধান উপদেষ্টা সিআইসিকে অনুসন্ধান চালিয়ে যেতে নির্দেশনা দিয়ে বলেন, সম্ভাব্য আরও দেশে অনুসন্ধান বিস্তৃত করতে হবে। দেশের সম্পদ ফিরিয়ে আনতে সরকার সর্বাত্মক সহযোগিতা করবে।

দেশের অর্থনৈতিক খাতের এই লুটপাটকে ভয়াবহ দেশদ্রোহিতা হিসেবে উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য সুন্দর দেশ গড়তে হলে অবশ্যই এই লুটেরাদের বিচারের আওতায় আনতে হবে এবং জাতির সামনে সত্য প্রকাশ করতে হবে। এজন্য সব সংস্থাকে একযোগে কাজ করার নির্দেশ দেন তিনি।