• ১০ই নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ , ২৫শে কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

‎রাবিতে বর্ণাঢ্য আয়োজনে বিশ্ব শিক্ষক দিবস উদযাপন

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত নভেম্বর ২, ২০২৫, ১৭:২৭ অপরাহ্ণ
‎রাবিতে বর্ণাঢ্য আয়োজনে বিশ্ব শিক্ষক দিবস উদযাপন
সংবাদটি শেয়ার করুন....

‎রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) বর্ণাঢ্য আয়োজনে উদযাপিত হয়েছে বিশ্ব শিক্ষক দিবস-২০২৫। ‎রোববার (২ নভেম্বর) সকাল ১০টায় সিনেট ভবনের সামনের চত্বর থেকে শুরু করে ক্যাম্পাসে গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রার মধ্য দিয়ে দিবসটির কর্মসূচি শুরু হয়। এরপর সকাল ১১টায় সিনেট ভবনে শিক্ষক সম্মাননা প্রদান ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

‎অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় উপাচার্য প্রফেসর সালেহ্ হাসান নকীব। বিশেষ অতিথি ছিলেন উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) প্রফেসর মো. ফরিদ উদ্দিন খান। অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) ও বিশ্ব শিক্ষক দিবস ২০২৫ উদ্যাপন কমিটির সভাপতি প্রফেসর মোহাম্মদ মাঈন উদ্দীন।

‎অনুষ্ঠান পরিচালনা ও সমন্বয় করেন জনসংযোগ দপ্তরের প্রশাসক এবং উদ্যাপন কমিটির সদস্য-সচিব প্রফেসর মো. আখতার হোসেন মজুমদার। তিনি বলেন, “দুর্গাপূজার ছুটি ও কিছু অস্থিতিশীল পরিস্থিতির কারণে নির্ধারিত সময়ে আমরা দিবসটি পালন করতে পারিনি। তবে আজ তিন পর্বে—শোভাযাত্রা, শিক্ষক সম্মাননা প্রদান ও রচনা প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণের মধ্য দিয়ে আমরা এ আয়োজন সম্পন্ন করছি।”

‎দিবস উপলক্ষে তিনজন শিক্ষককে ‘শিক্ষক সম্মাননা’ প্রদান করা হয়। তারা হলেন—ড. মু. আযহার উদ্‌-দীন, ড. এম নজরুল ইসলাম এবং ড. মামনুনুল কেরামত। উপাচার্য প্রফেসর সালেহ্ হাসান নকীব তাদের হাতে সম্মাননা স্মারক, উত্তরীয় ও ফুলেল তোড়া তুলে দেন।

‎সম্মাননা প্রাপ্ত প্রফেসর ড. এম নজরুল ইসলাম বলেন, “আমি যখন ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ি, তখন শিক্ষকেরা আমাকে জিজ্ঞেস করতেন—‘কি হতে চাও?’ আমি বলতাম, ‘বিএ পাস করতে চাই।’ আজ সেই আমি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক। তবে শিক্ষকের প্রকৃত গর্ব এখানেই নয়—শিক্ষকের গর্ব হলো তার শিক্ষার্থীর সাফল্যে।”

‎বিশেষ অতিথির বক্তব্যে উপ-উপাচার্য প্রফেসর ফরিদ উদ্দিন খান বলেন, “পৃথিবীতে এমন কোনো সফল মানুষ নেই যার পেছনে একজন শিক্ষক নেই। শিক্ষকরাই শিক্ষার্থীর সুপ্ত প্রতিভাকে জাগিয়ে তোলেন এবং একজন আদর্শ মানুষ গড়ে তোলেন। আজ যে তিনজন শিক্ষককে সম্মাননা দেওয়া হলো, তারা সত্যিই এই মর্যাদার উপযুক্ত।”

‎প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপাচার্য প্রফেসর সালেহ্ হাসান নকীব বলেন, “একজন শিক্ষক—শিক্ষকই, এর চেয়ে বড় পরিচয় আর হতে পারে না। অত্যন্ত সৌভাগ্যবান মানুষরাই এই মহৎ পেশায় আসতে পারেন।”

‎তিনি হাস্যরসের সুরে বলেন, “আমি জীবনে কোনোদিন ‘Aim in Life’ রচনা লিখিনি। তবে একসময় বাস ড্রাইভার হওয়ার প্রবল ইচ্ছে ছিল।”

‎বর্তমান শিক্ষার্থী-শিক্ষক সংকট প্রসঙ্গে উপাচার্য বলেন, “এই সংকট আসলে শিক্ষার সংকট। আমাদের এ অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।” তিনি তার সাবেক শিক্ষক ড. এম নজরুল ইসলামের প্রশংসা করে বলেন, “স্যার আমাদের ক্লাসে গ্রাফের মাধ্যমে পড়াতেন—যা অনেক বেশি কার্যকর ছিল। কারণ, একটি ছবি হাজার শব্দের চেয়েও শক্তিশালী।”

‎আলোচনা শেষে রচনা প্রতিযোগিতার বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়। পুরো অনুষ্ঠানজুড়ে শিক্ষকদের প্রতি সম্মান ও শ্রদ্ধার আবহ বিরাজ করছিল।