
পক্ষাঘাতগ্রস্ত ও দীর্ঘমেয়াদি স্নায়ুজনিত রোগে আক্রান্ত রোগীদের পুনর্বাসনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ এক নতুন যুগে প্রবেশ করতে যাচ্ছে। আগামীকাল বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) থেকে রাজধানীর শাহবাগে অবস্থিত বাংলাদেশ মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএমইউ) সুপারস্পেশালাইজড হাসপাতালে স্থাপিত দেশের প্রথম রোবটিক রিহ্যাবিলিটেশন সেন্টারে সীমিত আকারে একটি পাইলট প্রকল্প চালু হবে।
চীনের কারিগরি সহায়তায় গড়ে ওঠা এই সেন্টারটি উন্নত বিশ্বের মান অনুসরণ করে নির্মিত হয়েছে, যেখানে অত্যাধুনিক প্রযুক্তিভিত্তিক এবং নির্ভুল পুনর্বাসন সেবা পাওয়া যাবে।
বুধবার (৯ জুলাই) দুপুরে প্রধান উপদেষ্টার অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে এই তথ্য জানানো হয়।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, চীন সরকার এই প্রকল্পে প্রায় ২০ কোটি টাকা মূল্যের রোবটিক যন্ত্রপাতি অনুদান দিয়েছে। প্রযুক্তিগত দিক দিয়ে এই সেন্টারটি দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম উন্নত রোবটিক রিহ্যাবিলিটেশন সেন্টার হয়ে উঠবে এবং বাংলাদেশের চিকিৎসা ক্ষেত্রে এটি একটি বড় মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত হবে।
এই সেন্টারে থাকবে মোট ৬২টি রোবট, যার মধ্যে ২২টি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) ভিত্তিক। এই রোবটগুলোর মাধ্যমে রোগীর অবস্থা অনুযায়ী অত্যন্ত নির্ভুলভাবে ফিজিওথেরাপি, স্নায়ুবিক পুনর্বাসন এবং দীর্ঘমেয়াদি চিকিৎসাসেবা প্রদান সম্ভব হবে।
বিএমইউ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সেন্টার চালুর পূর্বপ্রস্তুতির অংশ হিসেবে চীনের সাত সদস্যের একটি বায়োমেডিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার টিমের তত্ত্বাবধানে ইতোমধ্যে ২৭ জন চিকিৎসক ও ফিজিওথেরাপিস্টকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত জনবল অভিজ্ঞতা ও দক্ষতা অর্জনের পর এবং প্রয়োজনীয় কার্যক্রম সফলভাবে শেষ হলে সেন্টারটি পূর্ণমাত্রায় চালু করা হবে।
এই রোবটিক সেন্টার থেকে উপকৃত হবেন স্ট্রোক, পক্ষাঘাত, স্নায়ুবিক সমস্যা, দীর্ঘমেয়াদি ব্যথা, নার্ভ ইনজুরি, ফ্রোজেন শোল্ডার, দুর্ঘটনার পরবর্তী জটিলতা অথবা শারীরিক অঙ্গের দুর্বলতাজনিত পুনর্বাসন প্রয়োজন এমন রোগীরা।
বিশেষ করে জুলাইয়ের ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে আহত এবং এখনও দীর্ঘমেয়াদি জটিলতায় ভোগা ব্যক্তিদের জন্য এই সেন্টারে বিনামূল্যে রোবটিক চিকিৎসাসেবা দেওয়া হবে।
সেন্টারটি কেবল নির্দিষ্ট উদ্দেশ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে না। পরিকল্পিত নীতিমালার আলোকে ধাপে ধাপে সাধারণ রোগীদের জন্যও সেবা উন্মুক্ত করা হবে। একই সঙ্গে চিকিৎসা খরচ যেন রোগীদের সাধ্যের মধ্যে থাকে, তা নিশ্চিত করার চেষ্টা থাকবে।
এই সেন্টারের চালুর মাধ্যমে বাংলাদেশ আধুনিক প্রযুক্তি-নির্ভর পুনর্বাসন চিকিৎসায় এক নতুন অধ্যায়ে প্রবেশ করবে। এটি শুধুমাত্র প্রযুক্তিগত উৎকর্ষ নয়, পক্ষাঘাতগ্রস্ত ও দীর্ঘমেয়াদি রোগীদের জীবনে একটি আশার আলো হয়ে উঠবে।
সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতি: এম.জি.আর.নাছির মজুমদার, সম্পাদক : এস এম রফিকুল ইসলাম, যোগাযোগ ঠিকানা: সেঞ্চুরি সেন্টার: খ-২২৫, প্রগতি সরণি, মেরুল,বাড্ডা, ঢাকা-১২১২।, ফোন নং : +৮৮-০২-৫৫০৫৫০৪৭ | মোবাইল নং: ০১৭১৬৩৭১২৮৬
www: dailybhor.com
© ২০২৫ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত | দৈনিক ভোর