জুলাইয়ের গণ-অভ্যুত্থানকালে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত স্বৈরাচার শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ড ঘোষণার পর মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এলাকাজুড়ে আগের দিনের মতোই কঠোর নিরাপত্তা দেখা গেছে। আজ সকালে হাইকোর্টের প্রধান ফটক অতিক্রম করতেই চোখে পড়ে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সদস্যদের অবস্থান। সামনে এগোলে ট্রাইব্যুনালের মূল প্রবেশদ্বারের কাছে সেনাসদস্যদের সাঁজোয়া যানসহ মোতায়েন থাকতে দেখা যায়।
ট্রাইব্যুনাল চত্বরের ভেতর ও বাইরে পুলিশ সদস্যরাও দায়িত্ব পালন করছেন। সোমবার (১৭ নভেম্বর) টানা দেড় দশকের বেশি সময় রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় থাকা শেখ হাসিনাকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। তার সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামালকেও একই সাজা দেওয়া হয়েছে। ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানে ১ হাজার ৪০০ মানুষকে হত্যা ও ২৫ হাজারের বেশি মানুষকে আহত করার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধে দোষী সাব্যস্ত করে ট্রাইব্যুনাল-১ এ রায় দেওয়া হয়।
বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনালের অন্য দুই সদস্য হলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারপতি মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী। রায়ে শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খাঁন কামালের সব সম্পত্তি রাষ্ট্রীয় অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করে গণ-অভ্যুত্থানে ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে বিতরণের আদেশ দেওয়া হয়। দেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো কোনো সাবেক সরকারপ্রধান মৃত্যুদণ্ডের মুখোমুখি হলেন, আর শেখ হাসিনাই প্রথম সরকারপ্রধান যিনি মানবতাবিরোধী অপরাধে দণ্ডিত হলেন। একই মামলায় সমান অভিযোগ থাকলেও নিজের দোষ স্বীকার করে রাজসাক্ষী হওয়ায় পাঁচ বছরের সাজা পেয়েছেন হাসিনা সরকারের শেষ পুলিশপ্রধান (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন।
এ রায় ঘোষণার কার্যক্রম ট্রাইব্যুনাল থেকে সরাসরি সম্প্রচার করে বাংলাদেশ টেলিভিশন, রয়টার্সসহ বিভিন্ন দেশি-বিদেশি গণমাধ্যম।
চিফ প্রসিকিউটর কার্যালয়ের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ থেকেও সম্প্রচার করা হয়। রায় ঘিরে সুপ্রিম কোর্ট এলাকায় কড়া নিরাপত্তাবলয় গড়ে তোলা হয়; নিয়মিত পুলিশের পাশাপাশি অতিরিক্ত পুলিশ, সেনাবাহিনী, বিজিবি ও র্যাব মোতায়েন ছিল। রায় ঘোষণার সময় উপস্থিত ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান, চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মুহাম্মদ আবদুল জব্বার ভূঞা, মোহাম্মদ আরশাদুর রউফ, মোহাম্মদ অনীক আর হক, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম, গাজী এম এইচ তামীম, আবদুস সোবহান তরফদার, বি এম সুলতান মাহমুদ, ফারুক আহমদ, তারেক আবদুল্লাহ, আবদুস সাত্তার পালোয়ান। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মো. আলমগীর ও বিশেষ তদন্ত কর্মকর্তা তানভীর জোহাও উপস্থিত ছিলেন। আসামিপক্ষে ছিলেন রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী মো. আমির হোসেন এবং গ্রেপ্তার চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের আইনজীবী জায়েদ বিন আমজাদ।
আন্দোলনে নিহত ও আহতদের পরিবারের সদস্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন শহীদ মীর মুগ্ধর বাবা মীর মোস্তাফিজুর রহমান, ভাই মীর স্নিগ্ধ, শহীদ মাহমুদুর রহমান সৈকতের বোন সাবরিনা আফরোজ সেবন্তী, শহীদ মিরাজের বাবা আবদুর রবসহ আরও অনেকে। ট্রাইব্যুনালে রায় শুনতে উপস্থিত ছিলেন রাকিব হাওলাদার, নিয়ামুলসহ অন্তত ১০ জন আহত জুলাই যোদ্ধা; এছাড়া ছিলেন ডাকসু ভিপি সাদিক কায়েম, জিএস ফরহাদ হোসেন, ছাত্রদল নেতা আবিদুল ইসলাম, এনসিপি নেতা আরিফুর রহমান তুহিন প্রমুখ।
সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতি: এম.জি.আর.নাছির মজুমদার, সম্পাদক : এস এম রফিকুল ইসলাম, যোগাযোগ ঠিকানা: সেঞ্চুরি সেন্টার: খ-২২৫, প্রগতি সরণি, মেরুল,বাড্ডা, ঢাকা-১২১২।, ফোন নং : +৮৮-০২-৫৫০৫৫০৪৭ | মোবাইল নং: ০১৭১৬৩৭১২৮৬
www: dailybhor.com
© ২০২৫ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত | দৈনিক ভোর