• ৩০শে অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ , ১৪ই কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ট্রিলিয়ন ডলারের অর্থনীতি তৈরি ও কর্মসংস্থান বৃদ্ধি নিয়ে তারেক রহমানের বার্তা

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত অক্টোবর ৩০, ২০২৫, ১৬:০৮ অপরাহ্ণ
ট্রিলিয়ন ডলারের অর্থনীতি তৈরি ও কর্মসংস্থান বৃদ্ধি নিয়ে তারেক রহমানের বার্তা
সংবাদটি শেয়ার করুন....

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ঘোষণা দিয়েছেন, বিএনপির লক্ষ্য ২০৩৪ সালের মধ্যে একটি ‘অন্তর্ভুক্তিমূলক ট্রিলিয়ন ডলারের অর্থনীতি’ গঠন করা, যা লাখ লাখ নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি করবে। পাশাপাশি তিনি নারীবান্ধব কর্মপরিবেশ নিশ্চিতের বিষয়েও গুরুত্বারোপ করেছেন। কর্মক্ষেত্র ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কর্মজীবী মা এবং ছাত্রীদের জন্য ডে কেয়ার সেন্টার স্থাপনের প্রতিও জোর দিয়েছেন তিনি।

বৃহস্পতিবার ফেসবুকে প্রকাশিত এক বার্তায় তারেক রহমান বলেন, মায়েদের কর্মক্ষেত্রে শিশু পরিচর্যার সুযোগ থাকলে উৎপাদন বাড়ে এবং অর্থনীতি গতিশীল হয়। ক্ষমতায় এলে এ বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া হবে বলেও তিনি জানান।

তিনি আরও উল্লেখ করেন, যখন কোনো তরুণী মা শিশু পরিচর্যার অভাবে চাকরি ছাড়তে বাধ্য হন বা কোনো ছাত্রী পড়াশোনা বন্ধ করেন, তখন দেশ হারায় সম্ভাবনা, উৎপাদনশীলতা ও অগ্রগতি। তাই বিএনপি এমন এক আধুনিক, গণমুখী বাংলাদেশ গড়তে চায়, যেখানে কোনো নারীকে পরিবার ও ভবিষ্যতের মধ্যে একটি বেছে নিতে হবে না।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) ২০২৪ সালের শ্রমশক্তি জরিপের তথ্য উদ্ধৃত করে তিনি বলেন, পুরুষদের তুলনায় নারীদের শ্রমবাজারে অংশগ্রহণ এখনো কম—পুরুষদের ৮০ শতাংশের বিপরীতে নারীদের মাত্র ৪৩ শতাংশ কর্মজীবী। এই ব্যবধান আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে, দেশের অর্ধেক জনশক্তি এখনো পূর্ণভাবে কাজে লাগানো যাচ্ছে না।

নিজের পরিকল্পনা তুলে ধরে তিনি জানান, সব সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ডে-কেয়ার সেন্টার স্থাপন, সরকারি অফিসে ধাপে ধাপে ডে-কেয়ার সেন্টার চালু করার জাতীয় পরিকল্পনা, বড় বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও কারখানায় বাধ্যতামূলক ডে-কেয়ার ব্যবস্থা, শিশু পরিচর্যার সুযোগ রাখা প্রতিষ্ঠানগুলোকে কর সুবিধা ও সিএসআর ক্রেডিট প্রদান এবং নারী ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মান অনুযায়ী কেয়ারগিভারদের প্রশিক্ষণ ও সার্টিফিকেশন প্রদান করা হবে।

তারেক রহমানের মতে, এই সংস্কার নারীদের কর্মসংস্থান বাড়াবে, পারিবারিক আয় বৃদ্ধি করবে, ক্রমবর্ধমান মধ্যবিত্ত শ্রেণিকে স্থিতিশীলতা দেবে এবং জিডিপিতে ১ শতাংশ পর্যন্ত প্রবৃদ্ধি আনতে সক্ষম হবে।

তিনি বলেন, তৈরি পোশাক শিল্পে কর্মরত শ্রমিকদের দুই-তৃতীয়াংশ নারী, তাই কর্মজীবী মায়েদের অবদান উপেক্ষা করা উচিত নয়। ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্স করপোরেশন (আইএফসি) ও আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) গবেষণা অনুযায়ী, যেসব কারখানায় শিশু পরিচর্যার সুবিধা রয়েছে, সেখানে কর্মী ধরে রাখার হার বেশি, অনুপস্থিতি কম এবং প্রতিষ্ঠানগুলো এক বছরের মধ্যেই বিনিয়োগের খরচ পুনরুদ্ধার করতে পারে।

তারেক রহমান বলেন, শিশু পরিচর্যা কোনো দয়া নয়, এটি সামাজিক ও অর্থনৈতিক অবকাঠামোর অপরিহার্য অংশ। যেমন সড়ক বাজারকে সংযুক্ত করে, তেমনি ডে-কেয়ার সেন্টার নারীদের কর্মজীবনে সাফল্যের সঙ্গে যুক্ত করে।

বিএনপির দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরে তিনি বলেন, ২০৩৪ সালের মধ্যে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক ট্রিলিয়ন ডলারের অর্থনীতি গড়ে তোলা হবে, যা লাখ লাখ কর্মসংস্থান সৃষ্টি করবে এবং প্রতিটি নাগরিক—বিশেষ করে নারী—গর্বের সঙ্গে দেশের প্রবৃদ্ধিতে অবদান রাখবে।

তিনি আরও যোগ করেন, আমরা যেকোনো পশ্চাৎমুখী চিন্তাধারা প্রত্যাখ্যান করি যা নারীর সম্ভাবনাকে সীমাবদ্ধ করে। শিশু পরিচর্যা, সমান মজুরি ও কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তার মাধ্যমে নারীর ক্ষমতায়ন শুধু ন্যায্য নয়—এটাই একটি বুদ্ধিবৃত্তিক ও টেকসই অর্থনীতির ভিত্তি।