শরীয়তপুর জেলার ডামুড্যা উপজেলার কনেশ্বর ইউনিয়নের বাসিন্দা মো. খালেদ হোসেন বুলেট খন্দকারের বিরুদ্ধে সম্প্রতি বিভিন্ন আর্থিক অনিয়ম, জমি দখল এবং অস্বচ্ছ সম্পদ বৃদ্ধির অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে তার মন্তব্য জানতে সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে লিখিতভাবে প্রশ্নপত্র প্রেরণ করা হলেও তিনি এখনও কোনো জবাব দেননি বলে জানা গেছে।
বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়, প্রায় ১৫ থেকে ২০ বছর আগে বুলেট খন্দকার রাজমিস্ত্রির কাজের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। পরবর্তীতে তিনি নিজ উদ্যোগে সিমেন্টের খুঁটি বা পিলার তৈরি ও বিক্রির ব্যবসা শুরু করেন। ধীরে ধীরে তিনি আর্থিকভাবে স্বচ্ছল হয়ে ওঠেন এবং এলাকায় প্রভাবশালী হিসেবে পরিচিতি পান।
জমি দখলের অভিযোগ অভিযোগ রয়েছে, মৃত আলী হোসেনের প্রায় এক কানি জমির মধ্যে প্রায় ১৫ গণ্ডা জমি তিনি “ক্রয়ের নামে” দখলে নিয়েছেন। স্থানীয়দের দাবি, জমিটি প্রকৃত মালিকদের কাছ থেকে বৈধভাবে কেনা হয়েছে কি না তা স্পষ্ট নয়। সংশ্লিষ্ট জমির বর্তমান বাজারমূল্য প্রায় আড়াই থেকে তিন কোটি টাকা বলে ধারণা করা হচ্ছে।
প্রশ্ন উঠেছে—যদি বুলেট খন্দকার জমিটি প্রকৃতপক্ষে ক্রয় করে থাকেন, তবে সেই সময় তার এক কোটি টাকারও বেশি অর্থের উৎস কী ছিল? তার আর্থিক সামর্থ্য ও ব্যবসায়িক অবস্থান তখন কতটুকু ছিল, সে নিয়েও জনমনে সংশয় দেখা দিয়েছে।
গুলশানে ব্যবসা ও ভবন বিক্রির তথ্য স্থানীয় ও ঢাকাভিত্তিক একাধিক সূত্র জানায়, বুলেট খন্দকার ঢাকার গুলশান এলাকায় একটি ব্যবসা পরিচালনা করতেন এবং সম্প্রতি প্রায় ছয় কোটি টাকায় একটি ভবন বিক্রি করেছেন। এলাকাবাসীর প্রশ্ন—এই ভবনে বিনিয়োগের অর্থ তিনি কোথা থেকে পেয়েছিলেন?
এছাড়া ডামুড্যায় তার নিজ বাড়িতে প্রায় ৬০ লাখ টাকা ব্যয়ে দুইতলা একটি ভবন নির্মাণের তথ্যও পাওয়া গেছে। এসব স্থাবর সম্পদের উৎস সম্পর্কে তিনি কোনো স্পষ্ট ব্যাখ্যা দেননি। “কুইক স্টুডিও” নিয়ে বিতর্ক আরও জানা গেছে, ঢাকার গুলশান–২ নম্বর এলাকায় তার একটি ফটো স্টুডিও রয়েছে, যার নাম “কুইক স্টুডিও”। প্রায় এক কোটি টাকা বিনিয়োগে প্রতিষ্ঠিত এই স্টুডিওর আড়ালে নাকি অনৈতিক কর্মকাণ্ড—যেমন ইয়াবা বাণিজ্য ও দেহ ব্যবসার মতো অবৈধ কার্যক্রম—চলছে বলে অভিযোগ উঠেছে। একাধিক সূত্র দাবি করেছে, অভিজাত এলাকায় এ ধরনের ব্যবসা এখন ‘ওপেন সিক্রেট’।
তবে এসব অভিযোগের কোনোটি এখনও প্রমাণিত নয়। দায়িত্বশীল সূত্র থেকে জানানো হয়েছে, বিভিন্ন তফশিলি ব্যাংকে বুলেট খন্দকারের নামে ও বেনামে কয়েক কোটি টাকা জমা রয়েছে বলেও গুঞ্জন রয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করলে চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে আসতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের অভিযোগ মৃত আলী হোসেনের বোনেরা অভিযোগ করেছেন, আওয়ামী লীগের স্থানীয় প্রভাবশালী নেতাদের সহযোগিতায় বুলেট খন্দকার তাদের পারিবারিক জমি দখল করেছেন। এমনকি তাদের ঘরবাড়ি ভেঙে দেওয়া হয়েছে বলেও দাবি করেন তারা। অভিযোগকারীরা জানান, জমি হারানোর পর থেকে তারা মানবেতর জীবনযাপন করছেন এবং প্রশাসনের কাছে একাধিকবার অভিযোগ করেও তেমন কোনো প্রতিকার পাননি।
সাংবাদিকদের প্রশ্ন ও তার নীরবতা বুলেট খন্দকারের বিরুদ্ধে উত্থাপিত এসব অভিযোগের বিষয়ে তার বক্তব্য জানতে একটি জাতীয় দৈনিকের বিশেষ প্রতিনিধি তার কাছে লিখিত প্রশ্নপত্র পাঠিয়েছেন। প্রশ্নপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে— ১. তার সম্পদের প্রকৃত উৎস কী? ২. মৃত আলী হোসেনের জমি তিনি বৈধভাবে কিনেছেন কি না? ৩. ঢাকায় ব্যবসা ও ভবন বিনিয়োগের অর্থ কোথা থেকে এসেছে? ৪. তার নামে থাকা ব্যাংক
অ্যাকাউন্টের আর্থিক লেনদেনের উৎস কী?
তবে এই প্রশ্নগুলোর কোনো জবাব এখনও পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। তদন্ত দাবি স্থানীয়দের স্থানীয় সচেতন মহল ও ভুক্তভোগীরা বলছেন, একজন ব্যক্তি যিনি একসময় রাজমিস্ত্রির কাজ করতেন, হঠাৎ করে কোটি কোটি টাকার মালিক হওয়ার পেছনে নিশ্চয়ই প্রশ্নযোগ্য কিছু আছে। তারা প্রশাসন ও দুর্নীতি দমন কমিশনের কাছে সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানিয়েছেন।
পরবর্তী পদক্ষেপ বুলেট খন্দকারের পক্ষ থেকে কোনো লিখিত বা মৌখিক প্রতিক্রিয়া পাওয়া গেলে তা পরবর্তী প্রতিবেদনে হুবহু প্রকাশ করা হবে। একই সঙ্গে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনিক ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তাদের কাছ থেকেও এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক মন্তব্য নেওয়ার চেষ্টা চলছে। অপর দিকে এলাকার সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের দাবি তাঁর বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন দুদক নিবিড়ভাবে তদন্ত করলে চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে আসবে। এই জানতে চাইলে whatsapp নাম্বার বলেন আসসালামু আলাইকুম। আপনি, আমার সম্পর্কে যা জেনেছেন তা সম্পুর্ন অসত্য ও ভিত্তিহীন।
সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতি: এম.জি.আর.নাছির মজুমদার, সম্পাদক : এস এম রফিকুল ইসলাম, যোগাযোগ ঠিকানা: সেঞ্চুরি সেন্টার: খ-২২৫, প্রগতি সরণি, মেরুল,বাড্ডা, ঢাকা-১২১২।, ফোন নং : +৮৮-০২-৫৫০৫৫০৪৭ | মোবাইল নং: ০১৭১৬৩৭১২৮৬
www: dailybhor.com
© ২০২৫ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত | দৈনিক ভোর