
মতৈক্যে পৌঁছাতে না পারলে সরকার সরকারের মতো সিদ্ধান্ত নেবে
গণভোটসহ অন্যান্য অনৈক্যের বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলো নিজেদের মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করে সরকারকে জানাতে আহ্বান জানিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। এক সপ্তাহের মধ্যে দলগুলো সম্মিলিতভাবে সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে না পারলে সরকার নিজস্বভাবে ব্যবস্থা নেবে। আজ উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
বৈঠক শেষে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বিষয়গুলো তুলে ধরেন আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, আজ উপদেষ্টা পরিষদের জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সংস্কার বিষয়ে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টায় জাতীয় ঐকমত্য কমিশন ও রাজনৈতিক দলগুলোর ভূমিকার প্রশংসা করা হয়। এছাড়া, ঐকমত্য কমিশনের প্রস্তাবিত জুলাই জাতীয় সনদ, সংবিধান সংস্কার আদেশের চূড়ান্তকরণ, গণভোট আয়োজন এবং গণভোটের বিষয়বস্তু নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।
তিনি বলেন, সভায় লক্ষ্য করা হয় যে, ঐকমত্য কমিশনে দীর্ঘ আলোচনার পরও কয়েকটি সংস্কার প্রস্তাবে মতবিরোধ রয়ে গেছে। পাশাপাশি, গণভোটের সময়সূচি ও বিষয়বস্তু নিয়েও রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মতপার্থক্য দেখা দিয়েছে, যা সভায় উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
আইন উপদেষ্টা আরও বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে বিলম্বের কোনো সুযোগ নেই—এ বিষয়টি সবারই মাথায় রাখা প্রয়োজন। উপদেষ্টা পরিষদের সভায় ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনের বিষয়ে সরকারের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করা হয়।
এক প্রশ্নের জবাবে আসিফ নজরুল বলেন, ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে রাজনৈতিক দলগুলো ১৫ বছর একসঙ্গে আন্দোলন করেছে। আমরা চাই তারা নিজেদের মধ্যে সময় নিয়ে উল্লিখিত বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করে ঐকমত্যে পৌঁছাক।
গণভোটের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত এসেছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, “আজকের বৈঠকে যা আলোচনা হয়েছে, তা লিখিতভাবে আপনাদের জানানো হয়েছে। এর বাইরে বলার কিছু নেই।”
আরেক প্রশ্নে তিনি বলেন, “আমরা কোনো আল্টিমেটাম দিইনি; বরং রাজনৈতিক দলগুলোকে আলোচনার আহ্বান জানিয়েছি। এক সপ্তাহ পর সরকার অবশ্যই নিজের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে।”
তিনি আরও জানান, “সরকার ইতোমধ্যেই বহু আলোচনা আয়োজন করেছে। এবার রাজনৈতিক দলগুলোরই দায়িত্ব নিজেদের মধ্যে সংলাপের মাধ্যমে ঐক্যবদ্ধ নির্দেশনা প্রদান করা। তারা যদি ঐক্যমত্যে পৌঁছাতে ব্যর্থ হয়, সরকার তখন নিজস্ব সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ নেবে।”