রাজধানীর গাবতলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবনে নির্মাণকাজ সম্পূর্ণ না করেই অতিরিক্ত বিল প্রদানের ঘটনা এবং ঢাকার নবাবগঞ্জে ইছামতী নদীর ওপর ২৭০ মিটার দীর্ঘ ব্রিজ নির্মাণে অনিয়মের অভিযোগে অভিযান পরিচালনা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) সকালে দুদকের একটি এনফোর্সমেন্ট টিম এলজিইডি ঢাকা জেলা কার্যালয়ে নির্বাহী প্রকৌশলীর দপ্তরে গিয়ে এ অভিযান চালায়।
অভিযানকালে নির্বাহী প্রকৌশলী মুহাম্মদ বাচ্চু মিয়ার সঙ্গে দুদকের কর্মকর্তারা সাক্ষাৎ করেন এবং সংশ্লিষ্ট প্রকল্পের নথি ও অন্যান্য তথ্য সংগ্রহ করেন।
দুদকের উপপরিচালক (জনসংযোগ) আকতারুল ইসলাম জানান, ‘ঢাকা শহর ও পূর্বাচলের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সৌন্দর্যবর্ধন প্রকল্প’ এর আওতায় গাবতলী জিপিএস-এর ভিত্তিসহ ৬ তলা ভবন নির্মাণে কাজ অসমাপ্ত থাকা সত্ত্বেও অতিরিক্ত বিল পরিশোধের অভিযোগে এ অভিযান পরিচালিত হয়।
সরেজমিন পরিদর্শনে দেখা যায়, ভবনের দুটি ফ্লোর সম্পন্ন হলেও চারটি ফ্লোরের বিল ঠিকাদারকে পরিশোধ করা হয়েছে। এ সময় প্রকল্প-সংক্রান্ত আংশিক রেকর্ডপত্র সংগ্রহ করে দুদক। অবশিষ্ট নথি সংগ্রহের জন্য চাহিদাপত্র দেওয়া হয় এবং পূর্ণাঙ্গ যাচাই শেষে কমিশনে বিস্তারিত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
অন্যদিকে, ঢাকার নবাবগঞ্জে ইছামতী নদীর ওপর ২৭০ মিটার দীর্ঘ ব্রিজ নির্মাণে অনিয়মের অভিযোগে জেলা কার্যালয়, ঢাকা-২ থেকে আরেকটি এনফোর্সমেন্ট অভিযান পরিচালনা করা হয়। প্রথমে এলজিইডি কার্যালয়ে সংশ্লিষ্ট নথি পর্যালোচনা শেষে দলটি নবাবগঞ্জের বান্দুরা এলাকায় সরেজমিনে ব্রিজ নির্মাণকাজ পরিদর্শন করে।
পরিদর্শনে দেখা যায়, ব্রিজটির ৯টি স্প্যানের মধ্যে ৮টির কাজ শেষ হলেও আর্চ স্প্যানের কাজ এখনো বাকি। অথচ নথিতে কাজের অগ্রগতি ৯৫% দেখিয়ে প্রায় ৫০ কোটি ৮৪ লাখ টাকা বিল পরিশোধ করা হয়েছে। টিমের প্রাথমিক পর্যবেক্ষণে অভিযোগের সত্যতা মেলে। এ বিষয়ে অবশিষ্ট রেকর্ড যাচাই শেষে পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।
উল্লেখ্য, এলজিইডি ঢাকা জেলার নির্বাহী প্রকৌশলী বাচ্চু মিয়ার বিরুদ্ধে আর্থিক অনিয়ম, চাঁদাবাজি, ক্ষমতার অপব্যবহার এবং প্রকল্পের কাজ ব্যাহত করার মতো একাধিক অভিযোগ রয়েছে।
এছাড়া অভিযোগ রয়েছে, তিনি গত জুন মাসে কাজ সম্পন্ন না করেই দৃষ্টিনন্দন স্কুল প্রকল্পে ৩০ কোটি টাকা, কেরানীগঞ্জ প্রকল্পে ৩০ কোটি টাকা এবং বান্দুরা ব্রিজে ৫ কোটি টাকার অগ্রিম বিল দিয়েছেন। এমনকি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে মোবাইল মেইনটেন্যান্সের কাজ না করেই ৫০ লাখ টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে।