রপ্তানিকারকদের নগদ টাকার চাহিদা পূরণের লক্ষ্যে বৈদেশিক মুদ্রা ও টাকা সোয়াপ সুবিধা চালু করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এখন থেকে রপ্তানিকারকরা তাদের রপ্তানি আয়ের বৈদেশিক মুদ্রা (ডলার, ইউরো ইত্যাদি) ভাঙানো ছাড়াই তার বিপরীতে টাকার সুবিধা নিতে পারবেন।
সোমবার বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রা নীতি বিভাগ এ বিষয়ে একটি সার্কুলার জারি করে ব্যাংকগুলোকে রপ্তানিকারকদের এই সুবিধা প্রদানের নির্দেশ দিয়েছে। সোয়াপ হলো এমন এক ধরনের চুক্তি, যেখানে রপ্তানিকারক সাময়িকভাবে তার বৈদেশিক মুদ্রা ব্যাংকে প্রদান করবে এবং নির্দিষ্ট সময় পর একই পরিমাণ মুদ্রা ফেরত নেবে। এই সময়ের মধ্যে রপ্তানিকারক সেই টাকার সুবিধা ব্যবহার করতে পারবে। অর্থাৎ, রপ্তানিকারক ডলার বা অন্য বৈদেশিক মুদ্রা ধরে রাখার পাশাপাশি টাকাও পাবেন, যা ব্যবসায়িক নগদ সংকট নিরসনে সহায়ক হবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্কুলারে বলা হয়েছে, এই সোয়াপ সুবিধার মেয়াদ সর্বোচ্চ ৩০ দিন। রপ্তানিকারকের পুল অ্যাকাউন্ট বা রিটেনশন কোটা (ইআরকিউ) হিসাবের বিপরীতে ব্যাংক এই সুবিধা দিতে পারবে এবং মেয়াদ শেষে লেনদেন নিষ্পত্তি করতে হবে।
দুই মুদ্রার (টাকা ও বৈদেশিক মুদ্রা) সুদ বা লাভের হারের পার্থক্যের ওপর ভিত্তি করে সোয়াপের হার বা ‘সোয়াপ পয়েন্ট’ নির্ধারিত হবে। সার্কুলারে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, এই সোয়াপ কোনো ঋণ বা অর্থায়ন নয়, বরং এটি একটি সাময়িক বিনিময় চুক্তি। ব্যাংকগুলোকে যথাযথ ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা, তারল্য নিয়ন্ত্রণ ও অভ্যন্তরীণ নিরীক্ষা প্রক্রিয়া অনুসরণ করে চুক্তি সম্পাদনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। রপ্তানিকারকদের লিখিতভাবে জানাতে হবে যে তারা চুক্তির শর্ত, বিনিময় হার ও সংশ্লিষ্ট ঝুঁকি সম্পর্কে সম্পূর্ণ অবগত আছেন।
সার্কুলারে আরও বলা হয়েছে, সোয়াপ থেকে প্রাপ্ত টাকা কেবল রপ্তানি ব্যবসার কার্যক্রমে—যেমন উৎপাদন ব্যয়, পরিবহন খরচ বা কাঁচামাল কেনার কাজে ব্যবহার করা যাবে। কোনো প্রকার জল্পনামূলক (স্পেকুলেটিভ) লেনদেনে এই অর্থ ব্যবহার করা যাবে না। সব ধরনের সোয়াপ লেনদেন সঠিকভাবে নথিভুক্ত করে নিয়মিতভাবে বাংলাদেশ ব্যাংকে প্রতিবেদন জমা দিতে হবে বলেও সার্কুলারে উল্লেখ করা হয়েছে।
