• ৭ই আগস্ট, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ , ২৩শে শ্রাবণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

নতুন করে সাড়ে তিন শ শিক্ষকের জাল সনদের তথ্য পেয়েছে ডিআইএ

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
প্রকাশিত আগস্ট ৬, ২০২৫, ১১:২৭ পূর্বাহ্ণ
নতুন করে সাড়ে তিন শ শিক্ষকের জাল সনদের তথ্য পেয়েছে ডিআইএ
সংবাদটি শেয়ার করুন....

দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নতুন করে আরও প্রায় সাড়ে তিন শতাধিক শিক্ষকের সনদ জাল পেয়েছে পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তর (ডিআইএ)। সম্প্রতি এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ, কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে জমা দেওয়া হয়েছে। এর আগে সাড়ে ছয় শতাধিক শিক্ষকের সনদ জালের তথ্য পেয়েছিল ডিআইএ।

ডিআইএ এর একটি সূত্র জানিয়েছে, গত জানুয়ারি থেকে থেকে জুন পর্যন্ত ছয় মাসে দুই হাজার ৩৭টি প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন করেছে সংস্থাটি। এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিদর্শনে নানা অনিয়ম খুঁজে পেয়েছে ডিআইএ। এর মধ্যে জাল সনদধারী শিক্ষক, প্রতিষ্ঠানের জমি দখলের মতো গুরুতর বিষয়ও রয়েছে। প্রতিবেদনে বেশকিছু সুপারিশও করেছে সংস্থাটি।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, জাল সনদধারীদের বিরুদ্ধে বিগত সময়ে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ায় অনিয়মের ঘটনা কমে আসছে। এই প্রতিবেদনগুলোতে যে সকল অনিয়ম ও দুর্নীতির চিত্র উঠে এসেছে, তা ভবিষ্যতে এ ধরনের কার্যক্রম প্রতিরোধে সহায়ক হবে।

জানতে চাইলে ডিআইএ পরিচালক প্রফেসর মো. সাইফুল ইসলাম দ্য ডেইলি ভোরকে বলেন, ‘গত ছয় মাসে আমাদের একাধিক টিম বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন করেছে। পরিদর্শনের আলোকে কিছু অনিয়মের তথ্য-প্রমাণ পাওয়া গেছে। বিষয়গুলো সরকারকে অবহিত করা হয়েছে। সরকার এসব অনিয়মের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে।’

সাড়ে তিন শতাধিক জাল সনদধারীর তথ্য পাওয়া প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি আরও বলেন, ‘পূর্বে জাল সনদধারীর সংখ্যা অনেক বেশি ছিল। তবে বর্তমানে সেই সংখ্যা অনেক কমে এসেছে। সাম্প্রতিক পরিদর্শনে ৩০০ থেকে ৩৫০ জন শিক্ষকদের সনদে সমস্যা রয়েছে বলে পরিলক্ষিত হয়েছে। আমরা বিষয়টি প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছি।’

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জমি দখল করা প্রসঙ্গে প্রফেসর সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘অনেক ব্যক্তি জমি দান করার সময় কাগজপত্র লিখে দেননি। এই ব্যক্তির মৃত্যুর পর তার পরিবারের সদস্যরা স্কুলের জমি নিজেদের বলে দাবি করে দখল করে নিয়েছেন। এর সাথে প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং কমিটির লোকজন জড়িত রয়েছে। বিষয়গুলো প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।’

গত ২০ জুলাই দেশের ২৭৩৭ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পরিদর্শন ও নিরীক্ষা প্রতিবেদনের তালিকা প্রকাশ করে পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তর। তালিকা প্রকাশ সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘গত ১ জানুয়ারি থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তর হতে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগে এবং কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগে প্রেরিত মোট ২৭৩৭ টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পরিদর্শন ও নিরীক্ষা/তদন্ত প্রতিবেদনের তালিকা পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের ওয়েব সাইটের (www.dia.gov.bd) নোটিশ বোর্ডে প্রকাশ করা হয়েছে।

প্রতিবেদনগুলোর অনুলিপি সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তরে (মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর, মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তর ও কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরে), সংশ্লিষ্ট শিক্ষা বোর্ডে ডি – নথিতে (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালকে ও ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার বরাবরে ই – মেইলে), সংশ্লিষ্ট জেলা শিক্ষা অফিসে ডি – নথিতে , সভাপতি (ব্যবস্থাপনা কমিটি / গভর্নিং বডি) এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধানকে ই – মেইলে (ব্যানবেইস জরিপে প্রদত্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নিজ নিজ ই – মেইলে ) প্রেরণ করা হয়েছে।’

এতে আরও বলা হয়, ‘যদি প্রকাশিত তালিকার কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রতিবেদন সংশ্লিষ্ট ই-মেইলে পাওয়া না যায় তাহলে নিজ নিজ জেলা শিক্ষা অফিসে যোগাযোগ করে ( জেলা শিক্ষা অফিসের ডি – নথি সিস্টেম হতে ডাউনলোড করে) সংগ্রহ করা যেতে পারে।’

এছাড়া যদি জেলা শিক্ষা অফিস হতে প্রতিবেদন সংগ্রহ করা সম্ভব না হয় তাহলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের লেটার হেড প্যাডে পরিচালক, পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তর বরাবরে প্রতিবেদন প্রাপ্তির জন্য আবেদন করে উক্ত আবেদনের কপি director@dia.gov.bd ই – মেইলে প্রেরণ করতে হবে। ই – মেইল যোগে উক্ত আবেদন প্রাপ্তির পরবর্তী ৩ কর্ম দিবসের মধ্যে এ অধিদপ্তর হতে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের ই – মেইলে পুনরায় প্রতিবেদন প্রেরণ করা হবে।

প্রয়োজনে টেলিফোনে (০২৪১০৫৩৩৪৭) যোগাযোগ করা যেতে পারে। প্রতিবেদন প্রাপ্তির জন্য সশরীরে এ অধিদপ্তরে আসার প্রয়োজন নাই বলেও জানান হয়।’