• ১৩ই আগস্ট, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ , ২৯শে শ্রাবণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

নিরবচ্ছিন্ন বৃষ্টিপাতে উপকূলীয় অঞ্চল ও পাহাড়ী এলাকায় জনজীবন বিপর্যস্ত

ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশিত জুলাই ৯, ২০২৫, ১৯:৪৩ অপরাহ্ণ
নিরবচ্ছিন্ন বৃষ্টিপাতে উপকূলীয় অঞ্চল ও পাহাড়ী এলাকায় জনজীবন বিপর্যস্ত
সংবাদটি শেয়ার করুন....

গত দুই দিনের টানা বৃষ্টিপাতে দেশের নদ-নদীর পানি অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে এবং নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হচ্ছে। এর ফলে উপকূলীয় এবং পাহাড়ি এলাকায় জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, দেশের মধ্য ও দক্ষিণাঞ্চলে ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ আগামী আরও দুই দিন অব্যাহত থাকতে পারে। ফলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
ফ্লাড ফরকাস্টিং অ্যান্ড ওয়ার্নিং সেন্টার (FFWC) জানিয়েছে, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, বান্দরবান, রাঙামাটি, সিলেট ও ময়মনসিংহ অঞ্চলে আকস্মিক বন্যার (ফ্ল্যাশ ফ্লাড) সম্ভাবনা রয়েছে।

কক্সবাজারের টেকনাফ, উখিয়া, রামু ও মহেশখালীতে অতিবৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলের কারণে শতাধিক ঘরবাড়ি ও স্কুল প্লাবিত হয়েছে। নদীর পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করায় অনেক জায়গায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে। প্রশাসন স্থানীয়দের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিচ্ছে এবং বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্র চালু করেছে।
চট্টগ্রামের কর্ণফুলী, পাহাড়তলী ও বাঁশখালী এলাকায় নিচু জায়গাগুলোতে পানি ঢুকে গেছে। পাহাড়ধসের আশঙ্কায় বাসিন্দাদের সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতি দেখা দিয়েছে ফেনী, কক্সবাজার ও চট্টগ্রামে। ফেনীতে রেকর্ড ৪৪০ মিলিমিটার বৃষ্টির ফলে মুহুরী, খাহুয়া ও সিলোনিয়া নদীর অন্তত ১৫টি পয়েন্টে বাঁধ ভেঙে গিয়ে ৩০টিরও বেশি গ্রাম পানিতে তলিয়ে গেছে। বাড়িঘর, রাস্তা ও চাষাবাদ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অনেক জায়গায় বিদ্যুৎ ও যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।

জরুরি সেবা দিতে পানি উন্নয়ন বোর্ড, জেলা প্রশাসন, রেড ক্রিসেন্ট ও বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী দল মাঠে কাজ শুরু করেছে। সেনাবাহিনী ও নৌবাহিনীকে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। কিছু অঞ্চলে সাবস্টেশন ডুবে যাওয়ায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রাখা হয়েছে।
ফেনীতে অস্থায়ী মেডিকেল ক্যাম্প স্থাপন করা হয়েছে, দেওয়া হচ্ছে বিশুদ্ধ পানি ও শুকনো খাবার।

বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, এই দুর্যোগ জলবায়ু পরিবর্তনের একটি সরাসরি প্রভাব। শহরাঞ্চলে পর্যাপ্ত পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়ে উঠেছে।
জনসাধারণকে নিরাপদ দূরত্বে থাকতে, ওষুধ ও খাবার মজুত রাখতে এবং প্রশাসনের নির্দেশনা অনুসরণ করতে বলা হয়েছে।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, বর্তমানে দেশের ৩০টির বেশি জেলা কোনো না কোনোভাবে জলাবদ্ধতা বা বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত। ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের সংখ্যা লাখ ছাড়াতে চলেছে।
প্রশাসনের দাবি, পর্যাপ্ত ত্রাণ মজুত রয়েছে এবং প্রয়োজন হলে সেনা বা নৌবাহিনী নামানো হবে।