• ১০ই আগস্ট, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ , ২৬শে শ্রাবণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে সুন্দরবনে চলছে হরিণ শিকার

ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশিত আগস্ট ১০, ২০২৫, ১৫:২৫ অপরাহ্ণ
নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে সুন্দরবনে চলছে হরিণ শিকার
সংবাদটি শেয়ার করুন....

সুন্দরবনে বর্তমানে মাছের প্রজনন মৌসুম উপলক্ষে বনে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও বেপরোয়া চোরা শিকারীদের হরিণ নিধন থেমে নেই। খুলনার দাকোপ ও আশপাশের এলাকায় নিয়মিতভাবে হরিণসহ বিভিন্ন বন্যপ্রাণীর মাংস বিক্রি হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ফাঁদ পেতে কিংবা অন্যান্য কৌশলে শিকার করা এই হরিণের মাংস স্থানীয় বাজারে গরু বা খাসির মাংসের তুলনায় কম দামে বিক্রি হয়, যার ফলে সাধারণ মানুষও অবৈধ হলেও তা কিনছেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সুন্দরবনের পূর্ব ও পশ্চিম অংশ ঘেঁষা খুলনার দাকোপ উপজেলার সুতারখালী, কালাবগী, নলিয়ান, কৈলাশগঞ্জ, বানিশান্তা, ঢাংমারীসহ মোংলার চিলা, বাঁশতলা, মোরেলগঞ্জ ও শ্যামনগর এলাকার বিভিন্ন গ্রামে সক্রিয় রয়েছে একাধিক চিহ্নিত হরিণ শিকারী চক্র। এরা বনবিভাগের নজর এড়িয়ে অবাধে বনে প্রবেশ করে এবং লম্বা ফাঁদ, জাল ও অন্যান্য কৌশলে চিত্রা হরিণ শিকার করে।

এরপর জীবন্ত কিংবা জবাই করা অবস্থায় হরিণ লোকালয়ে আনা হয় এবং অগ্রিম অর্ডার গ্রহণ করে বিক্রি করা হয়। প্রতি কেজি হরিণের মাংস ৬০০ থেকে ৭০০ টাকায় বিক্রি হয় বলে জানায় স্থানীয়রা। জেলা শহরে এই মাংসের দাম আরও বেশি। অনেক ধনী ব্যক্তি উৎসব, আপ্যায়ন বা ‘উপহার’ দেওয়ার উদ্দেশ্যে হরিণের মাংস সংগ্রহ করেন।

কালাবগী এলাকার বাসিন্দা মো. সালাম মোল্যা জানান, অমাবস্যা ও পূর্ণিমার রাতে শিকারিরা বনে ঢুকে হরিণ শিকার করে। শিকার প্রতিরোধে কেউ মুখ খুললে স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী নেতা ও জনপ্রতিনিধিদের রোষানলে পড়তে হয়। শুধু হরিণ নয়, সজারু ও অন্যান্য বন্যপ্রাণীও রক্ষা পাচ্ছে না এই শিকারীদের হাত থেকে।

সুন্দরবন ও উপকূল সুরক্ষা ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী সাংবাদিক শুভ্র শচীন বলেন, সুন্দরবনে বাঘ শিকার কিছুটা কমলেও হরিণ শিকার অব্যাহত রয়েছে। এই হরিণই বাঘের প্রধান খাদ্য। মাঝে মাঝে হরিণের মাংস ও চামড়া উদ্ধার হলেও চক্রের মূল হোতারা থেকে যায় ধরাছোঁয়ার বাইরে। যারা ধরা পড়ে, তারা দুর্বল আইনের ফাঁক গলে মুক্ত হয়ে আবার একই কাজে জড়ায়।

খুলনা অঞ্চলের বন সংরক্ষক ইমরান আহমেদ বলেন, মাছের প্রজনন মৌসুমে বনে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। তারপরও কিছু চোরা শিকারি ঢুকে পড়ছে। তবে তুলনামূলকভাবে শিকার কমেছে। অল্প জনবল দিয়ে এত বড় বন রক্ষা করা আমাদের জন্য চ্যালেঞ্জ। অভিযান ও টহল অব্যাহত রয়েছে।