• ১৩ই নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ , ২৮শে কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বাংলাদেশের নিরাপত্তা খাতে যুক্তরাষ্ট্রকে আরও সহযোগিতার আহ্বান স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার

মনির হোসেন জীবন
প্রকাশিত জুলাই ১০, ২০২৫, ২০:১৩ অপরাহ্ণ
বাংলাদেশের নিরাপত্তা খাতে যুক্তরাষ্ট্রকে আরও সহযোগিতার আহ্বান স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার
সংবাদটি শেয়ার করুন....

বাংলাদেশের নিরাপত্তা খাতে যুক্তরাষ্ট্রকে আরও সহযোগিতার আহ্বান জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল মোঃ জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব.)। আজ দুপুরে উপদেষ্টার সঙ্গে বাংলাদেশ সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তাঁর অফিস কক্ষে বাংলাদেশে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের চার্জ দ্যা অ্যাফেয়ার্স Megan Bouldin সৌজন্য সাক্ষাৎকালে তিনি এ আহ্বান জানান।

বৈঠকে দু’দেশের মধ্যে আইনশৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা ইস্যু, সন্ত্রাসবাদ দমন, মামলার প্রসিকিউশন, তরুণীদের অনলাইনে যৌন হয়রানি প্রতিরোধ সহ পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করা হয়।

বৈঠকের শুরুতে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মোঃ জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী রাষ্ট্রদূতকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের ঘনিষ্ঠ মিত্র। দেশটি শুরু থেকেই বাংলাদেশে সন্ত্রাসবাদ দমন ও নিরাপত্তা খাতে ঘনিষ্ঠ অংশীদার হয়ে কাজ করে আসছে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রশিক্ষণ ও সরঞ্জাম সহযোগিতায় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের সিটিটিসি (কাউন্টার টেরোরিজম এন্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম) ইউনিটকে আধুনিক ও সক্ষম করে গড়ে তোলা সম্ভব হয়েছে। সেজন্য উপদেষ্টা চার্জ দ্যা অ্যাফেয়ার্সকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান এবং ভবিষ্যতেও এ খাতে সহযোগিতা অব্যাহত রাখার অনুরোধ করেন।

বাংলাদেশের নিরাপত্তা খাতে সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করে চার্জ দ্যা অ্যাফেয়ার্স বলেন, প্রতিটি দেশই কম-বেশি সন্ত্রাসবাদ ও জঙ্গি হামলার ঝুঁকিতে থাকে। বাংলাদেশও এর ব্যতিক্রম নয়। যদিও বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে অনেক রাজনৈতিক নির্যাতন ও নিপীড়নের ঘটনাকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার উদ্দেশ্যে জঙ্গিবাদ বলে অভিহিত করা হয়েছিলো। তারপরও বাংলাদেশকে এ বিষয়ে সতর্ক থাকা উচিত।

 

জবাবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশে বর্তমানে কোনো জঙ্গিবাদ নেই। তবে মাঝেমধ্যে নিষিদ্ধ ঘোষিত রাজনৈতিক দল মিটিং-মিছিলের চেষ্টা করে- যা আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কঠোরভাবে প্রতিহত করছে। তিনি বলেন, শুধু সন্ত্রাসবাদ নয়, যেকোনো ধরনের অপরাধ মোকাবেলায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় রয়েছে এবং তাদেরকে সে অনুযায়ী প্রয়োজনীয় নির্দেশনাও দেয়া হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, ঢাকার বারিধারা ডিপ্লোমেটিক এরিয়ার জন্য বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। নিয়মিত নিরাপত্তা বাহিনীর পাশাপাশি সেখানে কোস্টগার্ড মোতায়েন করা হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের নিরাপত্তায় বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য উপদেষ্টাকে ধন্যবাদ জানিয়ে চার্জ দ্যা অ্যাফেয়ার্স বলেন, যেকোন দেশের নিরাপত্তা ও সুরক্ষা নিশ্চিতকরণে এ সংক্রান্ত এজেন্সিগুলোর মধ্যে পারস্পরিক যোগাযোগ, সমন্বয় ও তথ্য শেয়ারকরণ অত্যন্ত জরুরি বিষয়। বাংলাদেশের নিয়মিত পুলিশ ফোর্স, গোয়েন্দা সংস্থা (এনএসআই, এসবি), সিটিটিসি (কাউন্টার টেরোরিজম এন্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম), এটিইউ (অ্যান্টি টেরোরিজম ইউনিট) প্রভৃতি এজেন্সিগুলোর মধ্যেও একইভাবে পারস্পরিক সংযুক্তি ও তথ্য আদান-প্রদান করা উচিত। তবেই বাংলাদেশের নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও শক্তিশালী ও সুসংহত হবে।

এসময় বৈঠকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (রাজনৈতিক ও আইসিটি) খন্দকার মোঃ মাহাবুবুর রহমান, যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের পলিটিক্যাল ও ইকোনমিক কাউন্সিলর Eric Geelan, পলিটিক্যাল মিলিটারি অ্যাফেয়ার্স অফিসার Josh Pope প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

আজ বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই, ২০২৫) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা (পরিচালক) ফয়সল হাসান স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।