দালাল ও প্রতারক চক্রের পোয়া বারো
স্থানীয় প্রভাবশালী মহলের কাছে জিম্মি সিন্ডিকেটের সদস্যরা
আটককৃত দালাল ও প্রতারকরা জামিন নিয়ে পূর্বের পেশায় ফিরছে
স্হানীয় ফটোকপি, চায়ের দোকান ও হোটেল গুলো অপরাধী ও দালাল চক্রের আখড়া ও আড্ডা খানা
সরকারের সংশ্লিষ্ট মহলের নজরধারী নেই
অদক্ষ চালকদের ড্রাইভিং লাইসেন্স দেওয়ার অভিযোগ
সড়কে দিন দিন দুর্ঘটনা ও দুর্ঘটনার ঝুঁকি বাড়ছে
জরুরি সংস্কার প্রয়োজন বিআরটিএ
দেখার যেন কেউ নেই! তদারকি ও কঠোর নজর ধ দেশের জনসাধারণের হয়রানি দূর করার লক্ষ্যে বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটির (বিআরটিএ) উত্তরা ডিয়াবাড়িতে অবস্থিত ঢাকা মেট্রো সার্কেল-৩ কার্যালয়কে দালাল ও প্রতারক মুক্ত করতে বিগত দিন গুলোতে একাধিক বার পৃথক সাঁড়াশি অভিযান চালিয়েছিল আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) এর ভ্রাম্যমাণ আদালত ও দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এর পৃথক অভিযান বিশেষ ভাবে উল্লেখযোগ্য। এছাড়া বিআরটিএকে দালালমুক্ত করার লক্ষ্যে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী এবং বিআরটিএ এর যৌথ অভিযান অব্যাহত রয়েছে। এপর্যন্ত বিআরটিএ উত্তরা অফিসের দালালদের গডফাদার ও প্রতারক চক্রের মূল হোতা মো. আতাউর রহমান ওরফে (আতা)সহ ইতিপূর্বে কমপক্ষে প্রায় ১৪/১৫ জনকে আটক করে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা এবং জেল খানায় পাঠিয়েছে বিআরটিএ’র ভ্রাম্যমাণ আদালত। খবর সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বিশ্বস্থ তথ্য সূত্রের।
আজ সোমবার সকালে বিআরটিএ উত্তরা অফিস সরেজমিন পরিদর্শন, ভুক্তভোগী, সেবা প্রত্যাশী, এলাকাবাসী ও বিভিন্ন পেশার লোকজনের সাথে আলাপ করে এসব তথ্য জানা গেছে।
যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ ও বুয়েটের দুর্ঘটনা গবেষণা কেন্দ্রের সাবেক পরিচালক অধ্যাপক মো. হাদিউজ্জামান গণমাধ্যমকে জানান, অদক্ষ চালকদের ড্রাইভিং লাইসেন্স দেওয়ার ফলে দিনকে দিন সড়কে দুর্ঘটনার ঝুঁকি বাড়ছে। অহরহ ঘটছে দুর্ঘটনা। বিআরটিএ গুলোতে যেভাবে পরীক্ষা নেওয়া হয়, তাতে দক্ষ চালক পাওয়া যাবে না। এখাতে সংস্কার প্রয়োজন। আমাদেরকে এ পদ্ধতি থেকে বের হয়ে আসতে হবে। সংস্কার লাগবে বিআরটিএর।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ঢাকা মেট্রো সার্কেল-৩ বিআরটিএ উত্তরা অফিসের পূর্ব, পশ্চিম পাশে ও সামনে অসংখ্য ফটোকপির দোকান, চায়ের দোকান ও খাবার হোটেল গুলো দালাল গড়ে উঠেছে। আর এসব দোকান গুলোতে দালাল ও প্রতারক চক্রের আখড়া। তারা শিকারের আশায় দোকানে ঘাপটি মেরে বসে থাকে। দিন দিন দোকান গুলো দালালদের আড্ডা খানায় পরিণত হয়েছে। এ সিন্ডিকেটের সদস্যরা স্থানীয় প্রভাবশালী মহলের কাছে জিম্মি। বলতে গেলে এ অফিসে দালাল ও প্রতারক চক্রের পোয়া বারো। এ সিন্ডিকেটের সদস্যরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে আটক হওয়ার পর কিছু দিন জেল খেটে কিংবা আদালত থেকে জামিন নিয়ে আবার পূর্বের পেশায় ফিরে আসছে বলে অভিযোগ উঠেছে ।
তথ্য অনুসন্ধান ও একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র জানান, স্হানীয় ফটোকপির দোকান, চায়ের দোকান ও খাবার হোটেল গুলো অপরাধীদের আখড়ায় পরিনত হয়েছে। সেই সাথে বিআরটিএ অফিস কর্তৃক অদক্ষ চালকদের ড্রাইভিং লাইসেন্স দেওয়ারও অভিযোগ উঠেছে। সে কারণে সড়ক ও মহাসড়কে দিনকে দিন দুর্ঘটনার ঝুঁকি বাড়ছে। পাল্লা দিয়ে বাড়ছে হতাহতের সংখ্যাও। ফলে জরুরি ভিত্তিতে সংস্কার প্রয়োজন বিআরটিএ । এমনটাই মনে করছে বিশেষজ্ঞরা। বর্তমানে বিআরটিএ উত্তরা অফিটি দেখার যেন কেউ নেই! এব্যাপারে বর্তমান সরকারের প্রধান উপদেষ্টাসহ সংশ্লিষ্ট মহলের কঠোর নজরধারী কিংবা তড়িৎগতিতে ব্যবস্হা নেওয়া প্রয়োজন বলে মনে করছে সংশ্লিষ্টরা। বিআরটিএ উত্তরা অফিসে
টাকা ছাড়া ফাইল নড়েনা। ভবনের ইট কিংবা অফিসের চেয়ারও বলে টাকা চাই; টাকা দে। এছাড়া নড়ে না দালালের সাংকেতিক ইশারা। সংকেত ছাড়া সাক্ষর হয় না ফাইলের পাতাও। লিখিত পরীক্ষা থেকে ড্রাইভিং টেস্টসহ সব জায়গাতেই যেন দালাল চক্রের সীমাহীন অপ্রতিরোধ্যতা। এখনকার দালাল চক্র গুলো এতটাই তৎপর, তাদের রয়েছে ভিন্ন ও অভিন্ন নানান কার্য কৌশলী গ্রুপ। যে গ্রুপগুলোর নেতৃত্ব দেন স্থানীয় কয়েকটি প্রভাবশালী মহল ও অফিসটির বিআরটিএ এ কতিপয় কিছু অসাধু কর্মকর্তা। মূলত তিনটি ভাগে বিভক্ত হয়ে কাজ করে চক্রটি। অকেজো ভঙ্গুর গাড়ির ফিটনেসের জন্য রয়েছে একটি চক্র। ড্রাইভিং টেস্ট ও লিখিত পরীক্ষায় পাস করানোর জন্য রয়েছে আলাদা আলাদা আরো দু’টি চক্র।
খোঁজ খবর নিয়ে জানা গেছে, গ্রাহক ও সেবা প্রত্যাশীরা প্রতিদিনই এখানে এসে কেউ না কেউ দালাল চক্রের হাতে বিভিন্ন ভাবে ভোগান্তির শিকার হচ্ছে। দিনকে দিন বিভিন্ন কৌশলে দালাল এবং প্রতারকদের আড্ডা খানায় পরিনত হয়েছে বিআরটিএ উত্তরা সরকারি অফিসটি। আর এ অফিসকে কেন্দ্র করে প্রকাশ্যেই চলছে তাদের বিচরণ। বিভিন্ন অনিয়মই সেখানে নিয়মে পরিনত হয়েছে। দালাল চক্রগুলোর উৎপাতে রীতিমত অতিষ্ঠ সাধারণ ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রত্যাশী ও সেবা প্রত্যার্শীরা। ভুক্তভোগী সেবা প্রত্যার্শীদের অভিযোগ, সরকারি এই দপ্তরটিতে কোনো সেবাই দালালদের মাধ্যম ছাড়া মেলে না। বলতে গেলে দেখার কেউ নেই!
ভুক্তভোগীদের সাথে আলাপকালে তারা এ প্রতিবেদককে জানান, ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রত্যার্শী পরীক্ষার্থীদের চেয়েও এখানে দালালের সংখ্যাই বেশী। ড্রাইভিং প্রাইভেটকার ও মোটরসাইকেল ড্রাইভিং টেস্ট পরীক্ষায় খোদ পরিদর্শকের সামনেই নানা কান্ড ও কার্যকলাপ চলে। প্রকাশ্যে সব কিছু দেখেও না দেখার ভান করছেন দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা। তারা নিজেরাই যেন দালাল সিন্ডিকেট গুলোর পিছনের নৈপথ্যের অভিভাবক। যার প্রমাণও মিলে বিআরটিএ অফিসের সামনে গড়ে উঠা চা- দোকানে কয়েকজন দালালদের সাথে একান্ত চা চক্রে বসে গোশগল্প করতে। নিজের পরিচয় গোপন করে নিজেকে ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রত্যার্শী পরিচয় দিয়ে কথা হয় দালাল চক্রের কয়েক জনের সঙ্গে। তিনি বলেন, কোন কিছুই লাগবেনা; আপনি গাড়ি অথবা মোটরসাইকেলের সিটে বসলেই পাস। লিখিত পরীক্ষায় কিভাবে পাস করব? এতগুলো ট্রাফিক চিহ্নি কিভাবে মনে রাখব? এমন প্রশ্ন তোলার সঙ্গে সঙ্গে তিনি বলেন, শুধু নামটা লিখবেন আর যেখানে স্যারেরা বসে সেখানে গিয়ে আপনার নাম্বারটা বলবেই সমস্যার সমাধান হবে। আর কোন কিছু লাগবে না, তাতেই আপনি পরীক্ষায় পাশ। টাকা দিবেন তো ; টাকা দিলে এতো কিছুর দরকার নেই। ১০০% গ্যারান্টি এবং নিশ্চিন্তে শুধু পরীক্ষা দিবেন। বাকিটা আমরা দেখে নিব। পাশ ফেল আমাদের বিষয়! আপনার বিষয় না।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একাধিক সূত্রে জানা গেছে,
২০২৫ সালের ২৭ মে বিআরটিএ উত্তরা কার্যালয়ে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সহযোগীতায় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হয়। এসময় ৬ জন দালালকে আটকের পর তাদেরকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড প্রদান করে দায়িত্বপ্রাপ্ত ম্যাজিস্ট্রেট। সূত্র বলছে, ইতিপূর্বে বিআরটিএ এর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ আনিসুজ্জামান এ অভিযানে নেতৃত্ব দেন। ইতিপূর্বে আটককৃতরা হলেন, মোঃ ফরহাদ আলী (৩২), পিতা. আবু তালেব, মোঃ হাসানুজ্জামান খান (৩৫) পিতা মোঃ মান্নান খান , মোঃ লিটন (৩৫) পিতা হাজী আ. মালেক, মোঃ তুহিন (৩২) পিতা.-কোরবান আলী, মোঃ জুয়েল (৩৬), পিতা-আনোয়ার হোসেন ও সোহেল রানা (৩১), পিতা-আলী আহম্মেদ। আটককৃত ব্যক্তিরা প্রত্যেকেই আদালতের নিকট তাদের দোষ স্বীকার করেন বিধায়: তাদের প্রত্যেককে তিন মাসের দণ্ডাদেশ প্রদান করে জেল হাজতে প্রেরণ করার আদেশ দেন দায়িত্বপ্রাপ্ত ম্যাজিস্ট্রেট।
বিআরটিএ উত্তরা অফিস ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সূত্র গুলো জানান, ২০২৫ সালের ৫ মার্চ বেলা ১১টার দিকে একই অফিসে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে ২ জন দালালকে আটকের পর তাদের প্রত্যেককে এক মাস করে কারাদণ্ড দিয়েছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। বিআরটিএ’র ভ্রাম্যমাণ আদালত-৩ ও ৪ এর পৃথক অভিযান চালায়। এসময় মো. মুরাদ মোল্লা (২২) এবং মুহাম্মদ তরিকুল ইসলাম (৩৫) নামে দুইজনকে এক মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়। বিআরটিএ’র ভ্রাম্যমাণ আদালত-৬ এর তৎকালীন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. সাজিদ আনোয়ার তৎকালীন তাৎক্ষণিক তার প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে গণমাধ্যমকে বলেন, দালাল বিরোধী অভিযান আগের চেয়ে আরও জোরদার করা হয়েছে।
অপর একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র বলছে, ২০২৪ সালের ১০ জুলাই বিআরটিএ উত্তরা অফিসে ভ্রাম্যমাণ আদালত ঝটিকা অভিযান চালিয়ে সংঘবদ্ধ দালাল চক্রের ৪ জন সক্রিয় সদস্যকে আটক করে। এ সময় অবৈধ দালালিতে জড়িত থাকার দায়ে দালাল চক্রের ৪ জনকে আটক করে বিভিন্ন দণ্ডাদেশ প্রদান জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়। ঘটনা দিন বুধবার সকাল ১০ টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত বিআরটিএ ভ্রাম্যমাণ আদালত ৩-এর এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মো. আনিসুজ্জামান এ সাঁড়াশি অভিযানে নেতৃত্বে দেন। আটককৃত ব্যক্তিরা প্রত্যেকেই আদালতে তাদের দোষ স্বীকার করেন এবং তাদেরকে এক মাসের বিনাশ্রম কারা দণ্ডাদেশ প্রদান করে বিআরটিএ ভ্রাম্যমাণ আদালত। ওই সময় আটক হওয়া ৪ দালাল হলেন, জনি চৌধুরী (৩০), পিতা আব্দুল মানান, মো. সালেহ আকরাম (৪২), পিতা মৃত সোবহান, আবু বক্র (১৯), পিতা আব্দুর রশিদ, মো. রিয়াজ হোসেন (২৪)। পিতা নজির উল্ল্যাহ।
এ সময় দায়িত্বরত এক্সিকিউটি ম্যাজিস্ট্রেট আনিসুজ্জামান সাংবাদিকদের বলেছিলেন, দালাল ও প্রতারক চক্রের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে- বিআরটিএ উত্তরা অফিসে আগত গ্রাহকদের কাছ থেকে দূরত্ব কাজ করিয়ে দেওয়ার নাম করে কাগজপত্র ও নগদ টাকা পয়সা নিয়ে পালিয়ে যায়। তাদের বিরুদ্ধে অভিযান চলমান আছে এবং সেটি ভবিষ্যতেও থাকবে। গ্রাহক ও সেবা প্রত্যাশিদের উদ্দেশে তিনি তখন জানান, বিআরটিএ আগত গ্রাহকগণ সরাসরি বিআরটিএ’র কর্মকর্তা কর্মচারীর কাছে আসলে দ্রুত সেবা পাবেন।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সূত্র বলছে, ২০২৪ সালের ২২ এপ্রিল বিআরটিএ উত্তরা অফিসের দালালদের গডফাদার ও প্রতারক চক্রের মূল হোতা মো. আতাউর রহমান ওরফে (আতা)কে আটক করে। ওই সময় (তৎকালীন) তাকে বিআরটিএ’র ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ সাজিদ আনোয়ার দুই মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়ে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ প্রদান করেন।
বিআরটিএ অফিস সংলগ্ন পূর্ব পাশে “মা বাবার দোয়া” কম্পিউটার এর দোকানের কর্মচারী ফয়সাল এ প্রতিবেদককে জানান, বিআরটিএ অফিসে আগে যে সব দালাল চক্রের সদস্যরা ছিল, তারা বর্তমানে নেই। এখন ওই সব দালাল ও প্রতারকরা গা ডাকা দিয়েছে। বর্তমানে দালালদের উৎপাত ও অনেকাংশে কমে গেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র ও সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বিআরটিএ উত্তরা অফিসের পূর্ব, পশ্চিম পাশে ও সামনে ব্যাঙ্গের ছাতার মতো গড়ে উঠেছে বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। তার মধ্যে রয়েছে – বা বাবার দোয়া ফটোকপি অ্যান্ড কম্পিউটার এর দোকান,খাজা এন্টারপ্রাইজ ফটোকপি, লেমিনেটিং ও স্টেশনারি দোকান, হাবিবা কম্পিউটার অ্যান্ড স্টেশনারি, তামিম এন্টারপ্রাইজ, ফটোকপি, লেমিনেটিং ও বিকাশ এর দোকান, ব্রাদার্স টেলিকম, রহমান বিজনেস সেন্টার, তাসিন এন্টার প্রাইজ, (রেন্ট এ কার) তাকওয়া ইলেকট্রিক ও বিকাশ এর দোকান, এম, বি ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল ও ইউনিয়ন ইন্স্যুরেন্স কোম্পানী উত্তরা শাখা প্রমুখ। এসব দোকানে গাড়ির মালিকানা বদলি,গাড়ি ক্রয়- বিক্রয় সংক্রান্ত যাবতীয় বদলির কাগজ, গাড়ির মালিকানা, বিএসপি ও ফিটনেস, অনলাইনে আবেদন, ফটোকপি, লেমিনেটিং, কম্পিউটার কম্পোজ ও বিকাশ করা হয়। এছাড়া পাশে মসজিদ মার্কেট ও স্হানীয় কালা মিয়া মার্কেটে কম্পিউটার, ফটোকপি ও বিকাশের একাধিক দোকানপাট রয়েছে।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও বিআরটিএ সূত্র বলছে, দালাল চক্রের মূলহোতা মো. আতাউর রহমান ওরফে আতা’র নেতৃত্বে ১০ থেকে ১২ জন বহিরাগত দালাল বিআরটিএ অফিসে আগত গ্রাহকদের কাছ থেকে দ্রুত কাজ করিয়ে দেওয়ার নাম করে জরুরি কাগজপত্র, নগদ টাকা পয়সা নিয়ে কৌশলে পালিয়ে যায়। আতার বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে বলে জানা গেছে।
এবিষয়ে বিআরটিএ উত্তরা ঢাকা মেট্রো-৩ সার্কেলের উপ-পরিচালক (ইঞ্জিনিয়ার) কাজী মো. মোরছালীন ইতিপূর্বে সাংবাদিকদের বলেন, আমরা নিয়মিত দালাল চক্রগুলোর বিরুদ্ধে অভিযান চালাচিছ।
কারও বিরুদ্ধে তথ্য প্রমানসহ লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত পূর্বক আমরা ওই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিবো।
বিআরটিএর পরিচালক (প্রশাসন) আজিজুল ইসলাম গনমাধ্যমকে বলেন, সংশ্লিষ্ট কোন কর্মকর্তা এই চক্রের সঙ্গে জড়িত থাকলে আমরা ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিব। দালালদের বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান সবসময় ছিল, এখনও আছে এবং ভবিষ্যতে ও চলমান থাকবে।
এবিষয়ে ভুক্তভোগীরা প্রতিকার চেয়ে বর্তমান সরকারের প্রধান উপদেষ্টা, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা, আইন উপদেষ্টা, পুলিশ প্রধান (আইজিপি), ডিএমপির পুলিশ কমিশনার, এলিট ফোর্স র্যাব ডিজি, বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ) চেয়ারম্যান ও দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) চেয়ারম্যান, উত্তরা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি)সহ সরকারের সংশ্লিষ্ঠ বিভাগের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন তুরাগ বাসী।