• ১৩ই আগস্ট, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ , ২৯শে শ্রাবণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ভাঙছে জমি-বসতভিটা, হুমকির মুখে শতাধিক পরিবার ও অবকাঠামো

পদ্মায় অস্বাভাবিক পানি বৃদ্ধি

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
প্রকাশিত আগস্ট ১২, ২০২৫, ১৫:১৮ অপরাহ্ণ
ভাঙছে জমি-বসতভিটা, হুমকির মুখে শতাধিক পরিবার ও অবকাঠামো
সংবাদটি শেয়ার করুন....

রাজশাহীর চারঘাট উপজেলায় পদ্মা ও বড়াল নদীর পানি অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি পাওয়ায় নদীপাড়ের এলাকাগুলোতে তীব্র ভাঙন দেখা দিয়েছে। এতে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন নদীতীরবর্তী গ্রামবাসী। নদীর খরস্রোত এবং টানা বর্ষণের ফলে ইতোমধ্যে শতাধিক কৃষক তাদের জমি হারিয়েছেন, বসতবাড়ি, স্কুল, মসজিদ ও গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোও হুমকির মুখে রয়েছে।

রাজশাহী আবহাওয়া অফিস জানায়, গত সাতদিনে জেলায় গড় বৃষ্টিপাত হয়েছে প্রায় ১৩৬.৩ মিলিমিটার, যা মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টিপাত হিসেবে বিবেচিত। উজানের পানি ও টানা বৃষ্টির কারণে চারঘাট উপজেলার চন্দনশহর, পিরোজপুর ও গোপালপুর এলাকার নদীতীরের অন্তত ২০০ বিঘা কৃষিজমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এতে নিঃস্ব হয়েছেন শতাধিক কৃষক পরিবার।

সোমবার (১১ আগস্ট) সকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, চারঘাট পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের গোপালপুর ও চন্দনশহর এলাকায় প্রায় এক কিলোমিটার দীর্ঘ নদীতীর ধসে গেছে। ভাঙনের মাত্রা এতটাই বেশি যে, মাত্র তিন দিনে নদীতে ১০ ফুট পর্যন্ত জমি বিলীন হয়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দা হাসিবুর রহমান বলেন, পানি বাড়তে থাকলে কয়েক দিনের মধ্যে আমাদের ঘরবাড়িও নদীগর্ভে চলে যাবে।

পিরোজপুর এলাকায় স্থানীয়রা টিন, বাঁশ ও গাছ ব্যবহার করে স্বউদ্যোগে ভাঙন ঠেকানোর চেষ্টা করছেন। চন্দনশহরের রোকেনা ও চম্পা বেগম জানান, পানি উন্নয়ন বোর্ড তিনবার এলাকা পরিদর্শন করলেও এখন পর্যন্ত কোনো প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।

গোপালপুরের বাসিন্দা মোসাররফ হোসেন বলেন, টানা বর্ষণ, নদীর পানির প্রবাহ বৃদ্ধি ও বাতাসের কারণে গ্রামটি এখন চরম ঝুঁকিতে রয়েছে। দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে বড় ধরনের বিপর্যয় ঘটতে পারে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, নদীভাঙনে শুধু জমি নয়, প্রাথমিক বিদ্যালয়, মসজিদ, গ্রামীণ রাস্তা এবং প্রায় ৩০০ পরিবারের বসতভিটাও হুমকির মুখে রয়েছে। অনেক পরিবার ইতোমধ্যে অন্যত্র সরে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে।

বিষয়টি নিয়ে কথা হলে পানি উন্নয়ন বোর্ড রাজশাহী উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী পার্থ সরকার বলেন, চারঘাট উপজেলার দুটি নদীর পানি বাড়ছে ঠিকই, তবে এখনও তা বিপদসীমার নিচে রয়েছে। স্রোতের কারণে কোথাও কোথাও ভাঙনের খবর পেয়েছি। দ্রুত ভাঙনকবলিত এলাকা পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।