• ২৭শে অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ , ১১ই কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ভোলার মেঘনায় ধরা পড়লো ২১ কেজি ওজনের নিষিদ্ধ বাঘাইর মাছ

ভোলা প্রতিনিধি
প্রকাশিত অক্টোবর ২৬, ২০২৫, ১৮:৪৯ অপরাহ্ণ
ভোলার মেঘনায় ধরা পড়লো ২১ কেজি ওজনের নিষিদ্ধ বাঘাইর মাছ
সংবাদটি শেয়ার করুন....

মা ইলিশ সংরক্ষণের জন্য ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে ভোলার মেঘনা নদীতে প্রায় ২১ কেজি ওজনের একটি বাঘাইর মাছ ধরা পড়েছে। রাজাপুরের জেলে মো. জাহাঙ্গীর মাঝির(৪৫) জালে বিশাল এই বাঘাইড় মাছ ধরা পড়ে।রবিবার (২৬ অক্টোবর) সকালে ভোলার ইলিশা মাছঘাটে মাছটি আনা হলে ২১ হাজার ৫০০টাকা দামে কিনে নেন মো.ইমন নামে এক ব্যবসায়ী।

স্থানীয়রা জানান, রবিবার জেলে জাহাঙ্গীর মাঝি তার দুই ছেলেকে সাথে নিয়ে মেঘনায় মাছ ধরতে যান। নদীতে জাল ফেলার পর তাদের জালে ২০ কেজি ৯০০ গ্রাম ওজনের মাছটি ধরা পড়ে। পরে মাছটি স্থানীয় ইলিশা মাছঘাটে বিক্রির জন্য আনলে সেখানকার আড়তদার মো.ইমন সর্বোচ্চ দাম ২১ হাজার ৫০০ টাকায় মাছটি কিনে নেন।

মাছটির ক্রেতাআড়তদার মো.ইমন বলেন,এতো বড় বাঘাইর মাছ আমাদের ঘাটে দেখিনি। মাছটি জেলেরা আড়তে আনার পর সর্বোচ্চ ২১ হাজার ৫০০ টাকায় আমি কিনেছি। মাওয়া ঘাটে পাঠাবো,২৯ থেকে ৩০ হাজার বিক্রির আশা ক্রেতার। আড়তদার সমিতির নেতা শাহাব উদ্দিন ফরাজি বলেন, গত ২২দিন(৪-২৫অক্টোবর) মা-ইলিশ ধরা নিষেধ থাকায় জেলেরা নদীতে নামেনি। ২২দিন পর নদীতে নেমে জেলেরা আশানুরুপ ইলিশ না পেলেও অন্য প্রজাতীর মাছ পাচ্ছে। এরমধ্যে পাঙাশ মাছ আছে। এসব মাছের ওজন ৮-১০কেজি। যা ঘাটেই এক হাজার ৯০০টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।

ভোলার উপকূলীয় বন বিভাগের বন কর্মকর্তা আরিফুল হক ও জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. ইকবাল হোসেন গনমাধ্যমে জানান, বাঘাইড় মাছ ধরা ও বিক্রি সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। বাংলাদেশ বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন, ২০১২ অনুযায়ী এই প্রজাতি সংরক্ষিত তালিকাভুক্ত। আইন অনুসারে, বাঘাইড় মাছ ধরা, বিক্রি, পরিবহন বা সংরক্ষণ করলে সর্বোচ্চ ২ বছর কারাদণ্ড বা ২ লাখ টাকা পর্যন্ত জরিমানা হতে পারে।
এদিকে বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের তথ্য অনুযায়ী, গত তিন দশকে বাঘাইড় মাছের সংখ্যা প্রায় ৮০ শতাংশ কমে গেছে। বর্তমানে এই প্রজাতি রক্ষায় সরকার কৃত্রিম প্রজনন ও নদী সংরক্ষণ প্রকল্প হাতে নিয়েছে।
বাঘাইড় (Bagarius yarrelli) একটি মহাবিপন্ন প্রজাতির মিঠাপানির মাছ। আগে দেশের বড় নদীগুলোতে প্রচুর দেখা মিললেও এখন বিলুপ্তির মুখে। অতিরিক্ত শিকার, নদী দূষণ ও প্রজননস্থল ধ্বংসের কারণে এদের সংখ্যা দ্রুত হ্রাস পাচ্ছে।
বাঘাইড় মাছ নদীর পরিবেশতন্ত্রের ভারসাম্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তাই এই মাছ সংরক্ষণ শুধু একটি প্রজাতি রক্ষা নয়, বরং নদীজীবনের সুস্থতা বজায় রাখার অংশ।