মাইলস্টোন ট্রাজেডির সুষ্ঠু তদন্তের দাবিতে স্কুল সংলগ্ন মেট্রো স্টেশন ডিপোর সামনে নিহত শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছেন। পাশাপাশি তারা সরকার ও সংশ্লিষ্টদের কাছে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দাবিও জানিয়েছেন।
মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) সকাল ৭টা থেকে বিমান দুর্ঘটনায় নিহতদের পরিবার ও স্বজনরা স্কুলের সামনে আট দফা দাবি নিয়ে মানববন্ধন করেন।
নিজেদের সন্তান হারানোর বিচারের দাবিতে স্কুল গেটের সামনে একত্রিত হয়ে স্লোগান দেন ২১ জুলাই মর্মান্তিক বিমান দুর্ঘটনার শিকার পরিবারের সদস্যরা। কেউ কেউ সেই দুঃসহ স্মৃতি মনে করে আবেগপ্রবণ হন।
ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার নিশ্চিত করা, সারা দেশে মাইলস্টোন স্কুলসহ সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কোচিং বাণিজ্য বন্ধ করা এবং রানওয়ে থেকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্থানান্তরসহ নানা দাবি তারা উত্থাপন করেন।
পরিবারের পক্ষ থেকে নিহত ফাতেমার মামা লিয়ন মীর ৮ দফা দাবি তুলে ধরেন। দাবিগুলো হলো— দুর্ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচারের নিশ্চয়তা, সারা দেশে মাইলস্টোনসহ সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কোচিং ব্যবসা বন্ধ করা, সরকারের পক্ষ থেকে প্রতিটি নিহত শিক্ষার্থীর জন্য ৫ কোটি টাকা এবং প্রতিটি আহত শিক্ষার্থীর জন্য ১ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ প্রদান। এছাড়া স্কুল কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকেও প্রতিটি নিহতের পরিবারকে ২ কোটি টাকা এবং আহতদের ১ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দাবি করেন তারা।
তাদের আরও দাবি, রানওয়ে থেকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের স্থানান্তর অথবা রানওয়ের অবস্থান পরিবর্তন করা হোক, কোচিং ব্যবসার মূল হোতা হিসেবে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষিকা খাদিজাকে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে অপসারণ করা ও সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে বিচারের ব্যবস্থা করা হোক, স্কুলের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ পরিবারের কাছে প্রদর্শন করা হোক এবং বিমান বাহিনীর প্রশিক্ষণ ব্যবস্থা জনহীন এলাকায় সরিয়ে নেওয়া হোক।
অভিভাবকরা দাবি করেন, দ্রুত তদন্ত শেষ করে দায়ীদের বিচারের আওতায় আনা জরুরি। একইসঙ্গে স্কুল শেষে বাধ্যতামূলক কোচিং করানোর অভিযোগ তুলে দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। দ্রুত দাবিগুলো বাস্তবায়ন না হলে বৃহৎ আন্দোলনের হুঁশিয়ারিও দেন তারা।
অন্যদিকে, কোচিং ব্যবসার বিষয়ে স্কুল কর্তৃপক্ষ নিজেদের অবস্থান পরিষ্কার করেছেন। প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল নুরুন নবী বলেন, শিক্ষা অধিদপ্তরের নিয়ম অনুযায়ী বাড়তি ক্লাস পরিচালনা করা হয়। শিক্ষার্থীদের জন্য নানা ধরনের কাউন্সিলিং, শোকসভাসহ বিভিন্ন কার্যক্রম চলছে।
গত ২১ জুলাই দুপুরে উত্তরার দিয়াবাড়িতে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ক্যাম্পাসের হায়দার আলী ভবনে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর এফ-৭ বিজিআই মডেলের একটি যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হয়। এ ঘটনায় বিমানপাইলট ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মো. তৌকির ইসলামসহ ৩৪ জন নিহত হন, যাদের মধ্যে ২৭ জন ছিলেন প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থী। দগ্ধ অবস্থায় অনেকে এখনও রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।