
বাংলাদেশে রাজস্ব সংগ্রহ ব্যবস্থার কার্যকারিতা বাড়াতে বড় পরিসরে সংস্কার প্রকল্পে অর্থায়ন করতে যাচ্ছে বিশ্বব্যাংক। নতুন এই প্রকল্পে প্রায় ১ হাজার ৯ কোটি ২০ লাখ টাকার বাজেট নির্ধারিত হয়েছে, যার মধ্যে বিশ্বব্যাংক এক হাজার কোটি টাকা ঋণ হিসেবে দিচ্ছে।
প্রকল্পটির নাম ‘অভ্যন্তরীণ রাজস্ব সংগ্রহের সক্ষমতা বৃদ্ধি’, যা ২০২৫ সাল থেকে ২০৩০ সালের জুনের মধ্যে বাস্তবায়নের লক্ষ্য নিয়ে এগোচ্ছে অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের আওতায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (NBR)।
সরকার এই প্রকল্প বাস্তবায়নের পূর্বে রাজস্ব আদায়ে তিনটি প্রধান চ্যালেঞ্জ চিহ্নিত করেছে:
বাণিজ্য-নির্ভর কর কাঠামো: রাজস্বের বড় অংশ এখনো আমদানি-নির্ভর কর থেকে আসে, যা ঝুঁকিপূর্ণ ও টেকসই নয়।
অসম্পূর্ণ ভ্যাট ব্যবস্থা: ভ্যাট আইনে বিভিন্ন ছাড় ও সংক্ষিপ্ত হার থাকায় এটি রাজস্ব বাড়াতে সহায়ক নয় এবং দারিদ্র্যবান্ধবও নয়।
আয়করে ছাড় ও অবকাশ: আয়কর কাঠামোতে অনেক ছাড়, কর্তন এবং অবকাশ থাকায় এর মাধ্যমে রাজস্ব আহরণ কম হচ্ছে।
এই সমস্যাগুলোর সমাধানে একগুচ্ছ ডিজিটাল ও প্রশাসনিক সংস্কার হাতে নিয়েছে সরকার।
এনবিআরের প্রশাসনিক কাঠামোর ডিজিটাল রূপান্তর, প্রশিক্ষণ, ও নীতি বিশ্লেষণ ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য একটি মাস্টার প্ল্যান তৈরি।
ভ্যাট প্রশাসনের উন্নয়নে SAP কম্পিটেন্সি সেন্টার, ইন্টিগ্রেটেড ভ্যাট অ্যাডমিনিস্ট্রেশন সিস্টেম (IVAS) ও ERP এর সমন্বয়।
ই-আনভয়েসিং ব্যবস্থা গড়ে তোলা এবং জাতীয় পর্যায়ে বাস্তবায়ন।
আয়কর বিভাগের জন্য স্বয়ংক্রিয় কল সেন্টার, ই-লার্নিং প্ল্যাটফর্ম এবং একটি পূর্ণাঙ্গ আয়কর প্রশিক্ষণ একাডেমির পরিকল্পনা।
আধুনিক আইটি অবকাঠামো গড়ে তোলা ও বিদ্যমান সিস্টেমের (ASYCODA, IVAS, iBAS++) মধ্যে সমন্বয়।
ইউনিক ট্যাক্স আইডেন্টিফিকেশন নম্বর চালু করা, যা আয়কর ও ভ্যাট উভয়ের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য হবে।
বিশ্বব্যাংক ঢাকার পাবলিক রিলেশন প্রধান মেহেরিন মাহবুব জানান, সরকারি খাতে স্বচ্ছতা ও দক্ষতা বৃদ্ধির অংশ হিসেবে ২৫ কোটি ডলারের একটি ঋণ অনুমোদন করেছে বোর্ড। এই ঋণের আওতায় এনবিআরসহ আরও কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ খাত উন্নয়নের আওতায় আসছে।
পরিকল্পনা কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, দেশের কর-জিডিপি অনুপাত দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে কম—২০২৩-২৪ অর্থবছরে তা ৭.৪ শতাংশে নেমে এসেছে, যা ২০১২ সালে ছিল ৯.১ শতাংশ। এমন নিম্নমানের কর সংগ্রহ কাঠামোর পরিবর্তন না ঘটলে, উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন কঠিন হবে।
পরিকল্পনা কমিশনের আর্থ-সামাজিক অবকাঠামো বিভাগের সদস্য ড. কাইয়ুম আরা বেগম বলেন, এই প্রকল্প এনবিআরের দক্ষতা বাড়িয়ে রাজস্ব আহরণে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে।
সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতি: এম.জি.আর.নাছির মজুমদার, সম্পাদক : এস এম রফিকুল ইসলাম, যোগাযোগ ঠিকানা: সেঞ্চুরি সেন্টার: খ-২২৫, প্রগতি সরণি, মেরুল,বাড্ডা, ঢাকা-১২১২।, ফোন নং : +৮৮-০২-৫৫০৫৫০৪৭ | মোবাইল নং: ০১৭১৬৩৭১২৮৬
www: dailybhor.com
© ২০২৫ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত | দৈনিক ভোর