২০০৫ সালের ‘ক্লোজআপ ওয়ান: তোমাকেই খুঁজছে বাংলাদেশ’ প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে বাউল, মরমি ও সুফি ধারার গানের শিল্পী হিসেবে পরিচিতি পান রিংকু। অল্প সময়ের মধ্যেই শ্রোতাদের মনে জায়গা করে নিলেও বর্তমানে ভালো নেই তিনি। দীর্ঘদিন ধরেই অসুস্থতায় ভুগছেন এই গায়ক।
লোকগানের শিল্পী রিংকুর জীবন এখন কেটে যাচ্ছে গ্রামের বাড়িতেই।
অনেক বছর ধরেই তিনি গ্রামেই অবস্থান করছেন। ২০১৬ সালে হঠাৎ তার বাবা মারা যান। সে সময় তিনি ছিলেন অস্ট্রেলিয়ার মঞ্চে। বাবার মৃত্যুর খবর শোনার পর শোকে স্ট্রোক করেন রিংকু। এরপর গানের জগত থেকে অনেকটাই দূরে সরে যান তিনি। তবে ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠতে থাকেন এবং টুকটাক গান শুরু করেন।
তবে আর আগের মতো নিয়মিত গান গাওয়া হচ্ছে না।
গত শনিবার নওগাঁ শহরের মুক্তির মোড়ে আয়োজিত মিউজিক ফ্যাস্টিভ্যাল ও বিজয় উৎসবে দেখা মেলে রিংকুর। অসুস্থ শরীর নিয়েই মঞ্চে গান পরিবেশন করেন তিনি। তার গান শুনে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন ভক্তরা। সেই মুহূর্তের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়।
ভিডিওর ক্যাপশনে লেখা ছিল— ‘চেষ্টা, কষ্ট, আবেগ, উৎসাহ, অনুপ্রেরণা, অনুরোধ ও ভালোবাসার আরেক নাম মশিউর রহমান রিংকু। সে খুব অসুস্থ। তারপরও রিংকুর প্রতি দর্শক-শ্রোতাদের ভালোবাসা প্রমাণ হলো।’ ভক্তদের অনেকেই মন্তব্য করেছেন— ‘আমরা তার জন্য দোয়া করি, সুস্থতা কামনা করি।’
গত বছর ঢাকায় এসেছিলেন বুকভরা অভিমান নিয়ে। তখন তিনি গণমাধ্যমে বলেছিলেন, ‘এখন আমার খবর আর কে নেবে? আমি আর কোনো কাজেও লাগি না। কেউ আমার খবর নেয় না। ইন্ডাস্ট্রির মানুষগুলো স্বার্থপর। আমি অসুস্থ হওয়ার পরও কারও কাছ থেকে তেমন সহায়তা পাইনি। এমনকি ক্লোজআপ ওয়ানের বন্ধুরাও খবর নেয় না।’
রিংকু জানিয়েছেন, তিনি রোগের সঙ্গে প্রতিদিন যুদ্ধ করছেন। এখন পর্যন্ত চারবার স্ট্রোক করেছেন। সে কারণে কথায় জড়তা রয়েছে। তার এক পা প্যারালাইজড হয়ে গেছে, হাঁটেন খুঁড়িয়ে। হয়তো ভালো চিকিৎসা পেলে আবার সুস্থ হয়ে গান করতে পারবেন।
তবে এরপর কেটে গেছে অনেক সময়। তাকে খোঁজ নিতে দেখা যায়নি কাউকে। আলোচনার বাইরে থেকে নিরবে নিভৃতে রোগের সঙ্গে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন একসময়কার জনপ্রিয় এই সংগীতশিল্পী।