অন্তর্বর্তী সরকারের গত এক বছরের সংস্কার ও নীতিগত উদ্যোগ দেশের অর্থনীতিকে বড় ধরনের ধস থেকে রক্ষা করেছে বলে মনে করছে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)। সংস্থাটি বলছে, ব্যাংক খাত সংস্কার, রেমিট্যান্স ও রপ্তানি বৃদ্ধির মতো পদক্ষেপ সামষ্টিক অর্থনীতিকে স্থিতিশীল করেছে। তবে উচ্চ মূল্যস্ফীতি, বিনিয়োগে স্থবিরতা ও কর্মসংস্থানের ঘাটতি মোকাবেলায় ধারাবাহিক ও কার্যকর পদক্ষেপ এখনও জরুরি।
রবিবার (১০ আগস্ট) সকালে রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে আয়োজিত ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ৩৬৫ দিন’ শীর্ষক সিপিডি ডায়ালগে এ কথা বলেন প্রতিষ্ঠানের নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন।
অন্তর্বর্তী সরকারের নেওয়া পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, গত এক বছরে সরকার বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছে, যার মধ্যে ব্যাংক খাত সংস্কার অন্যতম। এর ফলে রেমিট্যান্স ও রপ্তানি বৃদ্ধি পেয়েছে, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ স্থিতিশীল হয়েছে এবং পতন ঠেকানো গেছে। ফলে বড় ধরনের অর্থনৈতিক বিপর্যয় থেকে দেশ রক্ষা পেয়েছে, যা সরকারের অন্যতম সাফল্য।
এ সময় তিনি সতর্ক করে বলেন, আমরা জানি, মূল্যস্ফীতি এখনও উচ্চপর্যায়ে রয়েছে, বিনিয়োগ আসছে না, কর্মসংস্থান তৈরি হচ্ছে না, রাজস্ব আহরণও বাড়ছে না।
সুতরাং আগামী ছয় মাস এবং নতুন সরকারের জন্য এগুলো বড় চ্যালেঞ্জ হবে। দারিদ্র্যপীড়িত মানুষের স্বস্তি দেওয়ার জন্য চলমান সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচি বজায় রাখার আহ্বান জানান ফাহমিদা খাতুন। বলেন, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে, কারণ আগামী মাসগুলোতেও এটি উচ্চমাত্রায় থাকতে পারে।
বিনিয়োগে স্থবিরতার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের সময়ে নতুন দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ আসার সম্ভাবনা নেই। তবে বিনিয়োগের ক্ষেত্রগুলো প্রস্তুত করা গেলে আগামী সরকার সহজেই বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করতে পারবে।
২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে উল্লেখ করে সিপিডি নির্বাহী পরিচালক বলেন, আগামী ৫-৬ মাসে নতুন করে সংস্কার কতখানি বাস্তবায়ন হবে, তা বলা মুশকিল। ইতোমধ্যে যে সংস্কারের পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, তা ধীরগতির। তবে সুযোগ আছে— যদি সরকার চায়। সবচেয়ে জরুরি হলো, সামষ্টিক অর্থনীতির স্থিতিশীলতা আনতে যে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, সেগুলো সুরক্ষা দিয়ে ধারাবাহিকভাবে চালিয়ে যাওয়া।
ডায়ালগে আরো উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী।