গত বছরের ১৪ আগস্টের পর থেকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এক ডলারও বিক্রি করা হয়নি বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে বিনিময়হার স্থিতিশীল রাখার কৌশলের অংশ হিসেবেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলে জানান তিনি।
রবিবার (১০ আগস্ট) সকালে রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ৩৬৫ দিন’ শীর্ষক সংলাপে গভর্নর আহসান এইচ মনসুর এ কথা বলেন। এ সংলাপ আয়োজন করে বেসরকারি গবেষণাপ্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর বলেন, ‘২.৫ বিলিয়ন ডলার বকেয়া জমেছিল। পরে আমরা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম যত দ্রুত সম্ভব পরিশোধ করে দেব। রেমিট্যান্স দারুণ সহায়তা করেছে। রপ্তানি ভালো ছিল।
প্রত্যেকটি ব্যাংকে বলা হয়েছিল, যারই অবলিগেশন হোক—সেটা এস আলম বা বেক্সিমকো যারই হোক—পেমেন্ট করে দিন। এখন প্রত্যেকটি বিদেশি ব্যাংক বাংলাদেশের জন্য আগের অবস্থায় ফিরে এসেছে। কেউ কেউ লাইন অব ক্রেডিট বাড়িয়েছেও।’
গত বছরের ১৪ আগস্টের পর থেকে এক ডলারও বিক্রি করা হয়নি জানিয়ে গভর্নর বলেন, ‘আমরা বুঝেছিলাম মূল্যস্ফীতি কমাতে হলে বিনিময়হার স্থিতিশীল রাখতে হবে।
একটা নীতি ছিল, এক ডলারও বিক্রি করব না। প্রথমে কিছু নৈতিক চাপ দিতে হয়েছে। দুবাইভিত্তিক অ্যাগ্রিগেটরদের বলা হয়েছে, যদি তারা আমাদের নির্ধারিত রেটে না আসে, তবে তাদের কাছ থেকে কোনো ডলার কেনা হবে না। আমাদের রেট ১২২ টাকা, এই রেটে বেচতে হবে। তারা চাইলে ডলার ধরে রাখতে পারে, এতে আমাদের কোনো অসুবিধা নেই, কারণ তারা পাঁচ থেকে সাত দিনের বেশি ধরে রাখতে পারবে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের স্থিতিশীলতা শুধু আর্থিক খাতে এসেছে, রাজনৈতিক ক্ষেত্রে এখনো আসেনি। নিরাপত্তা নিয়ে অনিশ্চয়তা রয়ে গেছে। এখন যদি কেউ বলে বিনিয়োগে ঝাঁপিয়ে পড়বে, সেটা ঠিক হবে না। সামনে নির্বাচন আসছে, নির্বাচিত সরকার এসে কী পরিবর্তন করবে, সেটাও বিনিয়োগকারীরা লক্ষ্য করবে।’
আহসান এইচ মনসুর বলেন, ‘বাজারে লিকুইডিটি আসছে। শেয়ারবাজার একাই ঘুরে দাঁড়াবে। আগামী এক বছরে আরো এক হাজার পয়েন্ট বাড়বে। ব্যালান্স অব উদ্বৃত্ত হয়েছে এ বছর।’
মূল্যস্ফীতি কিছুটা কমলেও আরো কমানো দরকার উল্লেখ করে গভর্নর বলেন, ‘প্রতি মাসে কমবে না। তবে এই অর্থবছরের শেষে মূল্যস্ফীতি ৫ শতাংশের নিচে নেমে আসার সম্ভাবনা রয়েছে।’
সরকারের রাজস্ব সংগ্রহ ও এনবিআরের সংস্কার দ্রুত বাস্তবায়ন জরুরি বলেও তিনি উল্লেখ করেন।