বাংলাদেশের সমাজব্যবস্থার জন্য মাদক একটি ভয়াবহ চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠেছে। তরুণ প্রজন্মের একটি বড় অংশ ক্রমেই মাদকের ফাঁদে আটকা পড়ছে। অথচ এই ভয়াবহ মাদকবিরোধী যুদ্ধে মূল দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থা— মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর (ডিএনসি)— গত ১৫ বছরেরও বেশি সময় ধরে কার্যত নিয়ন্ত্রণহীন অবস্থায় রয়েছে। বরং এই সময়ে প্রতিষ্ঠানটির প্রধান দায়িত্ব ও কর্তৃত্ব দখল করে রেখেছে একদল ফ্যাসিস্ট দোসর ও সিন্ডিকেট, যারা নিজেদের স্বার্থ রক্ষা ও রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তারের হাতিয়ার হিসেবে সংস্থাটিকে ব্যবহার করছে।
দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের মধ্যে প্রকৃত নেতৃত্বের অভাব ও স্বাধীনভাবে সিদ্ধান্ত নেয়ার সুযোগ নেই। সিন্ডিকেটের প্রভাবে সঠিক সিদ্ধান্ত প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
গুরুত্বপূর্ণ পদে অযোগ্য কিন্তু ক্ষমতাসীন গোষ্ঠীর ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিদের বসানো হয়েছে। ফলে পেশাদার ও যোগ্য অফিসাররা উপেক্ষিত হচ্ছেন।
অভিযান, মামলা, এমনকি পুনর্বাসন কর্মসূচিও প্রভাবিত হচ্ছে। অভিযোগ রয়েছে, অভিযানের তথ্য ফাঁস হয়ে যাচ্ছে এবং বড় মাদক ব্যবসায়ীরা রক্ষা পাচ্ছে, কিন্তু ছোটখাটো ব্যবসায়ী বা সাধারণ আসক্তরা গ্রেপ্তার হচ্ছে।
ইয়াবা, আইস, ফেনসিডিল, গাঁজা ও হেরোইনের বাজার গত এক দশকে ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে।
বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ, এমনকি স্কুলপড়ুয়া শিক্ষার্থীরাও মাদকের কবলে পড়ছে।
মাদক ব্যবসার সাথে চোরাচালান, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ও আন্তর্জাতিক অপরাধচক্রের যোগসূত্র পাওয়া যাচ্ছে।
মাদকের কারণে কর্মক্ষম জনশক্তি নষ্ট হচ্ছে, পরিবার ভাঙছে, স্বাস্থ্য ব্যয় বাড়ছে।
বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান (২০২২)-এর গবেষণায় দেখা গেছে, মাদকাসক্তির হার বিগত এক দশকে দ্বিগুণ হয়েছে। অপরদিকে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)-এর প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের অভ্যন্তরে অনিয়ম ও দুর্নীতি রোধ না করলে আইন প্রয়োগের যেকোনো প্রচেষ্টা ব্যর্থ হবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাধবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. শাহনেওয়াজ বলেছেন:
“মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের ভেতরে যদি প্রশাসনিক সংস্কার না আনা হয় এবং সিন্ডিকেট ভেঙে ফেলা না হয়, তবে আগামী ১০ বছরে বাংলাদেশ মাদকনির্ভর এক ‘সফট স্টেট’-এ পরিণত হওয়ার ঝুঁকিতে পড়বে।”
গত ১৫ বছর ধরে নিয়ন্ত্রণহীন অবস্থার কারণে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর তার মূল লক্ষ্য থেকে সরে গেছে। বর্তমানে এই প্রতিষ্ঠানের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে অনেকেই ফ্যাসিস্ট দোসর ও সিন্ডিকেট-নিয়ন্ত্রিত। এর ফলে মাদক এখন শুধু একটি সামাজিক সমস্যা নয়, বরং জাতীয় নিরাপত্তা, অর্থনীতি ও তরুণ প্রজন্মের ভবিষ্যতের জন্য এক মহা-বিপর্যয়ে রূপ নিয়েছে।
যদি দ্রুত সঠিক পদক্ষেপ গ্রহণ করা না হয়, তবে ভবিষ্যতে মাদক বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় অস্তিত্ব ও টিকে থাকার জন্য ভয়ঙ্কর হুমকি হয়ে যাবে।
আপনি চাইলে আমি এটাকে আরও এসইও-অপটিমাইজড হেডলাইন আকারে সাজিয়ে দিতে পারি, যাতে নিউজ পোর্টালে দিলে সহজেই র্যাঙ্ক করে। চাই কি আমি সেটাও করে দিই?
সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতি: এম.জি.আর.নাছির মজুমদার, সম্পাদক : এস এম রফিকুল ইসলাম, যোগাযোগ ঠিকানা: সেঞ্চুরি সেন্টার: খ-২২৫, প্রগতি সরণি, মেরুল,বাড্ডা, ঢাকা-১২১২।, ফোন নং : +৮৮-০২-৫৫০৫৫০৪৭ | মোবাইল নং: ০১৭১৬৩৭১২৮৬
www: dailybhor.com
© ২০২৫ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত | দৈনিক ভোর