• ৮ই নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ , ২৩শে কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

‎২২ বছরের আয়ের হিসাব নেই রাকসুর ফান্ডে, অভিযোগ ভিপির

রাবি প্রতিনিধি
প্রকাশিত নভেম্বর ৫, ২০২৫, ১৬:১৭ অপরাহ্ণ
‎২২ বছরের আয়ের হিসাব নেই রাকসুর ফান্ডে, অভিযোগ ভিপির
সংবাদটি শেয়ার করুন....

‎রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (রাকসু) নবনির্বাচিত প্রতিনিধিরা দায়িত্ব গ্রহণ করলেও বুঝে পাননি ফান্ডের পূর্ণাঙ্গ হিসাব। ২০১৩ সালের আগ থেকে ২২ বছরের ফান্ডের হদিস নেই প্রশাসনের কাছে।

‎বুধবার (৫ নভেম্বর) বেলা ১২টায় রাকসু ভবনের সামনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই অভিযোগ করেন ভিপি মোস্তাকুর রহমান জাহিদ।  ‎সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন রাকসুর এজিএস সালমান সাব্বির। তিনি বলেন, শপথ গ্রহণের পর গতকাল রাকসু প্রথম কার্যনির্বাহী সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কয়েকটি সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম হলো রাকসুর তহবিলকে ব্যবহার উপযোগী করা।

‎রাকসুর মেয়াদকাল এক বছর উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমরা দায়িত্ব পাওয়ার সাথে সাথে তড়িৎ গতিতে আমাদের ইশতেহারগুলো পূরণ করতে কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করি। কিন্তু এগুলো বাস্তবায়নের জন্য রাকসু তহবিলে ব্যবহার উপযোগী যে অর্থ প্রয়োজন, তা আমরা বুঝিয়ে পাইনি।’‎
‎প্রথম অধিবেশনে বিগত বছরগুলোর ব্যয়ের অডিটসহ রাকসু তহবিলের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে স্পষ্ট জানতে পারব, এমন আশা করেছিলেন জানিয়ে তিনি বলেন, ‘রাকসুর বর্তমান সভাপতি ও কোষাধ্যক্ষ আমাদের সে তথ্য দিতে পারেননি। আপনারা জানেন, দীর্ঘ ৩৬ বছর রাকসু অকার্যকর থাকলেও নিয়মিতভাবে রাকসুর কোষাধ্যক্ষ নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।’


‎এজিএস সালমান সাব্বির বলেন, ‘রাকসু ফান্ডের ২০১৩ সালের আগের টাকার হিসাব দিতে পারছে না প্রশাসন। ২০১৩ সালের আগে সভাপতি, কোষাধ্যক্ষ ছিলেন, তারা কে কোন খাতে খরচ করেছেন, কে কোন জায়গায় খরচ করেছেন— ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে জবাব চাওয়া হবে।’\

‎তিনি আরো বলেন, ‘টাকা যেহেতু ছাত্রদের, ওই টাকা তাদের কল্যাণেই ব্যবহার করতে হবে। কেউ যদি ভিন্ন কোনো খাতে ব্যবহার করে, সে সব সভাপতি ও কোষাধ্যক্ষকে পার্সোনাল জায়গা থেকে হলেও এ টাকা ফেরত দিতে হবে।’

‎জিএস সালাহউদ্দিন আম্মার বলেন, ‘২০১৩ সালের পর থেকে ব্যাংক স্টেটমেন্ট আছে এবং ২০২১ সাল থেকে অনলাইন হিসাব আছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে ১৯৯০ থেকে ২০১৩ পর্যন্ত প্রায় ২২ বছরের হিসাব নেই।’

‎মুজিব শতবর্ষ পালনে প্রশাসন ১২ লাখ টাকা রাকসু ফান্ড থেকে খরচ করেছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এর আগে ৩ মেয়াদে তারা টাকা নিয়েছে, যার কোনো ধরনের হদিস নেই। যেহেতু ফান্ডের জন্য তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে, খুব শিগগিরই সমস্যাগুলোর সমাধান হয়ে যাবে।

‎রাকসুর ভিপি মোস্তাকুর রহমান জাহিদ বলেন, ‘নির্বাচন হওয়ার পর থেকে আমরা এখনও পূর্ণভাবে কাজ শুরু করতে পারছি না—কারণ রাকসুর তহবিলের হিসাব আমাদের কাছে পরিষ্কারভাবে উপস্থাপন করা হয়নি। গতকাল আমরা রাকসু তহবিলের অডিট কমিটি পাস করাতে পেরেছি। কিন্তু এটি আরও আগেই করা উচিত ছিল।’

‎তিনি আরো বলেন, ‘নির্বাচন যে অনুষ্ঠিত হবে, তা সবারই জানা ছিল। তাই নির্বাচনের আগেই এসব প্রস্তুতি সম্পন্ন থাকলে নির্বাচিত প্রতিনিধিরা দায়িত্ব নিয়ে সঙ্গে সঙ্গে কার্যক্রম শুরু করতে পারতেন। কিন্তু শুধু তহবিলের হিসাব পেতেই যদি ছয় মাস লেগে যায়, তাহলে বছরে নির্ধারিত সব কার্যক্রম আমরা কীভাবে শেষ করব? এ নিয়েই এখন উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।

‎সভায় গৃহীত সিদ্ধান্তসমূহ হচ্ছে, রাকসুর তহবিলকে ব্যবহার উপযোগী করা, সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী সায়মার পরিবারের জন্য ক্ষতিপূরণ, জারাফার জন্য ফান্ড রেইজিং রাকসুর পক্ষ থেকে,  মেডিকেলের রোড ম্যাপ,  সমাজ স্বীকৃত পোশাক নিয়ে কটুক্তিকারীদের শাস্তির আওতায় আনা (আল মামুন বিষয়টি), প্রত্যেকটি হলে পানির ফিল্টার মেশিন স্থাপন, প্রত্যেকটি একাডেমিক বিল্ডিংয়ে স্যানিটাইজেশন ভেন্ডিং মেশিন স্থাপন, ছাত্রী হলের সামনে ফার্মেসি, সুপারশপ, মোবাইল ব্যাংকিং সুবিধা নিশ্চিত করন, মহিলা জিমনেসিয়াম চালুকরন, হল এরিয়া একাডেমী ভবন, স্যুভেনির শপে উচ্চগতি সম্পন্ন ইন্টারনেট ব্যবস্থা নিশ্চিতকরন, আন্ত: হল বিতর্ক আয়োজন, ক্লিন ক্যাম্পাস কর্মসূচি।