স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের নারায়ণগঞ্জ ভিত্তিক একটি প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক মোঃ রুহুল আমিনের বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়ম ও অনৈতিক কর্মকাণ্ডের অভিযোগসহ নানাবিধ অপতৎপরতার অভিযোগ উঠেছে। তিনি উপজেলা প্রকৌশলী থাকাকালীন বিভিন্ন প্রকল্পের স্কিম বাস্তবায়নে উপ-সহকারী প্রকৌশলীদের মাধ্যমে এমবি লিপিবদ্ধ করার সময় ঠিকাদারদের কাছ থেকে কমিশন নিয়ে এমবি নির্বাহী প্রকৌশলীর দপ্তরে প্রেরণ করিতেন যাহা তার কর্মকালীন উপজেলায় তদন্ত করলেই প্রকৃত তথ্য বেরিয়ে আসবে।পরবর্তী পর্যায়ে বরিশাল নির্বাহী প্রকৌশল অধিদপ্তরে সরকারি প্রকৌশলীর দায়িত্ব পালন করেছেন,তখন ঠিকাদারদের ওয়ার্ক অর্ডার দেয়ার জন্য প্রতিটি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে অফিস খরচের নাম করে ২% কমিশন নিতেন।এভাবে অনৈতিক পন্থায় অর্থবৃত্ত উপার্জন করেছেন।
পরবর্তী তে ঝালকাঠি জেলায় নির্বাহী প্রকৌশলী হিসাবে পাঁচ বছরের অধিক দায়িত্ব পালন করার সুবাদে, এ জেলার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স ইসলাম ব্রাদার্সের নেতৃত্বে একটি সিন্ডিকেট গড়ে তোলেন।যার নেপথ্যে সিন্ডিকেট প্রধান ছিলেন আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নীতি নির্ধারণী নেতা সাবেক মন্ত্রী আমির হোসেন আমু ।তার ছত্রছায়ায় থেকে ঝালকাঠি জেলার এলজিইডি অফিস একক নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নেন এবং তার পছন্দসই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স ইসলাম ব্রাদার সহ কয়েকটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে এককভাবে কাজ দেন। অত্র জেলায় তার কর্মকালীন সময়ে কাজের মান নিয়ে ব্যাপক অভিযোগ আছে, কারণ ঠিকাদারদের ওয়ার্ক অর্ডার দেয়ার সময় 2% কমিশন এবং বিল দেওয়ার সময় 2% কমিশন এবং এ ছাড়া কোন স্কিম রিভাইস করার জন্য আলাদা ৫% পার্সেন্ট কমিশন নিতেন।
এভাবে কাজের কোন আইটেম ফাঁকি দিলে তা হিসাব করে ,তার অর্ধেক টাকা নেওয়ার অভিযোগ আছে।আমির হোসেন আমুর সাথে তার পারিবারিক সম্পর্ক তৈরি হওয়ার কারণে তাকে ঝালকাঠি জেলায় সকলে আমর হোসেন আমুর পোষ্যপুত্র হিসেবে উল্লেখ করেন ।এ জেলায় পাঁচ বৎসরে দুই হাজার কোটি টাকার অধিক বিল প্রদানে ২% টাকা কমিশন নিলেও ৪০ কোটি টাকার বেশী পেয়েছেন। আওয়ামী সরকারের আমলে আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতা আমির হোসেন আমুর নাম ব্যবহার করে অবৈধ পন্থায় শত কোটি টাকার মালিক বনে গেছেন । এক পর্যায়ে এলজিইডির সবচেয়ে আলোচিত সমালোচিত মহারাজ-মিরাজ সিন্ডিকেটের সাথে সখ্যতা গড়ে তোলেন এর সুবাদে প্রধান কার্যালয়ে নারায়ণগঞ্জ ভিত্তিক একটি প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালকের দায়িত্ব পান।

মিরাজের সুনজরে থাকার কারণে আরও দুই একটি প্রকল্পের কাজ করতে থাকেন ,মূলত প্রধান কার্যালয় মহারাজ -মিরাজ সিন্ডিকেট তাকে সব ধরনের অনৈতিক সুবিধা দিতে থাকেন।পরবর্তীতে এলজিইডি র সবচেয়ে বড় প্রকল্পের দায়িত্ব নেয়ার বাসনা জাগে, এ প্রেক্ষিতে অর্থ লন্ডনকারী মিরাজের দ্বারস্থ হলে তিনি মোটা অংকের অর্থ দাবি করলে রুহুল আমিন কিছুটা কৌশল অবলম্বন করে আওয়ামী লীগের সাবেক চিফ হুইপ আ স ম ফিরোজের দারস্ত হলে সাবেক চিফ হুইপের পারিবারিক সুসম্পর্ক এবং দলীয় কর্মী হওয়ার কারণে এলজিইডির সর্ববৃহৎ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক নিয়োগের জন্য স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব ও স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলীকে ডিও লেটার দিয়ে তদবির করেন। এ প্রেক্ষিতে এলজিইডি র ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ মোঃ রুহুল আমিন কে প্রকল্প পরিচালক করার জন্য আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতা আ স ম ফিরোজ ও প্রভাবশালী আওয়ামী লীগ নেতা আমির হোসেন আমুকে এলজিইডি’র প্রকল্প পরিচালক করার আশ্বস্ত করেন ।
এই কারণে সদ্য বিদায় রুটিন দায়িত্বের প্রধান প্রকৌশলী গোপাল কৃষ্ণ দেবনাথের সহায়তায় এলজিইডি ভবনের একটি প্রভাবশালী সিন্ডিকেটের সাথে আর্থিক লেনদেন ও অনৈতিক হস্তক্ষেপে পূর্ব মোঃ রুহুল আমিনের নাম স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিবের দপ্তরে প্রেরণের কারণে ব্যাপক আলোড়ন ও প্রশ্নের উদ্যোগ সৃষ্টি হয়েছে।কারণ মোঃ রুহুল আমিন একটি প্রকল্পের দায়িত্ব পালন করা ছাড়াও দু ,একটি প্রকল্পের কাজ দেখা শুনা করছেন ।অথচ স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরে অনেক সিনিয়র যোগ্য,দক্ষ ও সৎ নির্বাহী প্রকৌশলী গন প্রকল্প পরিচালকের দায়িত্ব পাওয়ার যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও এ হেনো ন্যায্য প্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। আওয়ামী লীগ পন্থী মোঃ রুহুল আমিনকে প্রকল্প পরিচালক করার প্রস্তাব মন্ত্রণালয় প্রেরণের কারণে এলজিইডি ভবনে কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মধ্যে ব্যাপক কানাঘুষা থাকলেও সাবেক রুটিন দায়িত্ব পালনকারী প্রধান প্রকৌশলী গোপাল কৃষ্ণ দেবনাথ ও সিন্ডিকেট নেতার সাথে বিশাল অংকের আর্থিক লেনদেনের স্থানীয় সরকার বিভাগের আওয়ামীপন্থী কর্মকর্তাদের আর্থিক সুবিধা দিয়ে বরিশাল জেলা প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালকের পথটি বাগ বাগিয়ে নিতে সক্ষম হন। বিষয়টি উর্ধ্বতন মহলের হস্তক্ষেপের মাধ্যমে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ সহ উপযুক্ত প্রকৌশলীকে প্রস্তাব প্রণয়নের মাধ্যমে মন্ত্রণালয় থেকে অনুমোদন দেয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট বিজ্ঞজনরা মনে করেন ।
সংশ্লিষ্ট বিষয়ে প্রকল্প পরিচালক রুহুল আমিনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার জুনিয়র অনেকে পিডি হয়েছেন আমি কোন বড় প্রকল্প পাইনি ,এ প্রকল্পে সবচেয়ে সিরিয়ার নির্বাহী প্রকৌশলী শরীফ মোঃ জামাল উদ্দিনের ইচ্ছা পোষণ করেছে। এ বিষয়ে বলেন ,তিনি আমার সিনিয়র তারও প্রকল্প পাওয়া উচিত। অন্য বিষয়গুলোর জবাব কৌশলে এড়িয়ে যান।এ ছাড়া রুটিন দায়িত্ব পালনকারী প্রধান প্রকৌশলী গোপালকৃষ্ণ দেব নাথের সাথে মোবাইল ফোনে বারবার যোগাযোগ করা সত্ত্বেও তিনি ফোন রিসিভ করেনি এবং ফোনে খুদে বার্তা প্রেরণ করা হলে তারও কোন উত্তর পাওয়া যায়নি। বর্তমান প্রধান প্রকৌশলী মোঃ আব্দুর রশিদ মিয়াকে এ বিষয়ে বক্তব্য নেয়ার জন্য ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করে তাকে পাওয়া যায়নি।