২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটকে অপচয় ও অসংগতি কমানোর বাজেট হিসেবে উল্লেখ করেছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। তিনি বলেন, “এই বাজেটকে আমি ব্যতিক্রমী বাজেট বলবো।”
মঙ্গলবার (৩ জুন) বিকেলে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে আয়োজিত বাজেট পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।
জ্বালানির দামে স্বস্তির বার্তা
সংবাদ সম্মেলনে ফাওজুল কবির জানান, প্রস্তাবিত বাজেটে বিদ্যুৎ ও এলপিজির দাম কমানো হয়েছে। এলপিজি আমদানি করা হয় ৬৫ টাকায়, বিক্রি হয় ৩০ টাকায়—এ বিষয়টি তুলে ধরে তিনি বলেন, “জ্বালানি বিভাগ থেকে এলপিজি ও জ্বালানি তেলের দাম রিভিউ করে কমানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, যাতে সাধারণ মানুষ কিছুটা স্বস্তি পায়।”
তিনি আরও বলেন, “জ্বালানির দাম কমলে পরিবহন খরচ কমবে, জনগণ উপকৃত হবে।”
চাঁদাবাজি বন্ধে পদক্ষেপ
সড়ক পরিবহন খাতে চাঁদাবাজি রোধেও সরকারের উদ্যোগের কথা জানান উপদেষ্টা। তিনি বলেন, “সড়কে চাঁদাবাজি নিয়ন্ত্রণে পুলিশের সঙ্গে কাজ করছি। বাড়ি ফেরা মানুষদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় হলে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে তাৎক্ষণিক শাস্তি দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে।”
প্রথমবারের মতো বাজেটের আকার কম
এ বছর প্রস্তাবিত বাজেটের আকার ধরা হয়েছে ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকা, যা আগের অর্থবছরের তুলনায় ৭ হাজার কোটি টাকা কম। এটি বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো বাজেটের আকার হ্রাস পাওয়ার নজির।
রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা ও ঘাটতি
২০২৫-২৬ অর্থবছরে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৪ লাখ ৯৯ হাজার কোটি টাকা। বাজেট ঘাটতি ধরা হয়েছে ২ লাখ ২৬ হাজার কোটি টাকা, যা জিডিপির ৩.৬২ শতাংশ। এই ঘাটতি মেটাতে অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে ১ লাখ ২৫ হাজার কোটি টাকা এবং বৈদেশিক উৎস থেকে ৯৫ হাজার কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছে।
অভ্যন্তরীণ উৎসের মধ্যে ব্যাংক খাত থেকে সবচেয়ে বেশি ১ লাখ ৪ হাজার কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। সঞ্চয়পত্র থেকে নেওয়া হবে ১২ হাজার ৫০০ কোটি টাকা এবং অন্যান্য উৎস থেকে ৮ হাজার ৫০০ কোটি টাকা।
উপস্থিত ছিলেন সরকারের শীর্ষ অর্থনৈতিক নীতিনির্ধারকেরা
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন পরিকল্পনা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ, স্বরাষ্ট্র ও কৃষি উপদেষ্টা মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, বাণিজ্য ও বস্ত্র উপদেষ্টা শেখ বশির উদ্দিন, মন্ত্রিপরিষদ সচিব শেখ আব্দুর রশীদ, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর এবং এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খানসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের শীর্ষ কর্মকর্তারা।