‘ইট এন্ডস উইথ আস’ সিনেমার পরিচালক জাস্টিন বালডোনির বিরুদ্ধে মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ তুলে নিতে গিয়েও নতুন আইনি জটিলতায় জড়িয়েছেন হলিউড অভিনেত্রী ব্লেক লাইভলি। যদিও তিনি অভিযোগ প্রত্যাহার করতে ইচ্ছুক, তবে তা স্থায়ীভাবে নয়—এই অবস্থান নিয়েই শুরু হয়েছে আদালতের নতুন বিতর্ক।
লাইভলির আইনজীবীরা জানিয়েছেন, তিনি ইচ্ছাকৃত এবং অবহেলাজনিত মানসিক নির্যাতনের দুটি অভিযোগই তুলে নিতে চান। তবে ভবিষ্যতে প্রয়োজনে পুনরায় অভিযোগ তোলার সুযোগ রাখতেই এই পদক্ষেপ। বালডোনির আইনজীবীরা এটিকে ‘দুই দিকেই সুবিধা নেওয়ার কৌশল’ হিসেবে দেখছেন।
সোমবার (২ জুন) আদালতে দেওয়া এক আবেদনে বালডোনির পক্ষের আইনজীবীরা বলেন, “যদি লাইভলি সত্যিই অভিযোগ প্রত্যাহার করতে চান, তবে তা স্থায়ীভাবে করা উচিত। অভিযোগ তুলে নিয়েও ভবিষ্যতে আবার তা তোলার সুযোগ রাখা অনৈতিক।”
আইনি বিতর্ক আরও জটিল হয়, যখন বালডোনির পক্ষ থেকে লাইভলির মানসিক স্বাস্থ্য সংক্রান্ত চিকিৎসা নথি এবং পরামর্শদাতার নোট চাওয়া হয়। তাদের দাবি, লাইভলির আনীত অভিযোগ—‘চরম মানসিক যন্ত্রণা, অপমান, লজ্জা ও হতাশা’র যথেষ্ট প্রমাণ নেই।
অন্যদিকে লাইভলির আইনজীবীরা এসরা হাডসন ও মাইক গটলিয়েব পুরো মামলাটিকে ‘একটি প্রচারমূলক নাটক’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। তারা জানান, মামলা সংক্ষিপ্ত ও সুনির্দিষ্ট করতে চেয়েছিলেন, কিন্তু পাল্টা মামলার কারণে বরং তারাই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। তাই মামলা থেকে সরে যেতে চাইলেও আদালতের কাছে শর্ত রেখেছেন।
লাইভলির পক্ষ থেকে আরও জানানো হয়, তিনি এখন আরও বিস্তৃত ক্ষতিপূরণ দাবি করছেন, যার মধ্যে রয়েছে যৌন হয়রানি, প্রতিশোধমূলক আচরণ এবং অপমানজনক ব্যবহারের মতো গুরুতর অভিযোগ।
এই মামলা শুরু হয় ২০২৪ সালের ডিসেম্বর মাসে। তখন লাইভলি অভিযোগ করেন, সিনেমার শুটিং ও মুক্তির সময় তিনি অশোভন আচরণের শিকার হন এবং পরে তাকে সামাজিকভাবে হেয় করা হয়। পাল্টা অভিযোগে পরিচালক জাস্টিন বালডোনি দাবি করেন, লাইভলি ও তার স্বামী রায়ান রেনল্ডস প্রায় ৪০০ মিলিয়ন ডলার আদায়ের চেষ্টা করেছেন এবং তার মানহানি করেছেন।
বর্তমানে, এই মামলার সঙ্গে সম্পর্কিত ছয়টির বেশি মামলা আদালতে চলমান। বালডোনিও তার প্রাক্তন জনসংযোগ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে পৃথক মামলা করেছেন, অভিযোগ–তিনি ব্যক্তিগত বার্তা ফাঁস করেছেন।
এখন আদালতের সামনে মূল প্রশ্ন হলো—লাইভলিকে তার মানসিক স্বাস্থ্য সংক্রান্ত নথি জমা দিতে হবে কি না এবং তিনি অভিযোগগুলো স্থায়ীভাবে প্রত্যাহার করতে বাধ্য হবেন কি না। মামলার ভবিষ্যৎ এখনও অনিশ্চয়তার মধ্যেই রয়ে গেছে।