• ২৯শে জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ , ১৫ই আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

অন্তর্বর্তী সরকারের ১০ মাসে পুঁজিবাজারে নতুন আইপিও নেই

ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশিত জুন ১৭, ২০২৫, ১৭:৪০ অপরাহ্ণ
অন্তর্বর্তী সরকারের ১০ মাসে পুঁজিবাজারে নতুন আইপিও নেই
সংবাদটি শেয়ার করুন....

দেশের পুঁজিবাজার দীর্ঘ সময় ধরে স্থবিরতার মধ্যে রয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর গত ১০ মাসে একটি নতুন কোম্পানিও প্রাথমিক গণপ্রস্তাব (আইপিও) অনুমোদন পায়নি। যদিও সরকার পরিবর্তনের পর বাজারে সাময়িক উত্তেজনা দেখা দিয়েছিল, তবে তা স্থায়ী হয়নি।

রাজনৈতিক পালাবদলের পর বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) নতুন চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব নেন খন্দকার রাশেদ মাকসুদ। তখন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের প্রধান সূচক ছিল ৫৭৭৫.৪৯ পয়েন্ট। কিন্তু তার নেতৃত্বে ১০ মাস পার হলেও বাজারে তেমন কোনো গতি ফিরে আসেনি। বরং বিনিয়োগকারীদের মধ্যে অনাস্থা আরও বেড়েছে, লেনদেন কমেছে, সূচকের পতন ঘটেছে—সব মিলিয়ে হতাশা আরও গভীর হয়েছে।

এই সময়ে বিএসইসি একটি নতুন আইপিও অনুমোদন না দিয়ে উল্টো ১৭টি কোম্পানির আবেদন বাতিল করেছে, যা দেশের পুঁজিবাজারে একটি নজিরবিহীন ঘটনা।

বিএসইসি এবং বিভিন্ন ইস্যু ব্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠানের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৯-২০২৩ মেয়াদে বহু কোম্পানি আইপিওর মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ পুঁজি সংগ্রহ করেছিল। কিন্তু ২০২৩ সালের মাঝামাঝি রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং পরবর্তী সময়ে অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব নেওয়ার পর সেই ধারা থেমে যায়।

২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথমার্ধে কোনো কোম্পানি বাজার থেকে এক টাকাও তুলতে পারেনি।

প্রাইমারি ও সেকেন্ডারি বাজারে স্থবিরতা

পুঁজিবাজারের দুই স্তর—প্রাইমারি এবং সেকেন্ডারি মার্কেট—উভয়খানেই স্থবিরতা দেখা দিয়েছে। প্রাইমারি মার্কেটের মাধ্যমে কোম্পানিগুলো আইপিওর মাধ্যমে পুঁজি সংগ্রহ করে, যেখানে মন্দা থাকায় বিনিয়োগকারীরা নতুন শেয়ারে অংশ নেওয়ার সুযোগ হারাচ্ছেন। যদিও এতে সরাসরি ক্ষতির মুখে না পড়লেও লাভের সম্ভাবনা থেকে তারা বঞ্চিত হচ্ছেন।

অন্যদিকে, সেকেন্ডারি মার্কেটের দুরবস্থায় সাধারণ বিনিয়োগকারীরাই সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। কেননা এ বাজারেই তাদের মূল লেনদেন চলে, যা গত কয়েক মাস ধরে চরম নিম্নমুখী অবস্থায় রয়েছে।

বিনিয়োগ নেই, আইপিও নেই

বিএসইসির সাবেক চেয়ারম্যান ড. ফারুক আহমেদ সিদ্দিকী কালের কণ্ঠকে বলেন, “শেয়ারবাজারের গতিশীলতার সঙ্গে বিনিয়োগ পরিস্থিতি ওতপ্রোতভাবে জড়িত। স্বল্পমেয়াদি সরকার থাকলে বিনিয়োগকারীদের মাঝে অনিশ্চয়তা থাকে। এতে বড় ধরনের বিনিয়োগ হয় না। বিনিয়োগ না হলে কোম্পানিগুলো ব্যবসা সম্প্রসারণ করে না, ফলে আইপিও আসেও না।”

তিনি বলেন, “যদি ব্যবসায় লাভ না হয়, তাহলে বাজারে ভালো লভ্যাংশও আসে না। এ রকম পরিস্থিতিতে বাজারে ইতিবাচক কোনো পরিবর্তনের আশা করা যায় না।”

উল্লেখ্য, সর্বশেষ ২০২৪ সালে চারটি কোম্পানি—এনআরবি ব্যাংক, বেস্ট হোল্ডিংস, এশিয়াটিক ল্যাবরেটরিজ এবং টেকনো ড্রাগস—আইপিওর মাধ্যমে মোট ৬৪৫ কোটি টাকা সংগ্রহ করেছিল।