• ২৯শে জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ , ১৫ই আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ফ্যাসিবাদী দুঃশাসনের বিরুদ্ধে লেখার অপরাধে সাত বছরের কারাদণ্ড: ‘দৈনিক অজানা’র ডিক্লারেশন আটকে রাখার পেছনে কে?

ঢাকা
প্রকাশিত জুন ২৮, ২০২৫, ১১:২৯ পূর্বাহ্ণ
ফ্যাসিবাদী দুঃশাসনের বিরুদ্ধে লেখার অপরাধে সাত বছরের কারাদণ্ড: ‘দৈনিক অজানা’র ডিক্লারেশন আটকে রাখার পেছনে কে?
সংবাদটি শেয়ার করুন....

স্বাধীন সাংবাদিকতা ও মতপ্রকাশের অধিকারের ওপর ফের কোপ—ফ্যাসিবাদী সরকারের সময় দুর্নীতিবিরোধী রিপোর্ট প্রকাশ করায় একজন নির্ভীক সাংবাদিক ও সম্পাদককে ভুয়া মামলায় সাত বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়। সেই সঙ্গে তার দুটি বহুল প্রচারিত দৈনিক পত্রিকার ঘোষণাপত্র (ডিক্লারেশন) বাতিল করে তৎকালীন প্রশাসন।
সূত্র জানায়, লেখক ও সম্পাদককে অন্তত তিনবার কারাবরণ করতে হয় এবং অর্ধডজনেরও বেশি হয়রানিমূলক মামলা দিয়ে তার পেশাগত জীবন বিপর্যস্ত করে তোলে সরকারের প্রভাবশালী মহল ও দলীয় সন্ত্রাসীরা। কিন্তু উচ্চ আদালত থেকে তিনি সকল মামলায় জামিন ও খালাস পান। এর মধ্যেও থেমে থাকেনি হয়রানি—সাবেক আইজিপি এ কে এম শহীদুল হকের ছোট ভাইয়ের করা একটি চাঁদাবাজির মামলায় তাকে সাজা দেওয়া হয়, যদিও মামলাটি রাজনৈতিক প্রতিহিংসা ও প্রতারণামূলক বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে।
বর্তমানে তিনি মহামান্য হাইকোর্টের স্থায়ী জামিনে রয়েছেন। একই সঙ্গে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার রাজনৈতিক হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহারের নীতিগত সিদ্ধান্ত ঘোষণা করায় তার মামলাও প্রত্যাহারের প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
‘দৈনিক অজানা’র ডিক্লারেশন আটকে রাখছে কে?
সরকারের স্পষ্ট নির্দেশনা থাকা সত্ত্বেও পত্রিকার ঘোষণাপত্র পুনর্বহালের উদ্যোগে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে পুলিশের বিশেষ শাখা (এসবি)। জেলা প্রশাসকের দপ্তরে লিখিতভাবে আবেদন করা হলে, এসবির তদন্ত প্রতিবেদনের উপর নির্ভর করে সিদ্ধান্ত গ্রহণের কথা জানানো হয়। তবে দীর্ঘদিন পেরিয়ে গেলেও পুলিশ বিশেষ শাখা এখনো সেই প্রতিবেদন দাখিল করেনি।
বিশেষ সূত্র বলছে, কোনো মামলা বা অভিযোগ না থাকা সত্ত্বেও শুধুমাত্র রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের চাপ ও পুরনো শত্রুতার বশবর্তী হয়ে পুলিশের একটি প্রভাবশালী অংশ ইচ্ছাকৃতভাবে প্রতিবেদন আটকে রেখেছে।
লিখিত অভিযোগ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পর্যন্ত
সম্পাদক লিখিতভাবে পুলিশের বিশেষ শাখার প্রধান এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিবের নিকট অভিযোগ দাখিল করেছেন। অভিযোগে বলা হয়, সাংবাদিকের বিরুদ্ধে এমন কোনো মামলা বা অভিযোগ নেই, যা ঘোষণাপত্র আটকে রাখার যৌক্তিক ভিত্তি হতে পারে।
সিনিয়র সাংবাদিক ও মানবাধিকারকর্মীরা একে মতপ্রকাশের স্বাধীনতার পরিপন্থী ও রাষ্ট্রবিরোধী আচরণ বলে উল্লেখ করেছেন। তারা বলেন, “গণতন্ত্রে ভিন্নমত দমন নয়, উৎসাহ দেওয়া উচিত। একজন লেখক বা সম্পাদকের পত্রিকা আটকে রাখা মানে গোটা জাতির বাকস্বাধীনতা হরণ।”