উত্তরায় ডিএনসিসি নির্মিত “মুগ্ধ মঞ্চের” উদ্বোধন করলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা।
ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন এবং মীর মুগ্ধ মঞ্চ কমিটির যৌথ উদ্যোগে নির্মিত জুলাইয়ের বীর শহিদ মীর মাহফুজুর রহমান মুগ্ধের স্মৃতি সংরক্ষণে নির্মিত মুগ্ধ মঞ্চের উদ্বোধন করা হয়েছে। আজ রাজধানীর উত্তরায় নব নির্মিত “মুগ্ধ মঞ্চের” উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ সরকারের মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার।
“মুগ্ধ মঞ্চ উদ্বোধন করে প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা বলেছেন, “মুগ্ধ মঞ্চ আমাদের মনে করিয়ে দেবে—কোনো সৈরাচারী ব্যবস্থা এ দেশে টিকতে পারবে না। সরকার পরিবর্তন হলেও রাষ্ট্রের কাঠামোগত সংস্কার চালিয়ে যেতে হবে এবং দেশের সর্বস্তর থেকে ফ্যাসিবাদের বীজ উপড়ে ফেলতে হবে।”
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ। সভাপতির বক্তব্যে প্রশাসক বলেন, “মুগ্ধ মঞ্চ হবে এমন এক গণতান্ত্রিক প্ল্যাটফর্ম, যেখানে রাজনৈতিক গবেষণা, মুক্ত বিতর্ক এবং সাংস্কৃতিক চেতনার বিকাশ ঘটবে।”
তিনি আরও বলেন, “গণতন্ত্র চর্চার সবচেয়ে বড় স্থান হলো গণপরিসর বা পাবলিক স্পেস, যেখানে বিভিন্ন মতের মানুষের মিলন ঘটে। এ কারণেই নাগরিক ও রাজনৈতিক অংশগ্রহণ নিশ্চিত করে, সকল অবৈধ দখল উচ্ছেদ করে গণপরিসর উন্মুক্ত করে দিতে হবে।”
অনুষ্ঠানে সরকারের উপদেষ্টা, রাজনৈতিক বিশ্লেষক, শিক্ষাবিদ, সাংবাদিক, নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি এবং বিভিন্ন প্রজন্মের তরুণ নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় নাগরিক পার্টির সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব ডা. তাসনিম জারা। তিনি বলেন, “আমরা পুরনো বাংলাদেশে ফিরতে চাই না। নতুন বাংলাদেশ গড়ার জন্য যা কিছু প্রয়োজন, তা আমাদের করতে হবে এবং আমরা তা করব।”
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের। তিনি তার বক্তব্যে বলেন, “জুলাইয়ের শহিদ ও আহতরা আমাদের বিদ্রোহী হতে শিখিয়েছে, তারা আমাদের অনুপ্রেরণা জোগাবে। যদি ‘জুলাই সনদ’-এর আইনগত ভিত্তি না থাকে, তাহলে তা কোনো কাজে আসবে না।”
সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ আসাদুজ্জামান। তিনি জানান, “সিটি কর্পোরেশনের আওতাধীন ঢাকার যেসব স্থানে জুলাই আন্দোলনে আন্দোলনকারীরা পুলিশের গুলিতে শহিদ হয়েছেন, সেখানে স্থায়ীভাবে স্মৃতিচিহ্ন বা ‘মেমোরি স্ট্যাম্প’ নির্মাণ করা হবে।”
জুলাই আন্দোলনের শহিদ পরিবারের সদস্য এবং আহত আন্দোলনকারীরাও আলোচনায় অংশ নেন। জুলাই শহিদ নাঈমা সুলতানার মা আইনুন্নাহার তার বক্তব্যে বলেন, “আমরা দ্রুততম সময়ে জুলাই আন্দোলনে সকল হত্যার বিচার চাই।”
জুলাই আন্দোলনে আহত আব্দুল আজিজ বলেন, “জুলাইয়ে আন্দোলনের নেতৃত্ব ধ্বংস করতে টার্গেট করে গুলি চালানো হয়েছিল। যারা উত্তরায় গুলি চালিয়ে মানুষ হত্যা করেছে, তাদের এক মাসের মধ্যে গ্রেপ্তার করতে হবে।”
এ সময় শহিদ জাবির ইব্রাহিমের পিতা কবির হোসেনসহ অন্যান্য বক্তাগণ বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন মীর মুগ্ধের ভাই মীর মাহবুবুর রহমান স্নিগ্ধ