• ৬ই আগস্ট, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ , ২২শে শ্রাবণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মাদক ব্যবসায়ী ও অপরাধীদের নিরাপদ অভয়ারণ্য তুরাগ ২০০ স্পটে শতাধিক ডিলার ইয়াবা ব্যবসায় সক্রিয়! ছিনতাইকারি, ডাকাত, সন্ত্রাস, ভাড়াটিয়া কিলার ও খুনিদের গোপন আস্তানা

মনির হোসেন জীবন
প্রকাশিত আগস্ট ৫, ২০২৫, ০২:২১ পূর্বাহ্ণ
মাদক ব্যবসায়ী ও অপরাধীদের নিরাপদ অভয়ারণ্য তুরাগ  ২০০ স্পটে শতাধিক ডিলার ইয়াবা ব্যবসায় সক্রিয়! ছিনতাইকারি, ডাকাত, সন্ত্রাস, ভাড়াটিয়া কিলার ও খুনিদের গোপন আস্তানা
সংবাদটি শেয়ার করুন....

রাজধানীর অন্যতম বড় ক্রাইম জোন হিসেবে পরিচিত হয়ে উঠেছে তুরাগ। দাগি অপরাধী, ছিনতাইকারী, ডাকাত, সন্ত্রাসী, ভাড়াটে খুনি, উঠতি বয়সী ক্যাডার ও অপরাধজগতের সাথে জড়িত অনেকে এই এলাকায় নিরাপদ আশ্রয় খুঁজে নিচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও বিশ্বস্ত একাধিক সূত্র এই তথ্য নিশ্চিত করেছে।

তুরাগ থানা এলাকার অন্তর্ভুক্ত প্রায় ৩৩টি গ্রামে ইয়াবাসহ অন্যান্য মাদকদ্রব্য বেচাকেনা এখন নিয়মিত ঘটনা। একাধিক সিন্ডিকেটের মাধ্যমে ২০০টি স্পটে শতাধিক ডিলার সক্রিয়ভাবে ইয়াবা ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। মুখোশধারী গডফাদার ও তথাকথিত বড় ভাইদের আশ্রয়ে এরা দীর্ঘদিন ধরে দাপটের সাথে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে।

ডিয়াবাড়ি, তারারটেক, নয়ানগর, নলভোগ, রানাভোলা, কামারপাড়া, আহালিয়া, বাউনিয়া, চন্ডাল ভোগসহ বহু এলাকায় মাদক কারবারের বিস্তার ঘটেছে। স্থানীয় অটোরিকশা, লেগুনা ও প্রাইভেটকার চালকদের একটি অংশও এই ব্যবসায় জড়িত। উত্তরা ১২-১৮ নম্বর সেক্টর মাদক সিন্ডিকেটের ঘাঁটিতে পরিণত হয়েছে।

এখানে মাদকবিরোধী অবস্থান নেওয়া ব্যক্তিরা হুমকি, হয়রানি এমনকি প্রাণনাশের মতো ঘটনার মুখোমুখি হচ্ছেন। পুলিশ প্রশাসন সব কিছু জেনেও অপরাধীদের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নিচ্ছে না—এমন অভিযোগ এলাকাবাসীর।

একাধিক সূত্রে জানা গেছে, রাজধানীর বিভিন্ন অভিজাত এলাকা থেকে দামি গাড়িতে করে মাদক ডিলাররা ইয়াবা পৌঁছে দিচ্ছে। এদের মধ্যে অনেকে শিক্ষাবিহীন হলেও বিশাল সম্পদের মালিক বনে গেছে। মধ্যবিত্ত পরিবারের কিশোরদের দিয়ে হোম ডেলিভারির কাজ করানো হচ্ছে।

র‌্যাব-১ তুরাগ এলাকা থেকে সম্প্রতি ৪০ হাজার ইয়াবা সহ এক কুখ্যাত ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করেছে। একইসঙ্গে তুরাগ থানা ও উত্তরা পশ্চিম থানা পুলিশ পৃথক অভিযানে ফেন্সিডিল ও ইয়াবা সহ কয়েকজনকে আটক করেছে। তবুও মূল সিন্ডিকেট বহাল তবিয়তে রয়ে গেছে।

মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের তথ্য অনুযায়ী, দেশে ইয়াবা আসক্তির সংখ্যা ৩০-৩৫ লাখ ছাড়িয়ে গেছে। ১৫-২০ হাজার মানুষ বর্তমানে নিরাময় কেন্দ্রে চিকিৎসাধীন। অধিকাংশ আসক্ত উচ্চ ও মধ্যবিত্ত পরিবারের তরুণ-তরুণী।

তুরাগের আরাফাত সুপার মার্কেট, গাড়ির যন্ত্রাংশের দোকান, সেলুন, খাবার হোটেল ও চায়ের দোকানগুলো মাদক কারবারিদের নতুন ঘাঁটি হিসেবে গড়ে উঠেছে। রাত বাড়লেই এখানে জমে আড্ডা ও জুয়ার আসর।

মাদকের ভয়াবহ বিস্তার রোধে এলাকাবাসী প্রধান উপদেষ্টা, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা, আইজিপি, র‌্যাব ডিজি, ডিএমপি কমিশনার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছে।