• ১৪ই আগস্ট, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ , ৩০শে শ্রাবণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বিচারে দীর্ঘসূত্রিতায় বাড়ছে হাতি হত্যা

বিশ্ব হাতি দিবস

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত আগস্ট ১২, ২০২৫, ১৩:১২ অপরাহ্ণ
বিচারে দীর্ঘসূত্রিতায় বাড়ছে হাতি হত্যা
সংবাদটি শেয়ার করুন....

বিশ্ব হাতি দিবস প্রতি বছর ১২ আগস্ট পালন করা হয়। এই দিবসের মূল উদ্দেশ্য হলো হাতিদের সুরক্ষা ও সংরক্ষণ সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি এবং তাদের প্রাকৃতিক বাসস্থান রক্ষার প্রচেষ্টা চালানো। হাতি পৃথিবীর অন্যতম মূল্যবান প্রাণী হলেও তাদের সংখ্যা দ্রুত হ্রাস পাচ্ছে। সেই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশেও হাতি দিবস পালিত হয়।

দেশে সময়ের সঙ্গে বেড়েছে হাতি হত্যা। কিছু মানুষ বিদ্যুতের ফাঁদ পাতা, গুলি করা এবং শিকারের উদ্দেশ্যে হাতি হত্যা করে যাচ্ছে, যা বন্য হাতির সংখ্যা কমিয়ে দিচ্ছে।

বন বিভাগের তথ্যমতে, চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে অন্তত ১৮টি হাতি অস্বাভাবিকভাবে মারা গেছে। গত ৯ বছরে চট্টগ্রাম দক্ষিণ বন বিভাগ এলাকায় মারা গেছে সর্বাধিক ৩২টি হাতি, কক্সবাজার উত্তর ৩০টি, কক্সবাজার দক্ষিণ ২২টি, চট্টগ্রাম অঞ্চলে ১৪টি, লামা বন বিভাগে আটটি, তিন পার্বত্য জেলায় আটটি এবং নেত্রকোণা, জামালপুর ও শেরপুর অঞ্চলে ৩২টি হাতি মারা গেছে। এর বড় কারণ বিদ্যুতের ফাঁদ। তবে অন্তর্বর্তী সরকার ‘হাতি সংরক্ষণ প্রকল্প’সহ কয়েকটি উদ্যোগ নিয়েছে।

হাতি হত্যার ঘটনায় জড়িতদের বিচার না হওয়ায় অপরাধীরা পার পেয়ে যাচ্ছে। বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইন প্রয়োগে বন অধিদপ্তরের উদাসীনতা রয়েছে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে থানায় শুধু সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করে দায় শেষ করা হয়, ফলে বিচার হচ্ছে না।

গত ৯ বছরে দেশে মোট ১৪৬টি হাতি মারা গেছে, যার মধ্যে চট্টগ্রাম, পার্বত্য চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারে ১১৪টি। কিন্তু বন আদালতে মামলা হয়েছে মাত্র ১৯টি এবং থানায় জিডি হয়েছে ৭৫টি। নেত্রকোণা, শেরপুর, ময়মনসিংহ ও জামালপুরে মারা গেছে ৩২টি হাতি; এসব ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে মাত্র একটি, বন আদালতে একটি এবং জিডি হয়েছে সাতটি।

চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেলপথে হাতি দুর্ঘটনা রোধে রেলওয়ে ৪০ কোটি টাকার প্রকল্প নিয়েছে। বিদেশ থেকে আনা ছয়টি রোবোটিক সেন্সর ক্যামেরা হাতির করিডোরে বসানো হবে, যা হাতির অবয়ব শনাক্ত করে সংকেত পাঠাবে এবং ট্রেন চালকদের সতর্ক করবে।

২০২৫-২৬ অর্থবছরে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু মন্ত্রণালয় হাতি-মানুষ দ্বন্দ্ব নিরসনে চট্টগ্রাম ও শেরপুরে ১৫৯টি ইমিডিয়েট রেসপন্স টিম (ইআরটি) গঠন করেছে। শেরপুরে ৪৪৪ একর আকাশমণি বন পুনরুদ্ধার করে হাতির করিডোর উপযোগী করা হচ্ছে। এছাড়া বন্যপ্রাণী আইন যুগোপযোগী করতে সংশোধনের প্রক্রিয়া চলছে এবং বন্যপ্রাণী ট্রাস্ট গঠনের জন্য একটি স্টাডি কার্যক্রম চলছে। পরিবেশ, বন ও বন্যপ্রাণী রক্ষায় আটটি আইন, বিধিমালা ও নির্দেশিকার কাজও চূড়ান্ত হচ্ছে।