• ১৩ই আগস্ট, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ , ২৯শে শ্রাবণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

উপদেষ্টা হয়েও পাথর তোলা বন্ধ রাখতে পারলাম না

রিজওয়ানা

ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশিত আগস্ট ১২, ২০২৫, ১৩:২৪ অপরাহ্ণ
উপদেষ্টা হয়েও পাথর তোলা বন্ধ রাখতে পারলাম না
সংবাদটি শেয়ার করুন....

সম্প্রতি নজিরবিহীন লুটপাট হয়েছে সিলেটের অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ভোলাগঞ্জ ‘সাদাপাথর’ এলাকায়। মনোমুগ্ধকর এই ‘সাদাপাথর’ এলাকা এখন প্রায় বিবর্ণ, ক্ষতবিক্ষত হয়ে গেছে পর্যটনকেন্দ্রটি।

এ বিষয়ে বন ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান হতাশা প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, আগের চার বছর জাফলং-এ পাথর উত্তোলন বন্ধ রাখতে পেরেছিলাম, এখন আমি উপদেষ্টা হয়েও পারলাম না।

সোমবার (১১ আগস্ট) এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, পাথর উত্তোলনে সর্বদলীয় ঐক্য দেখছি। একটি সুন্দর জিনিস হাতে ধরে কীভাবে অসুন্দর করা যায়, তা শিখতে হলে বাংলাদেশে আসতে হবে। চোখের সামনে অপূর্ব সুন্দর জাফলং নষ্ট হতে দেখলাম। ধ্বংসযজ্ঞ দেখলাম।

তিনি বলেন, শুনেছি, এই পাথরগুলো নাকি তুলতেই হবে। কেন তুলতে হবে, কেন? কারও কাছে কোনো পরিসংখ্যান নেই। অথচ তথ্য বলছে দেশের চাহিদার মাত্র ৬ ভাগ পূরণ হয় এসব পাথর তুলে, বাকি ৯৪ ভাগই আমদানি করতে হয়। যদি ৯৪ ভাগ আমদানি করা যায়, তবে বাকি ৬ ভাগ কেন পারা যাবে না!

তিনি আরও বলেন, কেন আমরা ভিয়েতনামে গিয়ে তাদের নদীর ইকো ট্যুরিজম দেখি, কিন্তু জাফলং-এ ইকো ট্যুরিজম করতে পারলাম না! আমরা যেমন সৌন্দর্যমণ্ডিত জাফলং দেখেছি, নতুন প্রজন্ম কেন তা দেখবে না! সেখানে আবার রাজনৈতিক ঐক্য দেখলাম।

উপদেষ্টা বলেন, ‘সিলেটে দুইজন উপদেষ্টা গেলাম, সেখানে পাথর তুলতে সর্বদলীয় ঐক্য দেখলাম। আগের চার বছর জাফলং-এ পাথর উত্তোলন বন্ধ রাখতে পেরেছিলাম, এখন উপদেষ্টা হয়েও পারছি না। জাফলং রক্ষা করতে কোনো ঐক্য দেখলাম না। এটাই বাংলাদেশের বাস্তবতা। জাফলং ধ্বংস করে কীসের উন্নয়ন, কার উন্নয়ন হচ্ছে? আমরা যদি পাথর না তুলে ইকো ট্যুরিজম করি, হিসাব করে দেখুন পাথর তুলে কত আয় হয় আর ইকো ট্যুরিজম থেকে কত আয় হয়! কেউ কি এই তুলনামূলক বিশ্লেষণ করেছে? একজন ডিসি বলেছিলেন, ইকো ট্যুরিজমে আমরা পাথর তোলা থেকে বেশি আয় করতে পারব। সারাদিন পানিতে নেমে পাথর তোলা কি কর্মসংস্থান? এটা শোষণ, একেবারেই পরিষ্কার শোষণ।’

ধলাই নদীর উৎসমুখে সীমান্তের জিরো লাইন সংলগ্ন ১০ নম্বর এলাকার নাম ‘সাদাপাথর’। প্রতিবছর সৌন্দর্যের টানে লাখ লাখ পর্যটক আসেন এখানে। কিন্তু লুটপাটের কারণে মনোমুগ্ধকর সেই এলাকা এখন প্রায় বিবর্ণ।

কোম্পানীগঞ্জের বাসিন্দাদের অনেকে জানিয়েছেন, গত বছরের ৫ আগস্টের পর থেকে দিনে-রাতে লুটপাট চলেছে। প্রতিরাতে অন্তত শতাধিক গাড়ি পাথর কোম্পানীগঞ্জ থেকে বের হতে দেখেছেন তারা।

তাদের অভিযোগ, পাথর লুটের নেতৃত্বে স্থানীয় প্রভাবশালী এক রাজনৈতিক নেতা জড়িত।