
ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ সংগঠন হামাস ঘোষণা করেছে যে গাজা সিটি দখলের জন্য ইসরায়েলের নতুন সামরিক পরিকল্পনাও অতীতের মতো ব্যর্থ হবে। এক বিবৃতিতে সংগঠনটি জানায়, ‘এই অভিযানও ব্যর্থ হবে, যেমন ইসরায়েলের পূর্ববর্তী সব প্রচেষ্টা হয়েছে। গাজা দখল কোনোভাবেই তাদের জন্য সহজ কাজ হবে না।’ খবর আনাদোলুর।
এই প্রতিক্রিয়া আসে এমন এক দিনে, যেদিন ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ ‘অপারেশন গিডিয়নস চারিয়টস ২’ নামে একটি নতুন সামরিক অভিযানের অনুমোদন দেন। বৃহস্পতিবার থেকেই ইসরায়েলি সেনাবাহিনী এই অভিযানের বাস্তবায়ন শুরু করে, যার প্রধান লক্ষ্য গাজা সিটি দখল করা।
হামাস অভিযোগ করেছে, এই পরিকল্পনা মূলত গত ২২ মাস ধরে গাজায় চলমান গণহত্যারই ধারাবাহিকতা। সংগঠনটির দাবি, একদিকে ইসরায়েল যুদ্ধবিরতি ও বন্দি বিনিময় চুক্তির জন্য আন্তর্জাতিক মধ্যস্থতাকারীদের প্রচেষ্টাকে অবহেলা করছে, অন্যদিকে গাজার সাধারণ নাগরিকদের ধ্বংসের মুখে ঠেলে দিচ্ছে।
হামাস আরও জানায়, তারা ইতোমধ্যেই মিশর ও কাতারের মধ্যস্থতায় প্রস্তাবিত যুদ্ধবিরতি চুক্তি মেনে নিয়েছে। কিন্তু ইসরায়েলি সরকার সেই প্রস্তাবে কোনো ইতিবাচক সাড়া দেয়নি। বরং তারা গাজার নিরীহ জনগণের বিরুদ্ধে নৃশংস সামরিক অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে, যার উদ্দেশ্য গাজা সিটিকে ধ্বংস করা এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের দক্ষিণাঞ্চলে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত করা।
হামাসের বিবৃতিতে আরও বলা হয়, প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু মধ্যস্থতাকারীদের প্রস্তাব উপেক্ষা করেছেন এবং কোনো জবাব দেননি। এটি প্রমাণ করে যে তিনি ইচ্ছাকৃতভাবে চুক্তি ভঙ্গ করছেন, বন্দিদের জীবনের তোয়াক্কা করছেন না এবং তাদের ফেরত আনার ব্যাপারে আন্তরিক নন।
সংগঠনটি আন্তর্জাতিক মধ্যস্থতাকারীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেছে, তারা যেন সর্বোচ্চ চাপ প্রয়োগ করে ইসরায়েলকে ফিলিস্তিনি জনগণের বিরুদ্ধে চলমান গণহত্যা বন্ধে বাধ্য করে।
এর আগে, গত ৮ আগস্ট ইসরায়েলের নিরাপত্তা মন্ত্রিসভা গাজার উত্তরাংশে অবস্থিত গাজা সিটি দখলের পরিকল্পনা অনুমোদন করে। ওই বৈঠকের আগে এক সাক্ষাৎকারে নেতানিয়াহু স্পষ্টভাবে জানান, ইসরায়েলের লক্ষ্য গোটা গাজা উপত্যকা পুরোপুরি দখল করা।
পরবর্তীতে বুধবার প্রতিরক্ষামন্ত্রী ক্যাটজ আনুষ্ঠানিকভাবে এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের অনুমোদন দেন। অভিযানের অংশ হিসেবে প্রথম ধাপে প্রায় ১০ লাখ ফিলিস্তিনিকে দক্ষিণে জোর করে সরিয়ে দেয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। এরপর গাজা সিটিকে অবরুদ্ধ করে ব্যাপক হামলা চালিয়ে শহরটি দখলের চেষ্টা করবে ইসরায়েলি বাহিনী।