পেদ্রো দে লা ভেগাকে আর্জেন্টিনাকে “নতুন মেসি” বলতো সবাই। বোকা জুনিয়র্স ও রিভার প্লেট তাকে নেয়নি, রিয়াল মাদ্রিদও তাঁকে সুযোগ দেয়নি। কয়েকবছর লানুসে খেলে মেজর লিগ সকারে সকারের দল সিয়াটল সাউন্ডার্সের নাম খেলান তিনি। এবার আসল মেসির বিপক্ষে শিরোপা লড়াইয়ে নামার সুযোগ হয়েছে দে দে লা ভেগার।
ছোটবেলায় তার ফুটবলার হওয়ার স্বপ্ন ছিল অনেক বড়। ২০১১ সালে মাত্র ১১ বছর বয়সে তিনি বুয়েনস আয়ার্সে পাড়ি জমান। কিন্তু বোকা জুনিয়র্স ও রিভার প্লেট তাকে প্রত্যাখ্যান করে, কারণ তাদের বোর্ডিং হাউসে কোনো জায়গা ছিল না। ডে লা ভেগা বলেন, “আমি এক বছর রিভার প্লেটের হয়ে মেট্রোপলিটন টুর্নামেন্টে খেলেছিলাম। কিন্তু সেই সময় আমি বুয়েনস আয়ার্সে থাকার সাহস পাইনি, আমার পরিবারও রাজি ছিল না। কিন্তু ২০১৫ সালে যখন আমি বুয়েনস এইরেসে থাকার সিদ্ধান্ত নিই, তখন নানা কারণে তারা আমাকে সুযোগ দেয়নি। তখন লানুস আমাকে সাদরে গ্রহণ করে।”
লানুসের হয়ে দারুণ পারফরম্যান্স তাকে রাতারাতি তারকাখ্যাতি এনে দেয়। এই পারফরম্যান্সের সুবাদে তিনি আর্জেন্টিনা অনূর্ধ্ব-২০ দলে সুযোগ পান এবং ২০১৯ সালের অনূর্ধ্ব-২০ বিশ্বকাপে খেলেন। তার প্রতিভা ইউরোপের বড় ক্লাবগুলোর নজর কাড়ে। রিয়াল মাদ্রিদ তাকে পর্যবেক্ষণের জন্য স্কাউট পাঠায়। জুভেন্টাস এবং ইন্টার মিলানের মতো ক্লাবও তার প্রতি আগ্রহ দেখিয়েছিল, কিন্তু কোনো চুক্তি হয়নি।
২০২০ সালে লানুস তাকে ১০ নম্বর জার্সি দেয়, যা একজন তরুণ খেলোয়াড়ের জন্য অনেক বড় সম্মান। ২০২১ সালে টোকিও অলিম্পিকে খেলার সুযোগ পান তিনি। এরপর গুরুতর ইনজুরির কারণে আট মাস মাঠের বাইরে ছিলেন। ২০২৩ সালে প্রায় ৭ মিলিয়ন ডলারে সিয়াটল সাউন্ডার্সে তাকে দলে নেয়। ক্লাবের কোচ ব্রায়ান শ্মেৎজার তার প্রশংসা করে বলেন, “আমরা পেদ্রোকে দলে পেয়ে খুবই উচ্ছ্বসিত। সে একজন আক্রমণাত্মক খেলোয়াড় এবং ফাইনাল থার্ডে তার সৃজনশীল ক্ষমতা আছে।”
সিয়াটল সাউন্ডার্সের হয়ে ২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪-এ তার অভিষেক হয় এবং প্রথম ম্যাচেই তিনি গোল পান। নিজের প্রথম মৌসুমে তিনি দলকে এমএলএস সেমিফাইনালে তুলেছেন। লিগস কাপে সেমিফাইনালে এলএ গ্যালাক্সিকে হারিয়ে ফাইনালের টিকিট নিশ্চিত করে তার দল।
বাংলাদেশ সময় সোমবার সকাল ৬টায় পেদ্রো দে লা ভেগা তার ক্যারিয়ারের প্রথম শিরোপার জন্য লড়বেন। তার স্বপ্ন পূরণ হতে চলেছে, কারণ তিনি এমন একজনের বিপক্ষে খেলবেন যাকে তিনি সবসময় নিজের আদর্শ মনে করেছেন। তিনি নিজেই ইনস্টাগ্রামে লিখেছেন, “স্বপ্ন সত্যি হলো, ধন্যবাদ।” সেখানে মেসির সঙ্গে একটি ছবিও পোস্ট করেছেন তিনি।
এখন দেখার বিষয়, পেদ্রো দে লা ভেগা তার স্বপ্নের নায়ককে হতাশ করে নিজের প্রথম শিরোপা জিততে পারেন কিনা।
“ভোর/রিপন/আইটি”