• ৯ই সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ , ২৫শে ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বহু বছর পর তুলনামূলক নিরপেক্ষ ডাকসু নির্বাচন হতে যাচ্ছে

জাহেদ উর রহমান

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
প্রকাশিত সেপ্টেম্বর ৭, ২০২৫, ১২:৫৯ অপরাহ্ণ
বহু বছর পর তুলনামূলক নিরপেক্ষ ডাকসু নির্বাচন হতে যাচ্ছে
সংবাদটি শেয়ার করুন....

রাজনৈতিক বিশ্লেষক জাহেদ উর রহমান বলেছেন, বহু বছর পর একটি গুরুত্বপূর্ণ ও তুলনামূলকভাবে নিরপেক্ষ ডাকসু নির্বাচন হতে যাচ্ছে। এরশাদের আমলে শেষ যে ডাকসু নির্বাচন হয়েছিল, সেখানে আমানুল্লাহ আমান ও খাইরুল কবির খোকন নির্বাচিত হয়েছিলেন। এরপর অনেক বছর বাদে শেখ হাসিনার সময় একটি নির্বাচন হয় যেখানে ভিপি হন নুরুল হক নূর।

এইবারের ডাকসু নির্বাচনের গুরুত্ব নিয়ে তিনি বলেন, এটি শুধু বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের নির্বাচন নয়, বরং জাতীয় রাজনৈতিক অঙ্গনে এর প্রতিফলনও হতে পারে।

বিশেষ করে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির এই নির্বাচনে ভালো ফলাফল করতে পারে বলে ধারণা তৈরি হয়েছে। তিনি প্রশ্ন করেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা কি শিবিরের এই উত্থান মেনে নেবেন কী না।

জাহেদ উর রহমান বলেন, ডাকসু নিয়ে অনেকেই বাড়াবাড়ি রকম গুরুত্ব আরোপ করেন, আবার কেউ একেবারে অবহেলা করেন। আসলে এটি বাংলাদেশের শহুরে মধ্যবিত্ত ও শিক্ষিত সমাজে গুরুত্বপূর্ণ, কিন্তু প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর কাছে তেমন কোনো তাৎপর্য রাখে না।

তবুও এটি প্রতীকী রাজনৈতিক ও আদর্শিক লড়াইয়ের ক্ষেত্র। তিনি আরো বলেন, ছাত্রশিবির এবার প্রকাশ্য রাজনীতিতে ফিরেছে, যদিও তারা তাদের প্যানেলের নামের মধ্যে ছাত্রশিবির ব্যবহার করেননি। এটি একধরনের কৌশলগত অবস্থান। একইসঙ্গে তিনি মনে করেন, ছাত্রশিবিরের গুপ্ত রাজনীতি ছাত্রলীগ কিংবা সাধারণ শিক্ষার্থীর ছদ্মবেশে দীর্ঘদিন ধরে চলেছে এবং এখন তারা প্রকাশ্যে এসেছেন, যা রাজনৈতিক স্বচ্ছতার জন্য ভালো।

সুতরাং, কেউ ব্যক্তি হিসেবে কেমন, সেটি মুখ্য নয়। মুখ্য হলো তিনি কী মতাদর্শ প্রতিনিধিত্ব করছেন।

মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ, গণতন্ত্র ও উদারনৈতিক রাজনীতির পক্ষে দাঁড়ানো এবং সে অনুযায়ী ভোট দেওয়া অত্যন্ত জরুরি বলে মনে করেন তিনি। বলেন, যারা শিবিরের প্যানেলে আছেন, তারা ব্যক্তিগতভাবে ভালো, মার্জিত ও দক্ষ হতে পারেন। তবু তারা একটি রক্ষণশীল, রাজনৈতিক ও আদর্শিক অবস্থানকে প্রতিনিধিত্ব করেন, যেটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।

তিনি মনে করিয়ে দেন, এই ভোটাররা ভবিষ্যতের জাতীয় রাজনীতির নেতাও হতে পারেন। আজ যদি একজন ছাত্র নেতাকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করা হয়, ভবিষ্যতে সে বড় রাজনৈতিক নেতা হয়ে উঠবে। তাই আজকের ভোট একটি রাজনৈতিক চর্চা, একটি দায়বদ্ধতার চর্চা। ছাত্রশিবিরের অধিকার রয়েছে রাজনীতি করার, তবে ভোটারদেরও অধিকার রয়েছে সচেতন সিদ্ধান্ত নেওয়ার। ছাত্রশিবিরকে প্রতিহত করতে হলে আলোচনার মাধ্যমে, যুক্তির মাধ্যমে ও ভোটের মাধ্যমে করতে হবে। সকল শিক্ষার্থীর উচিত, নির্বিশেষে ভোট দিতে যাওয়া।