• ১১ই নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ , ২৬শে কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বাংলাদেশে এখনকার পরিস্থিতি আমাদের মানতে হবে: ভারতীয় কূটনীতিক

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত সেপ্টেম্বর ১৮, ২০২৫, ১২:০২ অপরাহ্ণ
বাংলাদেশে এখনকার পরিস্থিতি আমাদের মানতে হবে: ভারতীয় কূটনীতিক
সংবাদটি শেয়ার করুন....

সব ঠিকঠাক থাকলে এবং পরিকল্পনা অনুযায়ী এগোলে বাংলাদেশে পরবর্তী জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে মাত্র পাঁচ মাসের মধ্যেই। এর আগে পরপর তিনটি নির্বাচনে ভারতের ভূমিকা নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠেছিল। এমনকি শেখ হাসিনা সরকারকে প্রশ্নবিদ্ধ সেই তিনটি নির্বাচন পেরোতে ভারতের সহায়তা ছিল— এমন অভিযোগও রয়েছে।

তবে এবারের প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিবর্তনের কারণে ভারতের অবস্থান কী হবে, সেটি এখন সবচেয়ে বড় প্রশ্ন। দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের স্বার্থে ভারত কী চায়— সেটিই আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু।

গত এক বছরে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বহুবার জানিয়েছে, তারা চায় বাংলাদেশে দ্রুত একটি সুষ্ঠু, অবাধ, গণতান্ত্রিক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হোক।

কিন্তু ইতোমধ্যেই বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ হয়েছে। পরবর্তী নির্বাচনে আওয়ামী লীগ তাদের ঐতিহ্যবাহী প্রতীক ‘নৌকা’ নিয়ে লড়তে পারবে— এমন সম্ভাবনা নেই বললেই চলে।

ফলে আওয়ামী লীগ ছাড়া কোনো নির্বাচনকে ভারত অন্তর্ভুক্তিমূলক বিবেচনা করবে কি না— তা নিয়ে স্পষ্ট বার্তা মেলেনি।

এদিকে ভারতের একাডেমিক মহল, থিংকট্যাংক ও সিভিল সোসাইটিতেও বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনায় নানা মত উঠে আসছে। সবই এমন সময়ে ঘটছে, যখন ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনা ও তার শীর্ষ নেতাদের অনেকেই ভারতে অবস্থান করছেন।

এই প্রেক্ষাপটে দিল্লির ইন্ডিয়া ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার (আইআইসি)— যা ভারতের বৈদেশিক ইস্যু নিয়ে আলোচনার অন্যতম কেন্দ্র— সম্প্রতি বাংলাদেশের নির্বাচন ঘিরে একটি সেমিনারের আয়োজন করে। সেখানে ভারতের পক্ষ থেকে কী ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া উচিত— তা নিয়ে আলোচনা হয়।

‘ওয়েট অ্যান্ড ওয়াচ’

ভারতের সাবেক শীর্ষ আমলা ও প্রসার ভারতী বোর্ডের সাবেক সিইও জহর সরকার মনে করেন, এখনই কোনো প্ররোচনায় না গিয়ে ভারতের উচিত হবে অপেক্ষা করা এবং দেখা— বাংলাদেশের নির্বাচনে কী ফলাফল আসে।

তৃণমূল কংগ্রেসের সাবেক এই সংসদ সদস্য সেমিনারের সঞ্চালক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন।

জহর সরকার বলেন, বাংলাদেশে এখনকার পরিস্থিতি আমাদের বুঝতে হবে, সবচেয়ে বড় কথা হলো মানতে হবে। হঠাৎ পালাবদলটা দিল্লির কাছে শকের মতো ছিল। কিন্তু এখন মেনে নিতে হবে যে, বাংলাদেশে ভোটাররা যাকেই শাসক হিসেবে নির্বাচিত করবে, তাদের গ্রহণ করতে হবে।

প্রশ্ন ছিল, যদি নতুন সরকার ভারতের প্রতি অনুকূল না হয়, তাহলে কী হবে?

জহর সরকার জবাব দেন, এসব চিন্তা পরের বিষয়। কে আসবে কে যাবে— তা আগে থেকে কেউ জানে না। বাংলাদেশে কিছু উগ্র বক্তব্যের কারণে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়, মানুষও উত্তেজিত হয়ে পড়ে। কিন্তু মনে রাখতে হবে, এখনকার সরকার একটি কেয়ারটেকার গভর্নমেন্ট— তাদের প্রতি অতিরিক্ত প্রতিক্রিয়া দেখানোর প্রয়োজন নেই। তারা নির্বাচন আয়োজন করলেই দায়িত্ব শেষ।

তার মতে, ভারতের উচিত হবে আরও কিছু মাস ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করা এবং নতুন সরকার আসার পর তাদের সঙ্গে সম্পর্ক স্থির করা। কারণ ভারত ও বাংলাদেশের ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে, সেটি কতটা ধরে রাখা যায়— তা তখন নির্ধারণ করা সম্ভব হবে।