ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ সাধারণ নির্বাচন আয়োজনের জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সর্বাত্মক প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
স্থানীয় সময় সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) নিউইয়র্কে দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক মার্কিন বিশেষ দূত এবং ভারতে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত সার্জিও গোরের সঙ্গে বৈঠকে তিনি এ কথা বলেন। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইংয়ের পাঠানো বার্তায় এ তথ্য জানানো হয়।
প্রধান উপদেষ্টা বিশেষ দূতকে বলেন, নির্বাচন ফেব্রুয়ারিতেই হবে এবং তা অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ হবে। দেশ এ বিষয়ে সম্পূর্ণ প্রস্তুত।
বৈঠকে সার্জিও গোর প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বের প্রশংসা করেন এবং যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের এ প্রচেষ্টায় সহায়তা অব্যাহত রাখবে বলে আশ্বাস দেন।
বৈঠকে উভয়পক্ষ বাণিজ্য, দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক সহযোগিতা, সার্কের পুনরুজ্জীবন, রোহিঙ্গা সংকট এবং ঢাকাকে লক্ষ্য করে বিভ্রান্তিকর তথ্যের বিস্তারসহ দ্বিপাক্ষিক ও আঞ্চলিক নানা বিষয়ে আলোচনা করেন।
প্রধান উপদেষ্টা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের অব্যাহত সহায়তা কামনা করেন। জবাবে মার্কিন কর্মকর্তারা রোহিঙ্গাদের জন্য জীবনরক্ষাকারী সহায়তা অব্যাহত রাখার প্রতিশ্রুতি দেন।
অধ্যাপক ইউনূস জানান, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সার্ককে পুনরুজ্জীবিত করার উদ্যোগ নিচ্ছে, যা এক দশকেরও বেশি সময় ধরে শীর্ষ সম্মেলন আয়োজন করতে পারেনি।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ আসিয়ানে যোগদানে আগ্রহী। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অর্থনীতির সঙ্গে সংযুক্তি বাংলাদেশের উন্নয়ন ত্বরান্বিত করতে পারে। এছাড়া নেপাল, ভুটান এবং ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় সাত রাজ্যের সঙ্গে অর্থনৈতিক সম্পর্ক জোরদার করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি।
বৈঠকের শেষে সার্জিও গোরকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান প্রধান উপদেষ্টা।
এর আগে বিকেল ৩টায় জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৮০তম অধিবেশনে যোগ দিতে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে পৌঁছান ড. মুহাম্মদ ইউনূস। সফরসঙ্গী ছিলেন অন্তর্বর্তী সরকারের ৬ উপদেষ্টা এবং বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপির নেতারা।
প্রধান উপদেষ্টার সফরের অগ্রবর্তী দলের নেতৃত্ব দেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন। তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার তার কার্যক্রম ও পদক্ষেপ বিশ্ব দরবারে তুলে ধরবে। আগামী ২৬ সেপ্টেম্বর প্রধান উপদেষ্টা জাতিসংঘে ভাষণ দেবেন এবং সরকারের বিভিন্ন এজেন্ডা উপস্থাপন করবেন। ২৭ তারিখ তিনি অভিবাসীদের সমাবেশেও বক্তব্য রাখবেন।
সাইড লাইনে জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্থনিও গুতেরেজ, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফসহ কয়েকটি দেশের রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানের সঙ্গে বৈঠক করবেন তিনি। দেখা হবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গেও।
উল্লেখ্য, এ বছর জাতিসংঘের ৮০তম বার্ষিকী। এবারের সাধারণ পরিষদের প্রতিপাদ্য হলো: ‘বেটার টুগেদার: এইটি ইয়ারস অ্যান্ড মোর ফর পিস, ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড হিউম্যান রাইটস’।