• ২৫শে সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ , ১০ই আশ্বিন, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

হাসিনা-তাপসের ফোনালাপে উঠে এসেছে যেসব ভয়ংকর তথ্য

ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশিত সেপ্টেম্বর ২৫, ২০২৫, ১১:৩৩ পূর্বাহ্ণ
হাসিনা-তাপসের ফোনালাপে উঠে এসেছে যেসব ভয়ংকর তথ্য
সংবাদটি শেয়ার করুন....

জুলাই গণঅভ্যুত্থান চলাকালীন সময় তারকীয়ভাবে করা এক ফোনালাপে তখনকার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ফজলে নূর তাপসের কথোপকথন আন্তর্জাাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে উন্মুক্ত করা হয়েছে। দেশের টেলিভিশনে সেসব সংলাপ সম্প্রচারিত হয় এবং ট্রাইব্যুনালে পেশকৃত সাক্ষ্য থেকে জানা গেছে ফোনালাপে ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে আন্দোলন দমন ও তৎকালীন ঘটনাবলীর সম্পর্কিত বেশ কয়েকটি সংবেদনশীল তথ্য।

বিচারিক পর্যায়ে মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ৫৩তম সাক্ষী হিসেবে বিশেষ তদন্ত কর্মকর্তা ও প্রসিকিউটর তানভীর হাসান জোহার জবানবন্দি রেকর্ড হন। সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে প্রসিকিউশনের আনা কাগজপত্র ও রেকর্ড করা চারটি ফোনালাপ ট্রাইব্যুনালে বাজিয়ে শোনানো হয়; যার প্রথমটিই ছিল হাসিনা-তাপসের কথোপকথন।

ট্রান্সক্রিপ্টে দেখা যায়, তৎকালীন পরিস্থিতি নিয়ে দুই নেতা আবেদন-প্রতিক্রিয়া ডিছেন এবং নগরীর বিভিন্ন স্থানে বিক্ষিপ্ত হামলার খবর সম্পর্কে বিনিময় হয়। তাপস বিভিন্ন স্থানে ঘেমে থাকা এবং সংঘটিত আগুন-আগ্ৰাসনের খবর জানালে, শেখ হাসিনা দাবি করেন বিষয়টি নিয়ন্ত্রণে আনা হচ্ছে এবং একই সঙ্গে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করার নির্দেশ দেন। কথোপকথনে রাতের অভিযানের প্রসঙ্গ উঠে আসে; সেখানে আটক, পাকড়াও এবং স্ট্যাটেজিকভাবে “লিথাল ওয়েপন” ব্যবহারের নির্দেশের উল্লেখ পাওয়া যায়।

ট্রান্সক্রিপ্ট অনুযায়ী, তিনি বলেন—র‌্যাব, ডিজিএফআই, এনএসআই-সহ সংস্থাগুলোকে নির্দেশ দেওয়া আছে; যেখানে যেখানে গাদা বা গেদারিং দেখা যাবে সেখানে তালাশ ও গ্রেপ্তার বাড়াতে এবং “ওপর থেকে” পর্যবেক্ষণ ও আক্রমণ করার কথা বলা হয়েছে। কথোপকথনে সরকারি ভবন, বিটিআরসি, বিআরটি, বিটিভি সহ কিছু স্থানে আগুন লাগার কথা এবং ইন্টারনেট অবরুদ্ধ থাকার চিত্রও উঠে আসে। এছাড়া গ্রাম্য ঘটনা হিসেবে এক ছাত্রের মৃত্যুর ঘটনা উল্লেখ করে অনানুষ্ঠানিক ঘটনা-স্থাপনার অভিযোগও রয়েছে।

ট্রাইব্যুনালে প্রসিকিউশনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এই ফোনালাপ ও অন্যান্য সাক্ষীদের জবানবন্দি মানবতাবিরোধী কর্মকান্ডের সত্যতা নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। মামলায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়েছিল গত ১০ জুলাই; অভিযুক্তদের মধ্যে রয়েছেন শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন। মামলার এক পর্যায়ে সাবেক আইজিপি দোষ স্বীকার করে রাজসাক্ষীরূপে সাক্ষ্য দিয়েছেন।

ট্রাইব্যুনালে আজ প্রসিকিউশনের পক্ষে ছিলেন প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম, গাজী এমএইচ তামিম, ফারুক আহাম্মদ, আবদুস সাত্তার পালোয়ানসহ অন্যরা। আগামী রোববার (২৮ সেপ্টেম্বর) পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণ ধার্য আছে; তবে প্রসিকিউশন জানিয়েছে, সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হওয়ার পরে যুক্তিতর্ক পেশের ধাপ শুরু হতে পারে।