
তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা পুনর্বহালের দাবিতে তৃতীয় দিনের মতো চূড়ান্ত আপিল শুনানি চলছে। বৃহস্পতিবার প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে সাত সদস্যের আপিল বেঞ্চে এ শুনানি শুরু হয়।
আদালতে ইন্টারভেনার হিসেবে বক্তব্য রাখছেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এহসান এ সিদ্দিক। এর আগে গত ২৭ আগস্ট তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিলের রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদন শুনানি শেষে আপিলের অনুমতি দেওয়া হয়।
১৯৯৬ সালে সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা অন্তর্ভুক্ত করে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী জাতীয় সংসদে পাস করা হয়। এ সংশোধনীর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ১৯৯৮ সালে অ্যাডভোকেট এম সলিম উল্লাহসহ তিনজন আইনজীবী হাইকোর্টে রিট করেন। ২০০৪ সালের ৪ আগস্ট হাইকোর্ট বিভাগ এ রিট খারিজ করে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থাকে বৈধ ঘোষণা করে।
এই সংশোধনীর বৈধতা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এম সলিম উল্লাহসহ অন্যরা ১৯৯৮ সালে হাইকোর্টে রিট করেন। প্রাথমিক শুনানির পর রুল জারি করে আদালত। এরপর চূড়ান্ত শুনানি শেষে ২০০৪ সালের ৪ আগস্ট হাইকোর্টের বিশেষ বেঞ্চ রায় দেন।
এর বিরুদ্ধে সরাসরি আপিলের অনুমতি দেওয়া হয়। তার ধারাবাহিকতায় ২০০৫ সালে রিট আবেদনকারীরা আপিল করেন। এই আপিল মঞ্জুর করে আপিল বিভাগের সাত বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ ২০১১ সালের ১০ মে সংখ্যাগরিষ্ঠ মতামতের ভিত্তিতে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিল ঘোষণা করে রায় দেন।
ওই রায়ের পর তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বিলুপ্তসহ বেশ কিছু বিষয়ে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী আইন ২০১১ সালের ৩০ জুন জাতীয় সংসদে পাস হয় এবং ৩ জুলাই এ–সংক্রান্ত গেজেট প্রকাশ করা হয়।
পরবর্তীতে ৫ আগস্ট সরকার পরিবর্তনের পর তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা পুনর্বিবেচনার আবেদন করেন সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদারসহ পাঁচ বিশিষ্ট ব্যক্তি—তোফায়েল আহমেদ, এম হাফিজউদ্দিন খান, জোবাইরুল হক ভূঁইয়া ও জাহরা রহমান।
এছাড়া, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ১৬ অক্টোবর আপিল বিভাগের ওই রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন করেন।
অন্যদিকে, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার গত বছরের ২৩ অক্টোবর একই বিষয়ে পুনর্বিবেচনার আবেদন করেন।
পরে নওগাঁর রানীনগরের নারায়ণপাড়ার বাসিন্দা বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. মোফাজ্জল হোসেনও আপিল বিভাগের রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে গত বছর আবেদন জানান।