বরিশালে এক দিনে পুকুরে ডুবে প্রাণ হারিয়েছে ছয় শিশু। কারও মৃত্যু হয়েছে সকালে উঠান থেকে পুকুরে পড়ে, আবার কেউ দুপুরে খেলার ছলে অজান্তেই পানিতে ডুবে যায়। আর এভাবেই থেমে গেছে কয়েকটি ছোট্ট প্রাণের জীবন।
জানা যায়, মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলায় পুকুরে ডুবে মারা গেছে আলিয়া ও আয়শা নামের দুই বোন। মঙ্গলবার দুপুরে বাড়ির উঠানে খেলার সময় পাশের পুকুরে পড়ে যায় তারা। পরে বিকেলে তাদের লাশ উদ্ধার করা হয়। আলিয়ার বয়স ছিল ৪ বছর ৬ মাস, আর আয়শার বয়স ৩ বছর ৬ মাস। তারা চরহোগলা গ্রামের প্রবাসী পান্না সরদারের সন্তান।
উজিরপুর উপজেলার পূর্ব নারায়ণপুর গ্রামের বাসিন্দা ঝন্টু হাওলাদারের ছেলে মো. তাওহীদ (৬) ও শরিফ খানের ছেলে মো. শাফিন (৭) একইভাবে পুকুরে পড়ে মারা যায়। দুপুর ২টার দিকে শাফিনের লাশ পানিতে ভেসে ওঠে। পরে তাওহীদকে ডুবন্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন।
ভোলার দৌলতখানেও একই বাড়ির দুই শিশু ডুবে মারা গেছে। মঙ্গলবার উত্তর জয়নগর ইউনিয়নের মধ্য জয়নগর এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। নিহতরা হল মুনতাহা (৫), নুরনবীর মেয়ে এবং জিসান (৬), মৃত জালালউদ্দিনের ছেলে। তারা চাচাতো ভাইবোন। খেলতে গিয়ে প্রথমে মুনতাহা পানিতে পড়ে যায়, তাকে তুলতে গিয়ে জিসানও পুকুরে ডুবে যায়। পরে তাদের লাশ উদ্ধার করে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
আঘাত ও দুর্ঘটনা প্রতিরোধ, শিশু ও নারীর নিরাপত্তা এবং জনস্বাস্থ্য উন্নয়নে কাজ করা সংস্থা সিআইপিআরবি-এর বরিশাল আঞ্চলিক সমন্বয়কারী মোহাম্মদ মোতাহের হোসাইন বলেন, সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১টার মধ্যে শিশু ডুবে মৃত্যুর ঘটনা সবচেয়ে বেশি হয়। কারণ এ সময় বাবা-মা পারিবারিক কাজে ব্যস্ত থাকায় শিশুদের পর্যাপ্ত নজরদারি থাকে না।
তিনি আরও জানান, শিশুদের ডুবে যাওয়া ঠেকাতে পাঁচ বছরের মধ্যে সাঁতার শিক্ষা জরুরি। পাশাপাশি গ্রামে ডে কেয়ার সেন্টার চালু করা গেলে চার বছরের নিচের শিশুদের নিরাপদ রাখা সম্ভব। স্থানীয় নারীদের পরিচালনায় দিবাযত্ন কেন্দ্র ও সাঁতার শিক্ষা শিশুদের নিরাপদ রাখতে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে। পরিবার ও সমাজের সচেতনতাও এ ক্ষেত্রে অত্যন্ত প্রয়োজন।