আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এই নির্বাচনকে সামনে রেখে দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সম্ভাব্য প্রার্থীরা নিজ নিজ এলাকায় প্রচার-প্রচারণা ও গণসংযোগে ব্যস্ত সময় পার করছেন। নির্বাচনের দিন যত ঘনিয়ে আসছে ততই প্রার্থী ও ভোটারদের মাঝে উৎসাহ-উদ্দীপনা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় প্রচারণায় পিছিয়ে নেই দেশের বৃহৎ রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)। দলটির জন্য এবারের নির্বাচন বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা দিচ্ছে। এজন্য প্রার্থী যাচাই-বাছাইয়ে কাজ করছে বিএনপি।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ঘোষণা দিয়েছেন— দলের ত্যাগী, জেল-জুলুম ও নির্যাতনের শিকার, সৎ-আদর্শবান, সাধারণ মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য এবং ক্লিন ইমেজের ব্যক্তিদের মনোনয়ন প্রদান করা হবে। এ লক্ষ্যে প্রতিটি আসনে মাঠ পর্যায়ে প্রার্থীর জরিপ ও বায়োডাটা সংগ্রহ করা হচ্ছে।

কালিহাতি আসনে প্রার্থী নিয়ে আলোচনা

টাঙ্গাইল-৪ (কালিহাতি) আসনও এই প্রক্রিয়ার বাইরে নয়। জেলার রাজনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ এই আসনে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী অধ্যাপক ডাঃ শাহ আলম তালুকদার স্থানীয়দের কাছে ইতোমধ্যে ক্লিন ইমেজের ব্যক্তি হিসেবে পরিচিতি পেয়েছেন।

স্থানীয় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের মতে, দীর্ঘ ১৭ বছর ধরে কালিহাতি আসনটি আওয়ামী লীগের দখলে রয়েছে। বিএনপি নেতাকর্মীরা শান্তিতে বসবাস করতে পারেননি। এই পরিস্থিতিতে দুর্বৃত্তমুক্ত ও সৎ নেতৃত্ব হিসেবে অধ্যাপক ডাঃ শাহ আলম তালুকদারকে মনোনয়ন দিলে বিএনপি সহজেই আসনটি ফিরে পেতে পারে। সাংগঠনিক কোনো পদে না থেকেও তিনি দলকে সুসংগঠিত রেখেছেন।

সাধারণ মানুষের আস্থা

করোনাকালে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মানুষের দ্বারে দ্বারে চিকিৎসাসেবা দিয়েছেন তিনি। পাশাপাশি গরীব ও অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন। দীর্ঘ সময় ধরে দলের নেতাকর্মী এবং সাধারণ মানুষের সুখে-দুঃখে পাশে থাকার কারণে তিনি আস্থার প্রতীক হয়ে উঠেছেন। স্থানীয়রা তাকে “মানবতার ফেরিওয়ালা” হিসেবে উল্লেখ করছেন।

রাজনৈতিক পদচারণা ও অবদান

অধ্যাপক ডাঃ শাহ আলম তালুকদারের রাজনৈতিক পথচলা শুরু হয় তার চাচা মরহুম নুরুল আলম তালুকদারের হাত ধরে, যিনি কালিহাতি উপজেলা বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ছিলেন। ছাত্রজীবন থেকেই তিনি শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের আদর্শে বিশ্বাসী। স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে তিনি ও তার পরিবার নাজেহালের শিকার হন। দলের সমর্থকদের জেল, মামলা ও হামলার সময় তাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন।

৩৪ বছর ধরে প্রতি সপ্তাহে এলাকায় ফ্রি বা স্বল্পমূল্যে চিকিৎসা দিয়ে আসছেন তিনি। অনেকের চাকরির ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। এ কারণে এলাকায় ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেছেন।

ব্যক্তিগত তথ্য

অধ্যাপক ডাঃ মোঃ শাহ আলম তালুকদার ১৯৫৯ সালের ৫ আগস্ট টাঙ্গাইল জেলার কালিহাতি উপজেলার পারখী ইউনিয়নের আমজানী গ্রামের একটি সম্ভ্রান্ত মুসলিম রাজনৈতিক পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন।

নির্বাচনী বাস্তবতা

কালিহাতি উপজেলা ভৌগলিকভাবে ২০টিরও বেশি জেলার প্রবেশদ্বার। এখানে সাবেক রাষ্ট্রপতি, বিচারপতি, স্পিকার, রাজনীতিবিদ, ভাষাসৈনিক, বিশিষ্ট চিকিৎসকসহ প্রভাবশালী ব্যক্তিত্বদের বসবাস। তাই আসনটির গুরুত্ব অনেক। বর্তমানে আসনে প্রায় ৩ লাখ ৮০ হাজার ভোটার রয়েছেন।

অধ্যাপক ডাঃ শাহ আলম তালুকদার বিশ্বাস করেন, তাকে মনোনয়ন দিলে বিএনপি বিপুল ভোটে জয়লাভ করবে। তিনি কালিহাতিকে একটি আধুনিক উপজেলা হিসেবে গড়ে তোলার অঙ্গীকার করেছেন।