• ১১ই নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ , ২৬শে কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

নদী-খাল খননে লাগবে সরকার অনুমোদিত ড্রেজার

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
প্রকাশিত সেপ্টেম্বর ২০, ২০২৫, ১২:০৯ অপরাহ্ণ
নদী-খাল খননে লাগবে সরকার অনুমোদিত ড্রেজার
সংবাদটি শেয়ার করুন....

দেশের নদ-নদী, খাল, জলাশয় ও হাওর খননে সরকার অনুমোদিত ড্রেজার ব্যবহার করতে হবে বলে সম্প্রতি প্রণীত ‘ড্রেজিং ও ড্রেজড ম্যাটেরিয়াল ব্যবস্থাপনা নীতিমালা, ২০২৫’-এ উল্লেখ করা হয়েছে। অন্যথায় খননকাজ অবৈধ গণ্য হবে। দেশে প্রথমবারের মতো প্রণীত এ ড্রেজিং ব্যবস্থাপনা মানতে হবে সরকারি-বেসরকারি সব পক্ষকে।

‘ড্রেজিং ও ড্রেজড ম্যাটেরিয়াল ব্যবস্থাপনা নীতিমালা, ২০২৫’ হলো বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক অনুমোদিত একটি নীতি, যার উদ্দেশ্য পরিকল্পিতভাবে ড্রেজিং কার্যক্রম পরিচালনা করা, ড্রেজিংকৃত মাটির সুষ্ঠু ও সমন্বিত ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করা এবং এর সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করা।

নীতিমালা সরকারি, বেসরকারি বা যৌথভাবে ড্রেজিং কার্যক্রম পরিচালনাকারীদের জন্য প্রযোজ্য। এতে সরকার অনুমোদিত ড্রেজার ব্যবহারের বাধ্যবাধকতা উল্লেখ রয়েছে। নদ-নদীর প্রবাহ রক্ষা, কৃষিজমি সুরক্ষা ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের অংশ হিসেবে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় গত জুলাইয়ে এ নীতিমালা প্রণয়ন করেছে।

গত জুলাইয়ে প্রকাশিত এক প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, পরিকল্পিতভাবে ড্রেজিং কার্যক্রম ও ড্রেজড ম্যাটেরিয়াল ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে নদী খনন, নৌরুট সৃষ্টি/পুনরুদ্ধার, কৃষি ও সেচ উন্নয়ন, জলাভূমির জীববৈচিত্র্য রক্ষা, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা ও পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় সর্বজনীনভাবে এই নীতি প্রণয়ন করা হয়েছে এবং উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে অনুমোদিত হয়েছে।

প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও সংস্থাগুলোকে এ নীতি মানতে হবে। নীতি জারি হওয়ার দিন থেকেই কার্যকর ধরা হবে।

নীতিমালায় বলা হয়েছে, যেকোনো ড্রেজিং কার্যক্রম গ্রহণের আগে নদী বা প্রবহমান জলধারার পরিবেশগত প্রভাব নিরূপণপূর্বক ‘ড্রেজিং মাস্টারপ্ল্যান’ প্রণয়ন করতে হবে। এটি আন্তঃমন্ত্রণালয় পর্যালোচনার পর চূড়ান্তভাবে অনুমোদন করা হবে। সমীক্ষায় ড্রেজিং ব্যয়, ড্রেজড মাটির ব্যবহার, দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব ও তা থেকে উত্তরণের সুপারিশ এবং কর্মপরিকল্পনা অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।

ক্যাপিটাল ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে প্রবাহহীন বা স্বল্প প্রবাহের নদী ও জলাশয়ে পূর্বাবস্থা ফিরিয়ে আনাকে অগ্রাধিকার দিতে হবে।

জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন, নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের সমন্বয়ে দখলমুক্ত ও ভরাট হওয়া নদ-নদী পুনরুদ্ধারে ড্রেজিং কার্যক্রমে গুরুত্বারোপ করতে হবে। যেখানে সরকার ঘোষিত বালুমহাল রয়েছে, সেখানে ‘বালু ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন ২০১০ (সংশোধন ২০২৩)’ প্রযোজ্য হবে।

সরকারের অনুমোদন ছাড়া কোনো মেশিনচালিত যন্ত্র দিয়ে নদী, খাল, বিল বা হাওরে ড্রেজিং করা যাবে না। পরিবেশ সংরক্ষণ আইন, ১৯৯৫ (সংশোধিত ২০১০) অনুযায়ী প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকায় ড্রেজিং করা নিষিদ্ধ। একইভাবে, ড্রেজিংয়ের ফলে নদীর তীর ভাঙনের আশঙ্কা থাকলে ড্রেজিং করা যাবে না।