
পিত্তথলিতে পাথর বা গলব্লাডার স্টোন বর্তমানে একটি পরিচিত স্বাস্থ্যসমস্যা। যকৃত থেকে নিঃসৃত পিত্তরস চর্বি হজমে সাহায্য করে এবং এই রস জমা থাকে ছোট একটি থলিতে, যাকে বলা হয় পিত্তথলি। কিন্তু পিত্তরসের রাসায়নিক ভারসাম্য নষ্ট হলে জমাট বাঁধতে শুরু করে এবং ধীরে ধীরে পাথর তৈরি হয়।
পিত্তরসে পানি, কোলেস্টেরল, বিলিরুবিনসহ বিভিন্ন উপাদান থাকে। এদের মধ্যে কোনো একটি উপাদান অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে গেলে বা পিত্তথলি সঠিকভাবে খালি না হলে রস ঘন হয়ে জমাট বাঁধে। গবেষণায় প্রমাণিত, নারীদের মধ্যে এ রোগ পুরুষদের তুলনায় বেশি। বিশেষ করে গর্ভবতী নারী, স্থূলকায় ব্যক্তি, চল্লিশোর্ধ্ব নারী-পুরুষ, কম শারীরিক পরিশ্রমকারী কিংবা দীর্ঘ সময় উপবাসে থাকা মানুষের ঝুঁকি তুলনামূলক বেশি।
পিত্তথলিতে পাথরকে অনেক সময় ‘নীরব রোগ’ বলা হয়, কারণ প্রাথমিক পর্যায়ে স্পষ্ট উপসর্গ দেখা যায় না। অনেকেই জানতেই পারেন না যে তাঁর পিত্তথলিতে পাথর রয়েছে। তবে চর্বিযুক্ত খাবার খাওয়ার পর হঠাৎ তীব্র ব্যথা, ডান দিকের উপরের পেট বা মাঝপেটে অস্বস্তি, বমি, হজমের সমস্যা, জ্বর কিংবা চোখ-চামড়ায় হলদে ভাব দেখা দিতে পারে। অনেক সময় এ ব্যথাকে গ্যাস্ট্রিক ভেবে অবহেলা করা হয়, যা চিকিৎসা বিলম্বিত করে।
পিত্তথলির পাথর প্রতিরোধে স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন অপরিহার্য। প্রতিদিন হাঁটা বা হালকা ব্যায়াম, কম চর্বিযুক্ত খাবার খাওয়া, ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা, পর্যাপ্ত পানি পান এবং সুষম খাদ্য গ্রহণ ঝুঁকি অনেকাংশে কমিয়ে দেয়।
পিত্তথলিতে পাথর হলে সবচেয়ে প্রচলিত চিকিৎসা হলো অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে অপসারণ, যা ‘ল্যাপারোস্কোপিক কোলেসিস্টেকটোমি’ নামে পরিচিত। এটি আধুনিক ও নিরাপদ একটি শল্যচিকিৎসা। উপসর্গবিহীন পাথর অনেক সময় নিয়মিত পর্যবেক্ষণে রাখা যায়। তবে তীব্র ব্যথা বা জটিলতা দেখা দিলে অবশ্যই সার্জনের পরামর্শ নিতে হবে।
হোমিওপ্যাথি বা ভেষজ চিকিৎসার ওপর নির্ভর করলে অবস্থা জটিল হতে পারে। তাই সমস্যার প্রাথমিক পর্যায়ে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ।
সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতি: এম.জি.আর.নাছির মজুমদার, সম্পাদক : এস এম রফিকুল ইসলাম, যোগাযোগ ঠিকানা: সেঞ্চুরি সেন্টার: খ-২২৫, প্রগতি সরণি, মেরুল,বাড্ডা, ঢাকা-১২১২।, ফোন নং : +৮৮-০২-৫৫০৫৫০৪৭ | মোবাইল নং: ০১৭১৬৩৭১২৮৬
www: dailybhor.com
© ২০২৫ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত | দৈনিক ভোর