• ১০ই নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ , ২৫শে কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ইসরায়েলি বর্বর হামলা, ক্ষুধা-অনাহারে গাজায় নিহত ৬২ হাজারের বেশি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত আগস্ট ১৯, ২০২৫, ১১:৫০ পূর্বাহ্ণ
ইসরায়েলি বর্বর হামলা, ক্ষুধা-অনাহারে গাজায় নিহত ৬২ হাজারের বেশি
সংবাদটি শেয়ার করুন....

টানা প্রায় দুই বছরের গণহত্যামূলক অভিযানে ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলি হামলা ও অবরোধের জেরে ক্ষুধা ও অনাহারে ৬২ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।

অবরুদ্ধ এ অঞ্চলে কোনো নিরাপদ আশ্রয় নেই। প্রতিদিন মানুষ নিহত হচ্ছেন শুধু পরিবারের জন্য খাবার খুঁজতে গিয়ে। মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে আল জাজিরা।

সংবাদমাধ্যমটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজা উপত্যকার সবচেয়ে বড় নগরী — এখন কার্যত ধ্বংসস্তূপে পরিণত — গাজা সিটিতে ইসরায়েলি হামলা আরও জোরদার হয়েছে। শহরটি দখল করে হাজার হাজার মানুষকে দক্ষিণে তথাকথিত কনসেন্ট্রেশন জোনে সরিয়ে নিতে চাইছে ইসরায়েল। সোমবার ভোর থেকে হামলায় অন্তত ৩০ জন নিহত হয়েছেন, এর মধ্যে ১৪ জন ছিলেন সাহায্যপ্রত্যাশী।

আল জাজিরাকে এক চিকিৎসা সূত্র জানিয়েছে, গাজা সিটির আল-সাবরা এলাকায় হামলায় অন্তত তিনজন নিহত ও কয়েকজন আহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে সাংবাদিক ইসলাম আল-কৌমিও রয়েছেন।

দেইর আল-বালাহ থেকে আল জাজিরার সাংবাদিক তারেক আবু আজযুম জানান, “গাজা সিটির পূর্বাঞ্চলে অব্যাহতভাবে হামলা চলছে। হামলার মাত্রা দেখে বোঝা যাচ্ছে, ইসরায়েল গাজার ভৌগোলিক ও জনসংখ্যাগত কাঠামো বদলে দিচ্ছে।”

তিনি আরও বলেন, “ভারী কামান, যুদ্ধবিমান ও ড্রোন দিয়ে বাকি আবাসিক বাড়িগুলো ধ্বংস করছে ইসরায়েল। ধ্বংসযজ্ঞের মাত্রা ভয়াবহ। এতে স্থল অভিযান চালানো সহজ হবে এবং পুরো এলাকা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হবে। দিন-রাত হামলা চলছে।”

যারা ইতোমধ্যেই একাধিকবার বাস্তুচ্যুত হয়েছেন, তারা আবারও গাজা সিটি ছেড়ে যাচ্ছেন। তবে অনেকে রয়ে গেছেন। গত রোববারও শহরটি হামলার মূল লক্ষ্য ছিল— সেদিন প্রায় ৬০ জন নিহত হন। একই সময়ে ইসরায়েল অল্প কয়েকটি স্বাস্থ্যকেন্দ্রকেও টার্গেট করছে।

ধ্বংসস্তূপ, অস্থায়ী আশ্রয় বা তাঁবুতে থাকা ফিলিস্তিনিদের অনেকেরই আর কোথাও যাওয়ার উপায় নেই। বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনি বিলাল আবু সিত্তা বলেন, “আমি দক্ষিণে কীভাবে যাব? যেতে ৯০০ ডলার লাগে, আমার কাছে এক ডলারও নেই।”

অন্যরা ইসরায়েলের দেওয়া আশ্রয় ও সাহায্যের প্রতিশ্রুতিতে আস্থা রাখছেন না। নোয়ামান হামাদ বলেন, “আমরা ইসরায়েলের কাছ থেকে কিছু চাই না। শুধু আমাদের সেই ঘরে ফিরতে দিক, যেখান থেকে আমরা পালিয়েছিলাম।”

এদিকে কাতার ও মিসরের মধ্যস্থতায় প্রস্তাবিত যুদ্ধবিরতির খসড়া মেনে নিয়েছে হামাস। সূত্র জানায়, এই চুক্তি কার্যকর হলে ৬০ দিনের জন্য যুদ্ধবিরতি হবে এবং গাজায় আটক ইসরায়েলি বন্দিদের অর্ধেক ও ইসরায়েলের কারাগারে আটক একাংশ ফিলিস্তিনিকেও মুক্তি দেওয়া হবে।

তবে ফিলিস্তিনিরা আগেও বহুবার এমন আশার ভরসায় প্রতারিত হয়েছেন। চলতি বছরের জানুয়ারির স্বল্পস্থায়ী যুদ্ধবিরতি মার্চে ইসরায়েল ভেঙে দেওয়ার পর থেকেই যুদ্ধ মানবিক বিপর্যয়ের সবচেয়ে ভয়াবহ পর্যায়ে পৌঁছেছে।