বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অবসরপ্রাপ্ত প্রায় ৮৮ হাজার শিক্ষক-কর্মচারীর অবসর ও কল্যাণ সুবিধা পাওয়ার সংকট এখনো কাটেনি। তারা অপেক্ষায় আছেন চার বছর ধরে। বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শিক্ষক ও কর্মচারী অবসর সুবিধা বোর্ড এবং বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শিক্ষক-কর্মচারী কল্যাণ ট্রাস্টের কর্মকর্তাদের মতে, দীর্ঘদিনের সৃষ্ট এই সংকট কাটাতে জরুরি ভিত্তিতে প্রয়োজন প্রায় ৯ হাজার কোটি টাকার তরল অর্থ।
সম্প্রতি সরকার ২ হাজার ২০০ কোটি টাকার তহবিল দিয়েছে। তবে এই টাকার লভ্যাংশ থেকে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে শিক্ষক-কর্মচারীদের অবসরকালীন ভাতা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী অবসরের ছয় মাসের মধ্যে পেনশন সুবিধা পরিশোধ করতে হবে। কিন্তু শিক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, পর্যাপ্ত অর্থ বরাদ্দ না থাকায় তা বাস্তবায়ন সম্ভব হচ্ছে না এবং বিষয়টি আইনিভাবে মোকাবিলার প্রস্তুতি নিচ্ছে তারা।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, বর্তমানে অবসর সুবিধার ২০২১ সালের আবেদনগুলো নিষ্পত্তি করা হচ্ছে, আর কল্যাণ ট্রাস্ট দেখছে ২০২২ সালের আবেদন। এতে আবেদন নিষ্পত্তিতে দীর্ঘসূত্রতা তৈরি হয়েছে, ফলে আবেদনকারীদের দীর্ঘদিন অপেক্ষায় থাকতে হচ্ছে। বর্তমানে একটি আবেদন নিষ্পত্তি হতে গড়ে আড়াই বছর সময় লেগে যাচ্ছে।
শিক্ষক-কর্মচারীরা অভিযোগ করছেন, অবসরভাতা না পাওয়ায় তাদের চিকিৎসা, দৈনন্দিন ব্যয় ও পারিবারিক দায়িত্ব পালনে গুরুতর সংকট দেখা দিয়েছে। অনেকেই ধারদেনায় দিন পার করছেন, কেউ কেউ মৃত্যুবরণ করেছেন পাওনা টাকা ছাড়াই।
শিক্ষাবিদরা সতর্ক করেছেন, আদালতের নির্দেশনা বাস্তবায়ন না হলে শিক্ষকদের পেশাদারিত্ব ও সমাজে তাদের মর্যাদার ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। একই সঙ্গে নতুন প্রজন্ম শিক্ষা পেশায় আগ্রহ হারাতে পারে।
অবসর সুবিধা বোর্ড ও কল্যাণ ট্রাস্ট জানিয়েছে, জমে থাকা আবেদন নিষ্পত্তি করতে প্রয়োজন বিশেষ এককালীন থোক বরাদ্দ। শুধু সাম্প্রতিক বরাদ্দ থেকে এ সমস্যা সমাধান হবে না।