• ২৫শে সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ , ১০ই আশ্বিন, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

পৃথিবীর ৮ম সর্বোচ্চ চূড়া ‘মানাসলু’ জয় করলেন বাংলাদেশি পর্বতারোহী তমাল

ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশিত সেপ্টেম্বর ২৫, ২০২৫, ১১:১০ পূর্বাহ্ণ
পৃথিবীর ৮ম সর্বোচ্চ চূড়া ‘মানাসলু’ জয় করলেন বাংলাদেশি পর্বতারোহী তমাল
সংবাদটি শেয়ার করুন....

হিমালয়ে অবস্থিত পৃথিবীর অষ্টম উচ্চতম পর্বতশৃঙ্গ মানাসলু (৮,১৬৩ মিটার) জয় করেছেন বাংলাদেশি পর্বতারোহী তৌফিক আহমেদ তমাল। বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) ভোর ৪টায় তিনি মানাসলুর শীর্ষে বাংলাদেশের লাল-সবুজ পতাকা উত্তোলন করেন।

এর আগে, গত ১ সেপ্টেম্বর পৃথিবীর অষ্টম উচ্চতম এই পর্বত জয়ের লক্ষ্যে রওনা দেন তিনি। এ উপলক্ষ্যে রাজধানীর বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের সংস্কৃতি বিকাশ কেন্দ্রে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তাকে জাতীয় পতাকা তুলে দেন বাংলাদেশের প্রথম নারী এভারেস্ট জয়ী নিশাত মজুমদার। তরুণ প্রজন্মকে পর্বতারোহণের চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনার কথা জানানোর উদ্দেশ্যেই এই আয়োজন করা হয়। পরে ৫ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হয় তার মূল অভিযান।

কঠিন আবহাওয়া, তীব্র শীত আর বিপদসংকুল পথ অতিক্রম করে তিনি এই কৃতিত্ব অর্জন করেন। অভিযান পরিচালনা করে নেপালের খ্যাতনামা পর্বতারোহণ সংস্থা ‘সেভেন সামিটস’। বর্তমানে তিনি নিরাপদে ক্যাম্প-৪-এর পথে নেমে আসছেন এবং তার শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল রয়েছে বলে অভিযানের বাংলাদেশ সমন্বয়ক মহিউদ্দিন আল মুহিত জানিয়েছেন।

মুহিত বলেন, তমালের এই সাফল্য কেবল তার একার নয়, এটি পুরো বাংলাদেশের গৌরব। তার একাগ্রতা, সাহস ও দীর্ঘ প্রস্তুতি আজ সফল হয়েছে। আমরা গর্বিত এবং তার নিরাপদে দেশে ফেরার অপেক্ষায় আছি।

জানা যায়, ১৪ বছরের বেশি সময় ধরে পাহাড়ে ট্রেকিং করছেন তমাল। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে তিনি নিয়মিত অংশ নিচ্ছেন হিমালয়ের বিভিন্ন অভিযানে। ভারতের নেহরু ইনস্টিটিউট অব মাউন্টেনিয়ারিং থেকে নিয়েছেন মৌলিক ও উচ্চতর পর্বতারোহণ প্রশিক্ষণ। ২০২৪ সালে সফলভাবে আরোহণ করেছেন বিশ্বের অন্যতম দুর্গম শৃঙ্গ মাউন্ট আমা দাবলাম।

মানাসলু তার প্রথম ‘আট-হাজারী’ শৃঙ্গ হলেও এর বিশেষত্ব হলো—এই অভিযানে তিনি কোনো প্রাতিষ্ঠানিক বা করপোরেট অর্থায়ন নেননি। সম্পূর্ণ নিজস্ব অর্থায়নে এই শৃঙ্গ জয় করে তিনি বাংলাদেশের পর্বতারোহণ ইতিহাসে নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন।

উল্লেখ্য, মানাসলু পশ্চিম-মধ্য নেপালের মানসিরি হিমালে অবস্থিত। সংস্কৃত শব্দ ‘মনসা’ থেকে নামটির উৎপত্তি, যার অর্থ ‘বুদ্ধি’ বা ‘আত্মা’। তাই মানাসলু মানে দাঁড়ায় ‘আত্মার পর্বত’। ১৯৫৬ সালের ৯ মে এতে প্রথম আরোহণ করেন তোশিও ইমানিশি এবং গ্যালজেন নরবু। তারা একটি জাপানি পর্বতারোহী দলের সদস্য ছিলেন। এরপর ১৫ বছর আর কোনো পর্বতারোহী সেখানে পৌঁছাতে পারেননি। ১৯৭১ সালে আবারও জাপানি পর্বতারোহীদের একটি দল মানাসলু জয় করে। ১৯৯৭ সালে মার্কিন পর্বতারোহীরা মানাসলুর চূড়ায় উঠতে সক্ষম হন। উচ্চতায় ৮ম হলেও, বিশ্বের প্রাণঘাতী পর্বতগুলোর মধ্যে এর অবস্থান চতুর্থ।