
এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ, জার্মানির চ্যান্সেলর ফ্রিডরিখ মের্ৎস, ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি, ফিনল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার স্টাব, ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লেন এবং ন্যাটোর মহাসচিব মার্ক রুটে।
সোমবার হোয়াইট হাউসে হওয়া এ বৈঠক ছিল এক বিরল কূটনৈতিক প্রচেষ্টা, যা ইউরোপের ভবিষ্যৎ নিরাপত্তার জন্য গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। ইউরোপীয় নেতাদের শঙ্কা ছিল—দ্রুত শান্তি প্রচেষ্টায় রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন সুবিধাজনক অবস্থানে চলে যাচ্ছেন। বৈঠকের শুরুতে ট্রাম্প বলেন, ‘পুতিন শান্তি চুক্তির জন্য প্রস্তুত।’ তবে আলোচনার পরেও রাশিয়া–ইউক্রেন দ্বন্দ্ব নিরসনে কোনো অগ্রগতি হয়নি।
রাশিয়াকে ইউক্রেনের কোনো অংশ ছাড় দেওয়ার বিষয়টি স্পষ্ট নয়। তবে জার্মান চ্যান্সেলর মের্ৎস মন্তব্য করেন, ‘রাশিয়াকে দনবাস ছেড়ে দেওয়া মানে যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা ছেড়ে দেওয়ার মতো।’
যদিও ইউক্রেনের নিরাপত্তা নিশ্চয়তায় ট্রাম্প ইতিবাচক ইঙ্গিত দিয়েছেন, যা জেলেনস্কি ও ইউরোপীয় নেতাদের আশাবাদী করেছে। তাদের মতে, এটি ট্রাম্পের প্রস্তাবিত শান্তিচুক্তির পথে রাশিয়ার জন্য নতুন বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে।
বৈঠকে ট্রাম্প যুদ্ধবিরতির শর্ত প্রত্যাখ্যান করেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। ফরাসি প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁ ও জার্মান চ্যান্সেলর মের্ৎসসহ কয়েকজন নেতা যুদ্ধবিরতি ও নিরাপত্তা নিশ্চয়তাকে ট্রাম্পের লক্ষ্য হিসেবে তুলে ধরার চেষ্টা করলেও ট্রাম্প স্পষ্ট করে জানাননি যুক্তরাষ্ট্র কীভাবে ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা জোরদারে ভূমিকা রাখবে। বরং তিনি পুতিনকে এমন নেতা হিসেবে উল্লেখ করেন, ‘যিনি যুদ্ধ শেষ করতে চান।’
আলোচনার একপর্যায়ে ট্রাম্প প্রায় ৪০ মিনিট ধরে পুতিনের সঙ্গে ফোনালাপ করেন এবং জানান—পুতিন জেলেনস্কির সঙ্গে বৈঠকে সম্মত হয়েছেন। জার্মান চ্যান্সেলরের মতে, দুই সপ্তাহের মধ্যে এ বৈঠক হতে পারে।
এবার ট্রাম্প জেলেনস্কিকে সৌজন্যমূলকভাবে স্বাগত জানান, যা গত ফেব্রুয়ারির বৈঠকের বিপরীত। বৈঠক শেষে জেলেনস্কি বলেন, ‘ইউরোপ ও ন্যাটোর নেতারা এত দ্রুত ওয়াশিংটনে আসায় আমি কৃতজ্ঞ। এতে প্রমাণিত হয়েছে—ইউক্রেন একা নয়।’
এ বৈঠকের আলোচনায় জানা যায়, নিরাপত্তা নিশ্চয়তার অংশ হিসেবে ইউক্রেন যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে ১০০ বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র কেনার প্রস্তাব দিয়েছে, যা ইউরোপের অর্থায়নে সম্পন্ন হবে।
ট্রাম্প জানান, শান্তি চুক্তির পর যুক্তরাষ্ট্রও ইউক্রেনে শান্তি রক্ষায় যুক্ত থাকবে। তবে মার্কিন সেনাদের ভূমিকা কী হবে, সে বিষয়ে কিছু বলেননি। পরে তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে লেখেন—যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সমন্বয় করে ইউরোপীয় দেশগুলো নিরাপত্তা নিশ্চয়তা দেবে।
জেলেনস্কির এক উপদেষ্টা মনে করেন, এ শর্ত রাশিয়ার পক্ষে মেনে নেওয়া কঠিন। তিনি বলেন, ‘পুতিনই না বলবেন। রাশিয়া কখনোই চাইবে না ইউরোপীয় সেনারা ইউক্রেনে অবস্থান করুক। এই যুদ্ধ হয়েছে মূলত তা ঠেকাতেই।’
সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতি: এম.জি.আর.নাছির মজুমদার, সম্পাদক : এস এম রফিকুল ইসলাম, যোগাযোগ ঠিকানা: সেঞ্চুরি সেন্টার: খ-২২৫, প্রগতি সরণি, মেরুল,বাড্ডা, ঢাকা-১২১২।, ফোন নং : +৮৮-০২-৫৫০৫৫০৪৭ | মোবাইল নং: ০১৭১৬৩৭১২৮৬
www: dailybhor.com
© ২০২৫ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত | দৈনিক ভোর