আগামী ১৫ আগস্ট মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন আলাস্কায় মুখোমুখি হবেন। দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর এই বৈঠক কেবল দুই দেশের সম্পর্ক নয়, বিশ্ব রাজনীতির গতিপথ পাল্টে দিতে পারে বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন। বিশেষ করে ইউক্রেন যুদ্ধের ভবিষ্যত নির্ধারণে এই বৈঠকের গুরুত্ব অনেক বেশি।
দুই দেশের প্রশাসন আনুষ্ঠানিকভাবে বৈঠকের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। বিশ্ব রাজনীতিতে ঝুলে থাকা বহু প্রশ্ন এখানে আলোচনায় আসতে পারে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ‘বিগ মিটিং’ আগামী দিনের কূটনৈতিক পরিস্থিতি অনেকটাই নির্ধারণ করবে।
ট্রাম্পের জন্য এটি রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক মাইলফলক। নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী তিনি যুদ্ধ বন্ধের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। শুরুতে রাশিয়ার প্রতি কিছুটা নমনীয় হলেও, যুদ্ধবিরতিতে অগ্রগতি না হওয়ায় কঠোর শুল্ক ও নিষেধাজ্ঞার মাধ্যমে চাপ বাড়িয়েছেন। এই প্রেক্ষাপটে আলাস্কার বৈঠক ট্রাম্পের কৌশলে নতুন মাত্রা যোগ করেছে।
অন্যদিকে, পুতিনের লক্ষ্য পূর্ব ইউক্রেনের নিয়ন্ত্রণ নিশ্চিত করা ও ন্যাটোর বিস্তার রোধ। তিনি বারবার সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনকে ‘শতাব্দীর বৃহত্তম ভূরাজনৈতিক বিপর্যয়’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন এবং রাশিয়ার পুরনো প্রভাব ফেরাতে আগ্রহী। আলোচনায় ইউক্রেনের অধিকৃত অংশকে রাশিয়ার অংশ হিসেবে দাবি এবং ন্যাটো প্রসার রোধে জোর দেবেন।
তবে বৈঠকে ইউক্রেন ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের অনুপস্থিতি বড় চ্যালেঞ্জ। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি ভূখণ্ড ছাড়তে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন, যা কূটনৈতিক সমঝোতাকে কঠিন করে তুলেছে।
আলাস্কা, যা একসময় রাশিয়ার অংশ ছিল এবং ১৮৬৭ সালে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে বিক্রি হয়, ভেন্যু হিসেবে প্রতীকী ও নিরাপত্তাজনিত কারণে বেছে নেওয়া হয়েছে। এটি রাজধানীর বাইরের নিরপেক্ষ মঞ্চ হিসেবে কাজ করবে, যেখানে কোনো পক্ষই আধিপত্য বিস্তার করতে পারবে না।
এই বৈঠক কেবল দুই দেশের সম্পর্ক নয়, বরং বিশ্ব রাজনীতিতে নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে পারে। ইউক্রেন যুদ্ধ, আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তায় এর প্রভাব দীর্ঘমেয়াদি হতে পারে।